প্রচ্ছদ রাজনীতি বুয়েটের ছাত্র আন্দোলনে শিবির-ছাত্রদল সক্রিয়

বুয়েটের ছাত্র আন্দোলনে শিবির-ছাত্রদল সক্রিয়

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার পর বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে ছাত্রদের আন্দোলনে শিবির ও ছাত্রদল সক্রিয় বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

রোববার সচিবালয়ে সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তথ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, বেনামে শিবির-ছাত্রদল সক্রিয় হয়ে বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘বুয়েটে যে ঘটনাটি ঘটেছে, এটি অত্যন্ত নিন্দনীয়, ন্যক্কারজনক ও নৃশংস। আমরা প্রথম থেকেই এ ঘটনার প্রতিবাদ করেছি। কেউ দাবি তোলার আগেই সরকার এ ব্যাপারে তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এখন পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেখানে ছাত্রদের যে আবেগ, সেটার সঙ্গে আমি সম্পূর্ণ একমত পোষণ করি। তাদের আবেগের সঙ্গে আমারও আবেগ জড়িত।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের প্রতিবাদের সঙ্গেও আমি একমত, এর প্রতিবাদ হওয়া প্রয়োজন। আমি মনে করি, এ ধরনের ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না হয় সেজন্য এ প্রতিবাদ অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করছে ও করবে।’

‘কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে দাবি-দাওয়া মেনে নেয়ার পর কেন আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা? সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের সব দাবি মেনে নিয়েছে। অতীতে বাংলাদেশের ইতিহাসে এত তড়িৎগতিতে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি’- বলেন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক।

মন্ত্রী বলেন, ‘আজ আমরা লক্ষ্য করছি, ছাত্রদের আবেগ-অনুভূতি পুঁজি করে একটি মহল বিশেষত বিএনপি ও তাদের মিত্ররা… বাংলাদেশে একটি মহল আছে যারা দেশ অস্থিতিশীল হলে ফায়দা লুটতে পারে, তারা সবাই মিলে এ ঘটনাকে পুঁজি করে ছাত্র অঙ্গন অশান্ত, দেশকে অশান্ত করার দুরভিসন্ধি থেকে ছাত্রদের মধ্যে তাদের এজেন্ট ঢুকিয়ে দিয়েছে। যে কারণে দাবি মেনে নেয়ার পরও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা আসছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ থাকবে না- এমন দাবিও কেউ কেউ করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পুলিশ সেখানে ধৈয্যের পরিচয় দিয়েছে।’

‘আমি বলতে চাই, এ ঘটনাকে পুঁজি করে অনেকে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। সেখানে আমরা লক্ষ্য করছি শিবির সক্রিয় হয়েছে, ছাত্রদল সেখানে সক্রিয় হয়েছে। স্বনামে নয় বেনামে সক্রিয় হয়েছে, সাধারণ ছাত্রদের মধ্যে ঢুকে পড়েছে। তারা বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি ছাত্রদের অনুরোধ জানাব, কেউ যাতে এটিকে পুঁজি করে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’

বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধে মৌলবাদী গোষ্ঠীর তৎপরতা বাড়বে বলে মনে করেন কি-না, জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সাময়িকভাবে যেটি বন্ধ হয়েছে, সেটি পরিস্থিতি উত্তরণে সহায়ক হবে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি। তবে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলে সেটির নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তবে এটি একান্তই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ব্যাপার।’

দেশে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করার দাবিকে অমূলক বলে মনে করেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সমস্ত অর্জনের সাথে ছাত্র সংগঠনগুলোর ভূমিকা জড়িয়ে আছে। আজ যারা দেশে প্রতিষ্ঠিত নেতা, তাদের বেশির ভাগই এসেছেন ছাত্র রাজনীতি থেকে। ছাত্র রাজনীতি একেবারে বন্ধ করে দিলে… ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করার জন্য কেউ কেউ যে বিশেষজ্ঞ মত প্রকাশ করছেন তাদের আসলে উদ্দেশ্য ভালো নয়। সুতরাং সেটি হওয়া কোনোভাবেই সমীচিন নয়।’

বিরাজনীতিকরণের যে প্রক্রিয়া কোনো কোনো মহল থেকে করা হয়, ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবি সেই ধরনের চেষ্টা কি-না? উত্তরে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যারা বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়ার সঙ্গে অতীতে যুক্ত ছিলেন, বিরাজনীতিকরণের জন্য যারা সচেষ্ট থাকেন, তাদের কারও কারও মুখ থেকে এ কথাগুলো আসছে বলে আমরা লক্ষ্য করছি।’