প্রচ্ছদ জাতীয় রায়ে সরকার সন্তুষ্ট : আইনমন্ত্রী

রায়ে সরকার সন্তুষ্ট : আইনমন্ত্রী

গুলশানে হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার বিচার কার্যক্রম এবং রায়ে সরকার সন্তুষ্ট বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। বুধবার (২৭ নভেম্বর) সচিবালয়ে রায় ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার সাত আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। বুধবার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে হোলি আর্টিসান বেকারিতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। তারা অস্ত্রের মুখে দেশি-বিদেশি অতিথিদের জিম্মি করে। ওই রাতে অভিযান চালাতে গিয়ে পুলিশের দুই কর্মকর্তা নিহত হন। পরদিন সকালে সেনা কমান্ডোদের অভিযানে পাঁচ জঙ্গিসহ ছয়জন নিহত হন।

পরে পুলিশ ১৮ বিদেশিসহ ২০ জনের লাশ উদ্ধার করে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান একজন রেস্তোরাঁকর্মী।

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘হলি আর্টিসান মামলায় ২১ জন আসামি ছিল। এর মধ্যে পাঁচজন সেই দিনই অভিযানে নিহত হন। তারপর আরও আটজনকে ধরতে যখন অভিযান চালানো হয় তখন এনকাউন্টারে তারা নিহত হন। এই মামলায় আটজন আসামি ছিলেন। সেই আসামিদের মধ্যে সাতজনকে সন্ত্রাস দমন আইনে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে, একজনকে খালাস দেয়া হয়েছে। আমরা সরকারের পক্ষ থেকে এটা বলতে চাই, আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আরও বলতে চাই, এই রকম চাঞ্চল্যকর এবং যেসব মামলা দেশের শিকড়ে গিয়ে ধাক্কা দেয়, সেইসব মামলাগুলো দ্রুত শেষ করতে পারছি। সেটাও মনে হয় সন্তুষ্টির কারণ। আপনারা জানেন, যখনই দুর্ঘটনা ঘটেছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত স্পষ্ট ভাষায় বলেছিলেন, এইসব অপরাধীদের দ্রুত বিচার করে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আজকে সেই কথারই সত্যতা প্রমাণ হয়েছে। আপনারা এ-ও জানেন, গত ডিসেম্বর থেকে এই মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। ২১১ জন সাক্ষীর অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। সেই ২১১ জনের মধ্যে প্রয়োজনীয় ১১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের মাধ্যমে বিচারিক আদালত এই রায়ে উপনীত হয়েছেন। আমি প্রথমেই বলেছি, আমরা এই বিচার কার্যক্রমে এবং এই রায়ে সন্তুষ্ট।’

এই রায়ের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার হবে কি না-এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমার তো মনে হয়, আমরা সারা বিশ্বকে প্রমাণ করতে পেরেছি যে, বাংলাদেশে এই রকম হত্যাকাণ্ড হলে তার বিচার অত্যন্ত দ্রুত হয় এবং সঠিক বিচার ডিউ প্রসেস ফলো করে, আইনি সকল ফর্মালিটি ফলো করে সম্পন্ন করা হয়।’

আসামি মিজানুর রহমান মিজান খালাস পেয়েছেন, তার বিষয়ে রিভিউ করা হবে কি না-জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি তো এখনও জাজমেন্ট পড়িনি। কিন্তু কথা হচ্ছে যে খালাস পেয়েছে সে কেন খালাস পেল? আগে আমি জাজমেন্ট দেখে নিই তার বিরুদ্ধে কী সাক্ষ্য-প্রমাণ আছে। তারপর এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে।’

রায় দ্রুত বাস্তবায়ন হবে কি না-এ বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘যেইমাত্র মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়, এটা ডেথ রেফারেন্স হিসেবে সাত দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে চলে যাবে। সেখানে গেলে পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) তৈরি হবে, এটার বিচার যাতে দ্রুত শেষ হয়। এই মামলায় দ্রুত পেপারবুক তৈরি করে আমার বিশ্বাস, হাইকোর্টে শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত করতে পারব।’