প্রচ্ছদ আর্ন্তজাতিক প্রথম ভাষণেই বাজিমাত বেনজির ভুট্টোর ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টোর

প্রথম ভাষণেই বাজিমাত বেনজির ভুট্টোর ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টোর

পার্লামেন্টের যে অধিবেশনে ইমরান খান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেন, সেই অধিবেশনেই বাগ্মিতার গুণে পাদপ্রদীপের আলোটুকু নিজের দিকে টেনে নিলেন বেনজির ভুট্টোর ছেলে বিলওয়াল ভুট্টো জারদারি।

জাতীয় পরিষদে শুক্রবার বিলওয়ালের ভাষণ শুনে পাকিস্তানের রাজনীতিক-কলামনিস্টদের অনেকে এখন ২৯ বছর বয়সী বেনজিপুত্রকে দেশটির সবচেয়ে যোগ্য পার্লামেন্টেরিয়ানও ভাবতে শুরু করেছেন।

পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বিলওয়াল ভাষণে ইমরান খানকে যেমন ‘মনোনীত প্রধানমন্ত্রী’ বলে কটাক্ষ করেছেন, তেমনি সরকার প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার আগে তার দায়িত্বের কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।

জাতীয় পরিষদের শুক্রবারের অধিবেশনেই পাকিস্তানের ২২তম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন তারকা ক্রিকেটার ও পাকিস্তান তেহরিক ই ইনসাফ দলের প্রধান ইমরান খান। শনিবার তিনি শপথও নিয়েছেন।

পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের পর ভাষণ দিতে দাঁড়ান এই প্রথম পার্লামেন্টে নির্বাচিত হয়ে আসা বিলাওয়াল। নানা ও মায়ের মতো পাশ্চাত্যে শিক্ষিত বিলাওয়াল ভাষণটি দেন ইংরেজিতে।

বিলাওয়াল শুরুতেই ইমরান খানতে বলেন, “খান সাহেব, আপনি এখন আর কোনো দলের চেয়ারম্যান নন, আপনি দেশের প্রধানমন্ত্রী। আপনি তাদেরও প্রধানমন্ত্রী যারা আপনাকে ভেড়া বলে, যারা আপনাকে ছাগল বলে, যারা আপনাকে গাধা বলে এমনকি যারা আপনাকে জিন্দা লাশ বলে।”

ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে আসা পিপিপির চেয়ারম্যান বিলওয়াল পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সঙ্কট এবং সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখতে তার দলের পক্ষ থেকে সহায়তার প্রতিশ্রুতিও দেন।

নতুন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে নির্বাচিতের বদলে ‘মনোনীত’ অভিহিত করে বলেন, “খান সাহেব আপনি ১০০ দিনের রোড ম্যাপ দিয়েছেন।

“আমরা দেখতে চাই, আপনি কী করে ১ কোটি চাকরির ব্যবস্থা করেন, কীভাবে দারিদ্র্য দূর করেন। আপনি বলেছেন, আপনি আত্মহত্যা করবেন, তবুও আইএমএফের কাছে হাত পাতবেন না। আমরা দেখতে চাই, আপনি কীভাবে অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলা করেন।”

বিলাওয়াল যখন ভাষণ দিচ্ছিলেন, তখন টেবিল চাপড়ে তাকে সমর্থন দিচ্ছিলেন পার্লামেন্টে পিপিপি সদস্যরা; যদিও এই পার্লামেন্টে সদস্য সংখ্যার বিচারে তৃতীয় স্থানে নেমে এসেছে এক সময়ে ক্ষমতাসীন দলটি।
তারপরও পার্লামেন্টের বাইরে টুইটারে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা চলছে বিলওয়ালের।

প্রবীণ সাংবাদিক জাহিদ হুসাইন প্রশংসায় ভাসিয়েছেন নবীন এই পার্লামেন্ট সদস্যের প্রাজ্ঞ ভাষণকে।

টেলিভিশন আলোচক কাশিফ আব্বাসী লিখেছেন, “তার নির্বাচনী প্রচারেই আমি অভিভূত ছিলাম। তার ভাষণ শুনে আরও অভিভূত হয়েছিল।”

জনপ্রিয় কলামনিস্ট খুররাম হুসাইন বলেছেন, “আরে ব্বাপ! এই মুহূর্তে তো দেখি বিলাওয়ালই পার্লামেন্টের সবচেয়ে অভিজ্ঞ সদস্য।”

কলামনিস্ট নাদিম ফারুকও এই প্রথম পার্লামেন্টে আসা বিলাওয়ালের ভাষণে মুগ্ধ হওয়ার কথা লিখেছেন।

সাংবাদিক রউফ ক্লাসরা বলেছেন, বিলাওয়ালের ভাষণ শুনে আঙুল উঁচিয়ে তার প্রশংসা না করে পারেননি ইমরান খানও।