প্রচ্ছদ শিক্ষাঙ্গন রাবিতে বান্ধবীকে উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় ছুরিকাঘাত: ছাত্রলীগকর্মী আটক

রাবিতে বান্ধবীকে উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় ছুরিকাঘাত: ছাত্রলীগকর্মী আটক

রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বান্ধবীকে উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় সাইফুল ইসলাম হৃদয় নামের এক শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত করেছে ছাত্রলীগের এক কর্মী। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগকর্মী হামজাকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার রাত পৌনে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বিজ্ঞান ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

ছুরিকাহত সাইফুল ইসলাম হৃদয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগ থেকে মাস্টার্স শেষ করেছেন। তার বাড়ি খুলনায়। বর্তমানে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অন্যদিকে আটক ছাত্রলীগকর্মী হামজা গণিত বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। হামজা রাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী বলে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী নিশ্চিত করেছে।

নগরীর মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি, তদন্ত) মাহবুব আলম বলেন, ‘বুধবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে ছুরিকাহত সাইফুল ইসলাম তৃতীয় বিজ্ঞান ভবনের সামনে বান্ধবী নিয়ে বসেছিলেন। এসময় ছাত্রলীগকর্মী হামজা ও তার দুই সহযোগী সাইফুলের বান্ধবীকে উত্যক্ত করে। সাইফুল এর প্রতিবাদ করলে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয় এবং তারা চলে যায়। এর আধা ঘণ্টা পর সাইফুল তার বান্ধবীকে রোকেয়া হলে পৌঁছে দিয়ে ফেরার পথে হামজা ও তার সহযোগীরা পথরোধ করে।’

‘কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে হামজা ও তার সহযোগীরা সাইফুলের পেটে ছুরিকাঘাত করে। এসময় আশেপাশে থাকা কয়েকজন শিক্ষার্থী এগিয়ে গেলে তারা পালিয়ে যেতে চেষ্টা করলেও শিক্ষার্থীরা হামজাকে ধরে ফেলে। এরপর তাকে মারধরও করা হয়। খবর পেয়ে অভিযুক্ত হামজাকে আটক এবং সাইফুল ইসলামকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে নেয় পুলিশ’ বলে জানান ওসি (তদন্ত) মাহবুব আলম।

তিনি আরো বলেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে থানায় এখনো কোন অভিযোগ দায়ের করা হয় নি। আটককৃত হামজার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

ঘটনাস্থলে হামজার সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, ‘আমি কাউকে ছুরিকাঘাত করিনি। আমার সঙ্গে আরও দুইজন ছিলো। ওরা ছুরি মেরেছে।’ কারা ছুরি মেরেছে জানতে চাইলে সহ-সভাপতি সাদ্দাম ধমক দিয়ে হামজাকে চুপ থাকতে বলেন এবং পরিচয় জানাতে বাধা দেন।

এদিকে হামজাকে নিজের কর্মী মানতে নারাজ ছাত্রলীগের রাবি শাখার সহ-সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। তিনি বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি হামজা পড়ে আছে। পরে ছুরিকাঘাতের ঘটনা শুনে ওখান থেকে চলে আসি। আর ছেলেটার নাম হামজা আমি শুধু এটুকুই জানি। সহ-সভাপতি হিসেবে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা আমার সঙ্গে ঘুরতেই পারে। তাই বলে তো সে আমার কর্মী হতে পারে না।’

হামজা ছাত্রলীগকর্মী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ছাত্রলীগের রাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু। তিনি বলেন, ঘটনাটি শুনলাম। আমি ক্যাম্পাসের বাইরে আছি। এ ঘটনায় সে জড়িত থাকলে ক্যাম্পাসে ফিরে তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘ছুরিকাঘাতের ঘটনা শুনেই আমি আহত শিক্ষার্থীকে রামেক হাসপাতালে পাঠিয়েছি। আর অভিযুক্তকে পুলিশে দেওয়া হয়েছে।