প্রচ্ছদ সারাদেশ ঘিওরে স্ত্রী হত্যাকারী স্বামী রূপক অবশেষে গ্রেফতার, হত্যার রহস্য উম্মোচন :

ঘিওরে স্ত্রী হত্যাকারী স্বামী রূপক অবশেষে গ্রেফতার, হত্যার রহস্য উম্মোচন :

নিজস্ব প্রতিবেদক, মানিকগঞ্জ :

মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার সোলধারা গ্রামে স্ত্রী হত্যার আসামি স্বামী রুপককে গ্রেফতার করেছে ঢাকা ও মানিকগঞ্জ সিআইডির যৌথ বাহিনী।

আজ বুধবার সকালে কেরানীগঞ্জ নদীর পার থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মানিকগঞ্জ সিআইডি তদন্ত কর্মকর্তা মনির হোসেন জানান ঢাকা ও মানিকগঞ্জ সিআইডির যৌথ অভিযানে ঘাতক স্বামী রুপককে কেরানিগঞ্জ থেকে গ্রেফতার কর হয়।

গ্রেফতারের পর আসামিকে আমাদের নিকট হস্তান্তর করা হয়। আমাদের হেফাজতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে আদালতে প্রেরন করা হবে।

উল্লেখ্য গত বৃহস্পতিবার ঘিওর উপজেলার সোলধারা গ্রামের স্বামী রুপকের বাড়ি থেকে স্ত্রী সুমী আক্তারের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মেয়েকে হত্যার অভিযোগে স্বামী রুপকের বিরুদ্ধে ঘিওর থানায় মামলা করেন সুমীর বাবা রহম আলী। হত্যাকান্ডের পর থেকে স্বামী রুপক পলাতক ছিল। অবশেষে তাকে ঢাকা ও মানিকগঞ্জ সিআইডির যৌথ অভিযানে কেরানিগঞ্জ থেকে প্রেপ্তার কর হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার রহস্য উম্মোচন :

বুধবার (২৭ জুলাই) দুপুরে মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর জানান,
গ্রেফতার আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মানিকগঞ্জ জজ কোর্টে অ্যাডভোকেটের সহকারী হিসেবে সে প্রায় ৯ বছর ধরে কাজ করতো। প্রায় আড়াই মাস আগে উভয় পরিবারের সম্মতিতে গত ১৫ মে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের আগে থেকেই ভিকটিম সুমি আক্তার এসডিআই নামীয় একটি বেসরকারি সংস্থায় বানিয়াজুড়ি ইউনিয়নে মাঠকর্মী হিসেবে কাজ করতো। বিয়ের সময় কথা ছিল সুমি আক্তার বিয়ের পরও চাকরি করবে। কিন্তু বিয়ের পর স্বামীর পরিবারের সদস্যদের মত পাল্টে যায়। তারা সুমি আক্তারকে চাকরি ছাড়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। সুমি আক্তার জানায়, চাকরি ছাড়ার কথা সে এরইমধ্যে অফিসে জানিয়েছে। অফিস তার বিকল্প দক্ষকর্মী খুঁজছে। তার বিকল্প না পাওয়া পর্যন্ত তাকে চাকরি না ছাড়ার জন্য অনুরোধ করেছে।

তিনি আরও বলেন, চাকরি ছাড়ার বিষয়টি ছাড়াও তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন অন্যান্য বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সুমি আক্তারের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২১ জুলাই সকাল টা থেকে ১০টা যেকোনো সময় আসামির বসতঘরে ভিকটিমের চাকরি ছাড়ার বিষয়ে রূপক ও সুমি আক্তারের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আসামি রূপক সুমি আক্তারকে কিল-ঘুষি ও লাথি মারতে থাকলে রূপকের মা রওশন আরা বেগম রূপককে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু রূপক আরও বেশি উত্তেজিত হয়ে ঘরে থাকা ধারালো দা দিয়ে সুমির গলায় কোপ দিয়ে রক্তাক্ত জখম করলে সুমি আক্তার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। সুমির মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যায় রূপক।

বিয়ের মাত্র আড়াই মাসের মাথায় সুমি আক্তারের চাকরি নিয়ে সৃষ্ট দাম্পত্য কলহের জেরে নববধূকে অত্যন্ত নির্মমভাবে গলাকেটে হত্যার ঘটনায় একমাত্র এজাহারনামীয় আসামিকে দ্রুততম সময়ে চিহ্নিত করে গ্রেফতার সিআইডি তথা বাংলাদেশ পুলিশের একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন বলেও জানান সিআইডির এই কর্মকর্তা।