প্রচ্ছদ সারাদেশ ঢাকা বিভাগ মানিকগঞ্জে গৃহবধূ হত্যা মামলায় শ্বশুড়-শাশুড়ীসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড

মানিকগঞ্জে গৃহবধূ হত্যা মামলায় শ্বশুড়-শাশুড়ীসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি ॥

মানিকগঞ্জে গৃহবধু সুপ্রিয়া সাহা হত্যা মামলায় শ্বশুর-শাশুড়িসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড ও তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া প্রত্যেক আসামিকে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে মানিকগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জয়শ্রী সমদ্দার তিন আসামির উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সুপ্রিয়ার শ্বশুর দিলীপ সরকার, শাশুড়ি গীতা সরকার এবং মানিকগঞ্জ পূর্ব দাশড়া গ্রামের দীলিপ রায়ের ছেলে মহাদেব রায়। তারা পলাতক রয়েছেন। তবে এ মামলা থেকে সুপ্রিয়ার স্বামী দিপাঞ্জন সরকারকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- পূর্বদাশড়া গ্রামের রবীদ্র সাহার ছেলে রঞ্জিত সাহা (২৬), একই গ্রামের অরুণ পালের ছেলে বিষ্ণু পাল (২৬) এবং রবি ঘোষের ছেলে রঞ্জিত ঘোষ (২৭)।

মামলার বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে মানিকগঞ্জ পূর্ব দাশড়া গ্রামের সুকুমার সাহার মেয়ে মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের অনার্স (বাংলা) দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সুপ্রিয়া সাহার সঙ্গে একই গ্রামের দিলীপ সরকারের ছেলে দিপাঞ্জন সরকারের বিয়ে হয়। পারিবারিক কলহের জেরে ভাড়াটিয়া খুনি দিয়ে ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে সুপ্রিয়াকে হত্যা করা হয়। শ্বশুরবাড়ির লোকজন বিষয়টি ডাকাতি বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন।

এ ঘটনার পর দিন ২৮ সেপ্টেম্বর সুপ্রিয়ার বাবা সুকুমার সাহা বাদী হয়ে সুপ্রিয়ার স্বামী দিপাঞ্জন সরকার, শ্বশুর দিলীপ সরকার ও শাশুড়ি গীতা সরকারকে আসামি করে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করেন মানিকগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক মাসুদ মুন্সি।

তদন্ত শেষে আলোচিত এই মামলায় আর আটজনকে আসামি করা হয়। ২০১৬ সালে ২৯ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মাসুদ মুন্সি সুপ্রিয়া হত্যা মামলায় ৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় মোট ১৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

সুপ্রিয়ার বাবা সুকুমার সাহা জানান, তিনি মামলায় সুপ্রিয়ার স্বামী দিপাঞ্জন, শ্বমুর দিলীপ সরকার ও শাশুড়ি গীতা সরকারকে আসামি করেন। পুলিশ তদন্ত করে আরও চারজনের নাম চার্জশিট দেন। কিন্তু অন্য আসামিদের শাস্তি হলেও মূল আসামি দিপাঞ্জনের শাস্তি হয়নি। এটা অত্যন্ত কষ্টকর। এরা জামিন নিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছে।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন পিপি আব্দুস সালাম ও এপিপি মথুর নাথ সরকার এবং আসামির পক্ষে আইনজীবী আব্দুর রহমান, নজরুল ইসলাম বাদশা।