বিডি রিপোর্ট টোয়েন্টিফোর ডটকম :
মার্চ-এপ্রিল দু মাস নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ থেকে লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে ইলিশ শিকারে যাচ্ছে জেলেরা। এরই মধ্যে নৌকা মেরামত ও জাল বুনার কাজও শেষ করেছে তারা।
এর জন্য সরকারের তালিকভূক্ত প্রায় ৫২ হাজার জেলে নদীতে নামছে। এ কারণে স্বস্তি ফিরে এসেছে জেলে পরিবারগুলোতে। কর্তৃপক্ষের দাবি জাটকা রক্ষার কর্মসূচি সফল হওয়ায় এ বছর ইলিশের উৎপাদন বাড়বে।
জাতীয় মাছ ইলিশ রক্ষায় সরকার প্রতি বছরের অক্টোবর মাসে মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিন ও জাটকা ইলিশ রক্ষায় মার্চ-এপ্রিল দুই মাস নদীতে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আসছে। নিষেধাজ্ঞা চলাকালে মেঘনা নদীর মতলব উত্তরের ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুরের চর আলেকজেন্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার এলাকায় সকল প্রকার মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। যার ৬০ কিলোমিটার পড়েছে চাঁদপুর এলাকায়। আর এ কারণে চাঁদপুর সদর, হাইমচর, মতলব দক্ষিণ ও উত্তর উপজেলার ৫২ হাজার ১৮৯ জন জেলে কর্মহীন হয়ে পড়ে।এ সময় সরকার জেলেদের চাউলসহ নানান সহায়তা দিয়ে থাকে।
হাইমচরের কাটাখালির জেলে আমির গাজী বলেন, অনেক কষ্টে ছিলাম গত দুই মাস। সরকারি যে চাল পেয়েছি তা দিয়ে মাত্র ১০ দিন চলেছে। তারপর যে অন্য কাজ করে আয় করব সেই পরিস্থিতিও ছিল না। কারণ, করোনা আতঙ্কে অর্ধাহারে অনাহারে ঘরেই কেটেছিল। এতে পরিবারের ৫ সদস্য নিয়ে কষ্টের সীমা ছিল না।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুল বাকী জানান, জাটকা সংরক্ষণে অন্য বছরের চেয়ে এবার কিছুটা নমনীয় ভূমিকা নিতে হয়েছে জেলা টাস্কফোর্সকে। কারণ, করোনা পরিস্থিতির কারণে মানবিক আচরণ করতে হয়েছে জেলেদের। তাই একই সঙ্গে যারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেছে তাদের লঘুদণ্ড দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, এ সময় কয়েক হাজার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে। যার মূল্য প্রায় ৫৮ লাখ ৮৬ হাজার টাকা, এ ছাড়াও ৬২ জেলের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। জেলেদের জরিমানা আদায় করা হয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার টাকা এবং ৭৫ জন জেলের জেল হয়েছে।
ইলিশ গবেষক চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আনিছুর রহমান বলেন, চলতি মৌসুমে তাদের গবেষণার ফলে যা তথ্য উপাত্ত মিলেছে-তাতে আশা করা যাচ্ছে, বিগত বছরের চেয়ে এবার আরো বেশি পরিমাণ ইলিশ আহরণ করতে পারবেন জেলেরা। ফলে গত বছরের ৫ লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিক টন ইলিশের উৎপাদন ছাড়িয়ে সাড়ে পাঁচ লাখ মেট্রিকটনে উন্নীত হবে।
ইলিশের প্রজনন ও জাটকা রক্ষা গেল দুই মাস অভয়াশ্রম ঘোষণা করে সরকার। এ সময় নদীতে সকল প্রকার মাছ ধরা, ক্রয়-বিক্রয় ও বাজারজাত নিষিদ্ধ ছিল।