প্রচ্ছদ সারাদেশ মানিকগঞ্জে ৩ ভার্চুয়াল আদালতে ২৮টি মামলার শুনানি, ২২ জনের জামিন

মানিকগঞ্জে ৩ ভার্চুয়াল আদালতে ২৮টি মামলার শুনানি, ২২ জনের জামিন

মানিকগঞ্জ :
মানিকগঞ্জে তিনটি ভার্চুয়াল আদালতে বৃহস্পতিবার (১৪ মে) ২৮টি মামলার শুনানি হয়েছে। এসব মামলার ২২জন আসামি জামিন পেয়েছেন।

জেলা আইনজীবী সমিতি সূত্রে জানা যায়, ‘আদালত কর্তৃক তথ্য–প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ-২০২০’ এবং উচ্চ আদালতের জারি করা ‘বিশেষ প্র্যাকটিস নির্দেশনা’ অনুসারে বৃহস্পতিবার জেলার সাতটি উপজেলার জন্য তিনটি ভার্চুয়াল আদালত গঠন করা হয়। এর মধ্যে জেলা ও দায়রা জজ মমতাজ বেগম নিজেই একটি ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনা করেন। তার আদালতে আইনজীবীরা ১৩ টি মামলায় জামিনের আবেদন করেন। সবগুলো মামলারই শুনানি অনুষ্ঠিত হয় এবং সবারই জামিন হয়েছে।

তবে এই পদ্ধতিতে আদালত পরিচালনায় কোনো কোনো আইনজীবী বিচার কাজে অংশ নেননি। এ ক্ষেত্রে কারিগরি সমস্যার পাশাপাশি আইনজীবীদের অনাগ্রহের কথা জানা গেছে।

আলাদাভাবে অপর দুটি ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনা করেন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর হোসেন ও পারভেজ আহাম্মেদ।

চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর হোসেনের আদালতে আইনজীবীদের জামিনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৯টি মামলার শুনানির কথা থাকলেও হয়েছে আটটির। এর মধ্যে ৫টি মামলায় জামিন হয়েছে। বাকি তিনটি মামলায় আসামির জামিন নাকচ হয়েছে।

চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পারভেজ আহাম্মেদের আদালতে নয়টি মামলার মধ্যে সাতটিতে শুনানি হয়। তবে আবেদন করলেও তিনটি মামলার বিচারকাজে আইনজীবীরা অংশ নেননি।

এ বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি জামিলুর রশিদ খান বলেন, করোনা সংক্রমণে ঝুঁকির কথা ভেবে ভার্চুয়াল আদালত গঠন করা হয়েছে। এ নিয়ে কোনো কোনো আইনজীবীর মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এ পদ্ধতিতে সেবা দিতে হলে আইনজীবী, মোহরার ও বিচারপ্রার্থীদের আদালতে ও জেলখানায় যেতেই হবে। কারণ জামিন আবেদন, ওকালতনামা, কোর্ট ফি ও ছাড়পত্র আইনজীবী সমিতির ভবন থেকে বিক্রি করা হয়ে থাকে। এতে তাদের সংক্রমণের ঝুঁকি থাকছেই।

আইনজীবী মহিউদ্দিন স্বপন বলেন, অধিকাংশ আইনজীবীর কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও স্ক্যানার মেশিন নেই। কারও কারও স্মার্ট ফোনও নেই। প্রশিক্ষণের অভাবে অনেক আইনজীবী প্রযুক্তি ব্যবহার সম্পর্কে অবহিত নন। তাছাড়া এই পদ্ধতিতে শুধু কারাগারে বন্দি আসামিদের জামিন শুনানিতে আদালত পরিচালিত হচ্ছে। অন্য মামলার আসামিরা এই পদ্ধতিতে সুযোগ পাচ্ছেন না।

তবে এই পদ্ধতিতে আদালত পরিচালনায় সন্তোষও জানিয়েছেন আইনজীবীদের অনেকে।

জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. লুৎফর রহমান বলেন, ভার্চুয়াল আদালতে অংশ নেওয়া নিয়ে জেলা বারের আইনজীবীদের মধ্যে নানা মত রয়েছে। তবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে দীর্ঘদিন বন্ধের কারণে জামিনপ্রার্থীরা কারাগারে অমানবিক দিন পার করছেন। এই পদ্ধতিতে আদালত পরিচালনার কারণে তাদের অনেকেই জামিনের সুযোগ পাচ্ছেন।