প্রচ্ছদ আজকের সেরা সংবাদ ‘দুষ্টের শাসন, শিষ্টের পালন করতেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’

‘দুষ্টের শাসন, শিষ্টের পালন করতেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘গুজব সন্ত্রাস, অপপ্রচার এবং মিথ্যাচার রুখতেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস করেছে সরকার। যারা ক্রাইম করবে না তাদের কোনো ভয় নেই। দুষ্টের শাসন এবং শিষ্টের পালন করতেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন।’

সোমবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে (কেআইবি) আওয়ামী লীগের শিল্পবিষয়ক উপ-কমিটির সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, এই আইনটা কেন করা হয়েছে? মনে আছে, গুজব সন্ত্রাস; লাইভ পোস্টিং- এক মহিলা কালো কাপড়ে ঢাকা, সে আওয়ামী লীগ পার্টি অফিসে আছে, তাকে রেপ করা হচ্ছে! আমাকে বাঁচাও, আমাকে রক্ষা করো! তো কী করতে হবে? পরে তো ধরা পড়েছে! আর এক নায়িকাকে দিয়ে এসব নাটক সাজিয়েছে তারা (বিএনপি)।

গুজব সন্ত্রাস এখন আন্দোলন এর চেয়েও ভয়াবহ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই কাজটি বিএনপি করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা চালানোর পর এই পোস্টগুলো তারা করে যাচ্ছে। দেশে একটি সরকার আছে। তারপরেও কী সব এভাবেই চলতে থাকবে? যারা ক্রাইম করছে না, তাদের কোনো ভয় নেই। প্রাইম মিনিস্টার পরিষ্কারভাবে বলেছেন। তাই বলে কি দুষ্ট কে দমন করবো না? ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ‘দুষ্টকে দমন করার জন্য, শিষ্টকে পালন করার জন্য।’

এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল ক্রাইম এর বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি কী থাকবে না? অরাজকতা আর এক দলীয় শাসন এটাও অপপ্রচার। শালীনতা বলতে এ দলের কিছু নেই। একজন তো নয়া পল্টনের অফিসে বসে আমাদের প্রাইম মিনিস্টার থেকে শুরু করে সকল নেতার বিরুদ্ধে অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলে। এই যে আমাদের এইচ টি ইমাম সাহেব, প্রবীণ মানুষ তার বিরুদ্ধে অশ্রাব্য অশালীন ভাষায় কথা বলে। তারপরেও তো আমরা তাকে গ্রেফতার করিনি! মিথ্যাচার এবং অপপ্রচারই বিএনপির একমাত্র ক্যাপিটাল।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকার কিছুই করবে না? সরকার কি ঘরে বসে ডুগডুগি বাজাবে? এসবের কোনো জবাব থাকবে না! জনগণের জানমালের নিরাপত্তা আমরা নিশ্চিত করবো না!

বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ঘোষণার প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, আমি এর কথা আগেও বলেছি, এখনও বলছি; পানি আর তেলে মেশে না। এই জগাখিচুড়ি ঐক্যের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। ১০ বছরে যারা ১০ মিনিটও রাস্তায় দাঁড়াতে পারে না, এখন এক মাসে কী কান্দে (কাঁধে) উঠবে? এটা হাস্যকর…’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কাকে নিয়ে আন্দোলন করবেন? জনগণকে নিয়ে, জনগণ কেন আসবে? জনগণ আসার মতো কোনো অবজেক্টিভ কন্ডিশন বাংলাদেশের নেই। রোজার ঈদ চলে গেল…রোজার ঈদ তারপর কোরবানি ঈদ, এখন তো আর ঈদ নেই। আরেক ঈদ আসবে ২০২১ সালে, তখন আন্দোলনের চিন্তা ভাবনা করতে পারেন। তার আগে আর আন্দোলনের কোনো ভবিষ্যত নেই। মরা গাঙ্গে জোয়ার আসে না। ১০ বছরে পারেন নাই, আর এক মাসে আন্দোলন।’

তিনি বলেন, ‘মওদুদ সাহেব তো অাগস্ট থেকে বলছেন এক মাসে চেহারা পরিবর্তন করে ফেলবেন! কি চেহারা পরিবর্তন করবেন? অাগস্ট গেল এক মাস, সেপ্টেম্বর গেল এক মাস; এখন আবার অক্টোবর শেষ মাস।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ক্ষমতার পরিবর্তন বলছেন তো, নির্বাচন ছাড়া এদেশে ক্ষমতার পরিবর্তন হবে না, ইনশাল্লাহ্। স্বপ্ন দেখতে পারেন, ক্ষমতা হারিয়েছেন। ময়ূর সিংহাসনের ওই স্বপ্ন আবারও দেখতে পারেন। অক্টোবর গেলে টের পাবেন রঙিন খোয়াব কর্পূরের মতো উড়ে যাবে।

আওয়ামী লীগের শিল্প বাণিজ্য বিষয়ক উপ-কমিটি আয়োজিত সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন দলটির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এবং প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, শিল্প বাণিজ্যবিষয়ক উপ-কমিটির সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, উপ-কমিটির সদস্য সচিব ও আওয়ামী লীগের শিল্প বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সাত্তার, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন প্রমুখ।