শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্বদ্যিালয়ে (জাবি) কে কার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নাটক সাজিয়ে অরাজকতা সৃষ্টি করছে তার খবর আমাদের কাছে আছে। যে প্রকল্পে অর্থছাড় হয়নি সেখানে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে যারা ক্যাম্পাসে অস্থির পরিবেশ সৃষ্টি করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, যেকোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করার অধিকার আছে, কিন্তু অরাজকতা সৃষ্টির অধিকার কারও নেই। তবে উপাচার্যের (ভিসি) বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধেও সরকার ব্যবস্থা নেবে।
শনিবার ঢাকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে জরুরি এক সংবাদ সম্মেলনে উপমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বিরুদ্ধে তথ্য-উপাত্ত ও লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। গতকাল রাতে শিক্ষামন্ত্রীর একান্ত সচিবের কাছে এ অভিযোগ দেয়া হয়; তবে তা এখনও দফতরে আসেনি। বর্তমান দুর্যোগপূর্ণ অবস্থা কেটে গেলে এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। অভিযোগ সত্য হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের যে প্রকল্পে অর্থছাড় হয়নি সেখানে সন্দেহের ভিত্তিতে অরাজকতা করা হয়েছে। সে জন্য কোথা থেকে অর্থ আসল তা খুঁজে বের করা হয়েছে। যারা এসবের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক নিজেদের নৈতিক অবস্থান থেকে সরে গেছেন, আমরা কাউকে সরাইনি বা সরে যেতে বলিনি। কে কার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে নাটক সাজিয়েছে তার খবর আমাদের কাছে আছে।
উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান বলেন, কোনো ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি এ সরকার প্রশ্রয় দেবে না। আমরা ক্ষমতায় এসে প্রশাসনসহ বিভিন্ন খাতে অন্যায়-অনিয়ম দেখেছি। এ সব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল এমন যাদের অকাট্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে তাদের অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে, অনেককে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, অভিযোগ রয়েছে এমন আবার কেউ পলাতক রয়েছেন।
মহিবুল হাসান বলেন, কিছু কিছু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনা-সমালোচনা এবং আন্দোলন শুরু হয়েছে। নানা দাবিতে এসব আন্দোলন শুরু হলেও অনেক স্থানে আন্দোলনের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতার বিষয় ছাড়িয়ে গিয়ে তা উপাচার্য পদত্যাগের আন্দোলনে ছড়িয়ে গেছে। এসব ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত, যা আমরা কামনা করি না। কারণ উপাচার্য পদত্যাগের আন্দোলনের মাধ্যমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার যে মূল লক্ষ্যটা বাস্তবায়ন হয় না। আমরা বারবার দেখেছি যে, সব স্বচ্ছতার দাবি, জবাবদিহিতার দাবিতে উপাচার্য যখন পদত্যাগ করেন তখন সেসব দাবি বিলুপ্ত হয়ে যায় তা আর মাঠে থাকে না।
যারা দাবি-দাওয়া নিয়ে মাঠে আছেন তারা যদি মনে করেন তাদের আন্দোলন যৌক্তিক, প্রমাণসহ লিখিত অভিযোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, অভিযোগ নিয়ে কেন না এসে ভিসির পদত্যাগ দাবি করা হচ্ছে? ভিসির পদত্যাগের মাধ্যমে কি সব জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সম্ভব?