প্রচ্ছদ হেড লাইন মানব দেহে করোনার টিকা পরীক্ষা শুরুর ঘোষণা অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির

মানব দেহে করোনার টিকা পরীক্ষা শুরুর ঘোষণা অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির

বিডি রিপোর্ট টোয়েন্টিফোর ডটকম : 

আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের টিকা তৈরি করতে পারবেন বলে বিশ্বাস করেন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা। বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে টিকাটির পরীক্ষামূলক ব্যবহারে সফলতা পাওয়া গেছে। এখন মানব দেহে এর পরীক্ষা শুরু হবে। আগামী সপ্তাহ থেকেই এ পরীক্ষা শুরু হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরীক্ষাটির প্রধান গবেষক অধ্যাপক আড্রিয়ান হিল। এ খবর দিয়েছে দ্য ডেইলি মেইল।
খবরে বলা হয়, বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কোনো স্বীকৃত ওষুধ বা টিকা নেই। বিশ্বজুড়ে অসংখ্য গবেষক ও বিজ্ঞানীরা এর টিকা তৈরির চেষ্টা করছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুসারে, ৭০টিরও বেশি টিকা নিয়ে বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন। এর মধ্যে টিকা তৈরির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ ‘মানব দেহে পরীক্ষা’ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি ও চীনের একটি প্রতিষ্ঠান।

নতুন করে সে তালিকায় যুক্ত হতে যাচ্ছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের একটি দল।
অক্সফোর্ডে দলটির প্রধান অধ্যাপক হিল বলেন, আমরা আগামী সপ্তাজ থেকে মানব দেহে পরীক্ষা শুরু করবো। আমরা টিকাটি বিভিন্ন প্রজাতীর প্রাণীর উপর পরীক্ষা করে দেখেছি। তিনি বলেন, আমরা এক্ষেত্রে বেশ সতর্ক কিন্তু দ্রুত পন্থা অবলম্বন করেছি।
হিলের দল শিম্পাঞ্জির দেহ থেকে অ্যান্টিবডি নিয়ে টিকা তৈরির চেষ্টা করছে। এজন্য শিম্পাঞ্জির দেহে প্রথমে ভাইরাসটি প্রবেশ করানো হয়। ভাইরাস থেকে বাঁচতে প্রাণীটির দেহে একধরনের অ্যান্টিবডি সৃষ্টি হয়। অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন গ্রুপ ও জেনার ইন্সটিটিউট যৌথভাবে এই টিকা তৈরির কাজ করছে। তাদের প্রত্যাশা আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই তারা টিকাটি মানুষের মধ্যে ব্যবহার উপযোগী করে তুলতে পারবে। তবে সেটি বাজারে আসতে দেরি হতে পারে।
হিল বলেন, বাণিজ্যিকভাবে সরবরাহ করা একটি ভিন্ন প্রক্রিয়া। অনেক ক্ষেত্রে, তাতে কয়েক বছর লেগে যায়। তিনি বলেন, এমন কোনো টিকা তৈরি করে লাভ নেই, যেটি গণহারে উৎপাদন করা না যায়। এজন্য আপনার লাখো নয়, প্রতি বছর শত শত কোটি টিকা উৎপাদনের প্রযুক্তি থাকতে হবে।
সাধারণত কোনো ভাইরাসের টিকা বাজারে আসতে ১০ থেকে ৫ বছর লেগে যায়। কিন্তু, বর্তমানে করোনার টিকা আগামী ১ থেক ২ বছরের মধ্যে বাজারে আনার চেষ্টা করছে বিশ্বজুড়ে কয়েক ডজন প্রতিষ্ঠান। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী বছরের আগে কোনো টিকা বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের সম্ভাবনা নেই।
সাধারণত কোনো ওষুধ বা টিকা মানুষের ব্যবহারের জন্য উপযোগী হিসেবে ঘোষিত হতে মানব দেহে পরীক্ষার তিনটা পর্যায় পার করতে হয়। এর মধ্যে প্রথমে স্বল্প সংখ্যার মানুষের মধ্যে পরীক্ষা চালানো হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে আরো বেশি সংখ্যক মানুষের উপর ও তৃতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন জায়গায় হাজারে হাজারে ও কখনো লাখ লাখ মানুষের উপর পরীক্ষা চালানো হয়।
গতকাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে মানব দেহে পরীক্ষার শুরু করেছি তিনটি প্রধান টিকা প্রস্তুতকারী দল। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান মডার্না ও ইনোভিও ফার্মাসিউটিক্যালস এবং চীনের কানসিনো বায়ো রয়েছে। কানসিনো বায়ো জানিয়েছে, তারা খুব শিগগিরই মানব দেহে পরীক্ষার দ্বিতীয় ধাপ শুরু করতে যাচ্ছে।