প্রচ্ছদ এক্সক্লুসিভ সংবাদ বিমানের যেখানে করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি কম

বিমানের যেখানে করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি কম

করোনা ভাইরাস আতঙ্কে ভুগছে পুরো বিশ্ব। বিমান ভ্রমণ করার সময় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগীর মাধ্যমে আপনিও এ ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, সংক্রামিত কোনো যাত্রীর কাছ থেকে করোনা ভাইরাস ধরা এড়াতে সবচেয়ে নিরাপদ জায়গাটি হচ্ছে, জানালার পাশের সিটে বসা।

ভাইরাসটি কীভাবে ছড়াতে পারে তা দেখানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের এমরি বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বিমানের মধ্যে যাত্রীদের চলাফেলার একটি মডেল তৈরি করেছিলেন। গবেষণার ফলাফলে, আইল সিটে বসা যাত্রীদের সংক্রামিত কারো সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনা অনেক বেশি দেখা গেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সংক্রামিত কারো সংস্পর্শ এড়াতে যাত্রীদেরকে তাদের সিটে বসে থাকা উচিত। কারণ আপনি যত বেশি সিট থেকে উঠবেন এবং বিমানের মধ্যে হেঁটে বেড়াবেন, এই রোগে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির কাছাকাছি যাওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি তৈরি হবে।

আর এ কারণে কেবিন ক্রুদেরও ফ্লাইটে উঠা উচিত না- যদি তাদের কোনো ধরনের সংক্রমণ থাকে। বিশেষ করে নতুন করোনা ভাইরাসের মতো সংক্রমণ, কারণ ফ্লাইটে যাত্রীদের সঙ্গে কেবিন ক্রুদের যোগাযোগ সবচেয়ে বেশি হয়।

গবেষকরা তিন থেকে পাঁচ ঘণ্টা স্থায়ী ফ্লাইটে যাত্রীদের আচরণ নিয়ে গবেষণা করেছিলেন। তারা দেখেছেন, ৩৪ শতাংশ যাত্রী একবার তাদের সিট থেকে উঠেছিলেন আর একাধিকবার সিট থেকে উঠেছিলেন ২৪ শতাংশ। কিন্তু জানালার পাশের সিটে বসা যাত্রীরা খুব কমই তার সিট থেকে উঠেছিলেন। দেখা গেছে, আইল সিটে বসা যাত্রীর যেখানে অন্য যাত্রীদের কাছাকাছি হওয়ার সম্ভাবনা ৬৪ শতাংশ ছিল, সেখানে জানালার পাশের সিটে বসা যাত্রীর ছিল মাত্র ১২ শতাংশ।

এমরি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দলটির মতে, ফ্লাইটে চুপচাপ সিটে বসে থাকার বিষয়টি সহজ নয়। যাত্রীরা বাথরুমে যান, পা লম্বা করে বসেন এবং ওপরের লকার থেকে জিনিসপত্র বের করে থাকেন।

গবেষণার অন্যতম লেখক হাওয়ার্ড ওয়েইস বলেন, আইল সিটে বসে থাকা ব্যক্তিদের অন্যান্যদের সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনা যদিও বেশি কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে তারা অবশ্যই সংক্রামিত হবেন। কারণ সংক্রামিত কেউ হয়তো আপনাকে দ্রুত পাশ কাটিয়ে যেতে পারে। সামগ্রিকভাবে, আমরা যা দেখিয়েছি তা হলো, কোনো নির্দিষ্ট যাত্রীর কাছে এটি সংক্রমণের কম সম্ভাবনা রয়েছে।

করোনা ভাইরাস কীভাবে সংক্রমণ হয় তা এখনো স্পষ্ট না হওয়ায় বিশেষজ্ঞ দলটি বলছে যে, ফ্লাইটের ওপর এর কেমন প্রভাব পড়বে তা তারা ঠিক বলতে পারছেন না।

এই ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে সংক্রামিত হয় বলে মনে করা হচ্ছে এবং ১৪ দিন পর লক্ষণ প্রকাশ করে, যার মানে কোনো উপসর্গ দেখা দেওয়ার আগেই মানুষজন অসুস্থ এবং সংক্রমণ হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, জানালার পাশের সিট বেছে নেওয়ার পাশাপাশি কোনো কিছু স্পর্শ করার পর যাত্রীদের নিয়মিত হাত ধোয়া উচিত। হাত দিয়ে মুখ স্পর্শ না করা এবং কাশির সমস্যা রয়েছে এমন যাত্রীদের কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রাখা উচিত।

শিকাগো মেডিসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিলি ল্যান্ডন বলেছেন, যেহেতু করোনা ভাইরাসটি নতুন, তাই বিশ্বের প্রত্যেকেরই এতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। আর এখন পর্যন্ত এর কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা বা ভ্যাকসিন নেই।