প্রচ্ছদ হেড লাইন ‘মাদক ব্যবসায়ীরা সমাজকে মেধাশূন্য করতে তৎপর’

‘মাদক ব্যবসায়ীরা সমাজকে মেধাশূন্য করতে তৎপর’

অভিযানের সময় মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি ছুড়লে আত্মরক্ষার্থে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী শুধু পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি বলেছেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনী কোনও অবস্থাতেই মাদক ব্যবসায়ীদের গুলি করে না। যখন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে কেবল তখনই আত্মরক্ষার্থে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এ অবস্থায় অনেকক্ষেত্রে নিরাপত্তা বাহিনীকেও গুলি করতে হয়। এতে কিছু অপরাধী নিহত হলেও পুলিশও কিন্তু রক্ষায় পায় না। প্রতিপক্ষের গুলিতে পুলিশ-র‌্যাব সদস্যরাও আহত হন।’

বুধবার (২৩ মে) দুপুরে খুলনায় র‌্যাব-৬ এর কার্যালয়ে আয়োজিত ৫৭ দস্যুর আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘মাদক ব্যবসায়ী ও সরবরাহকারীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে এ তালিকা করা হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী বড় বড় মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। তাদের ধরে বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন,‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দেশকে জঙ্গি, মাদক ও জল-বনদস্যুমুক্ত করতে হবে। আর সেজন্য র‌্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিটি ইউনিট কঠোর অবস্থান নিয়ে কাজ করছে। শিগগিরই সুন্দরবনকে জলদস্যু ও বনদস্যুমুক্ত ঘোষণা করা হবে।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভিশন-২০২১ ও ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়ন করতে হলে যুব সমাজকে মাদকের ছোবল থেকে রক্ষা করতে হবে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সারাদেশে মাদকবিরোধী অভিযান চলছে। সম্প্রতি তিন হাজারের অধিক মাদক ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে।’

দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মাদক ব্যবসায়ী ও সরবরাহকারীদের ধরিয়ে দিন। এরা সমাজকে মেধাশূন্য করতে তৎপর। মেধাহীন যুব সমাজ দেশের উন্নয়নে কোনও কাজে আসবে না। তাই আপনার সন্তানের প্রতি দৃষ্টি রাখুন। পরিবারের প্রতিটি সদস্যর ওপর নজর রাখুন। এতে মাদক-সন্ত্রাসমুক্ত করার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ভিশন বাস্তবায়ন করা সহজ হবে।’

আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘একসময়ে সুন্দরবনে দস্যুরা ছিল আতঙ্ক। র‌্যাব ও পুলিশের অভিযানে তারা আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীও এদের জন্য সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন। যারা সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন, প্রধানমন্ত্রী তাদের জন্যও সুস্থ-সুন্দর জীবিকার কথা ভাবছেন। যারা সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছেন না, তাদের বিরুদ্ধে আগামীতে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

অনুষ্ঠানে আত্মসমর্পণকারী ৫৮ দস্যুর প্রত্যেককে পুর্নবাসনের জন্য একলাখ টাকার চেক দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। এ ছাড়া, বক্তব্য রাখেন– স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. মো. মোজাম্মেল হোসেন,আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, খুলনা সিটি করপোরেশনের নব-নির্বাচিত মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, র‌্যাবের মহা-পরিচালক বেনজির আহমেদ, নৌ-পুলিশের ডিআইজি শেখ মো. মারুফ হাসান, র‌্যাব-৮ এর অধিনায়ক আতিকা ইসলাম, খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. হাবিবুর রহমান এবং খুলনা জেলা প্রশাসক মো. আমিন উল আহসান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন র‌্যাব-৬ এর অধিনায়ক খোন্দকার রফিকুল ইসলাম। এসময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির অন্যান্য সদস্য, পুলিশ, কোস্টগার্ড, বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।