প্রচ্ছদ শিক্ষাঙ্গন জাবি শিক্ষকদের সংশ্লিষ্টতায় ভর্তি কোচিং, জালিয়াতির আশঙ্কা

জাবি শিক্ষকদের সংশ্লিষ্টতায় ভর্তি কোচিং, জালিয়াতির আশঙ্কা

রোস্তম আলী, জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) চারুকলা বিভাগে ভর্তির জন্য বিভাগের শিক্ষকদের সংশ্লিষ্টতায় শিক্ষার্থীরা কর্মশালার নামে কোচিং পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে। ফলে এই বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে জালিয়াতির আশঙ্কা করছেন অবিভাবকেরা।
জানা যায়, বিগত কয়েক বছর ধরে জাবির চারুকলা বিভাগে ভর্তিচ্ছুদের কর্মশালা করায় শিক্ষার্থীরা। চারুকলাবিভাগে ভর্তির ব্যবহারিক পরীক্ষায় উপযোগী করার জন্য আট থেকে দশ হাজার টাকার বিনিময়ে ভর্তিচ্ছুদের এ কর্মশালা করানো হয়। গত ২৯ অক্টোবর ড্রয়িং শিখতে এসে এক ভর্তিচ্ছু যৌন হয়রানির শিকার হলে কর্মশালা নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন মহলে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে বিভাগটির সভাপতির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা বিভাগের স্নাতক ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের একটি কমিটি করে দিয়েছি। তারা এ কর্মশালা করাতে পারবে।’
বিভাগীয় শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে এমন একটি কোচিং পরিচালনার বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নিচ্ছেন না সংশ্লিষ্টরা। যেহেতু ভর্তি পরীক্ষার ব্যবহারিক পর্বে চারুকলা বিভাগের শিক্ষকরাই পরীক্ষক হিসেবে থাকেন তাই ভর্র্তির ক্ষেত্রে অনিয়ম হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। এর ফলে ভর্তি জালিয়াতি ও ভর্তি বাণিজ্যের মতো ঘটনাও ঘটতে পারে।
জাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থী ঐক্যমঞ্চের সমন্বয়ক জহির রায়হান বলেন, ‘শিক্ষকদের পৃষ্টপোষকতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে এমন কার্যক্রম পরিচালনার কোন নিয়ম নেই। যেসব শিক্ষকরা পরীক্ষকের দায়িত্বে থাকবেন তাদের পৃষ্টপোষকতায় যদি কোচিং পরিচালিত হয় তাহলে সেখানে জালিয়াতির সম্ভবনা থাকে। এ বিষয়ে আমরা প্রশাসনের সর্বোচ্চ হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
সূত্র জানায়, এ বছর চারুকলাবিভাগের স্নাতক ৪র্থ বর্ষের ২৩ জন শিক্ষার্থীর কাছে শতাধিক ভর্তিচ্ছু এ কর্মশালা করছেন। প্রত্যেকের কাছ থেকে কর্মশালা ফি বাবদ ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চারুকলা বিভাগের এক শিক্ষার্থী জানান, ‘স্নাতক ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা কর্মশালাটি পরিচালনা করছে। প্রতিবছরই ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা এ কর্মশালাটি পরিচালনা করে থাকে। এ বছরে তাদের কর্মশালার আয় থেকে তারা বিভাগের ভবনের রং করার জন্য ২০ হাজার টাকা বিভাগকে দিবে বলে জেনেছি।’
এ বিষয়ে জানতে চারুকলাবিভাগের স্নাতক ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘এটা কোন কোচিং নয়। আমরা কর্মশালা করাচ্ছি। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে কর্মশালা করার কোন বাধা-নিষেধ নেই। যে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগ আছে সব বিশ্ববিদ্যালয়েই এ কর্মশালা আয়োজন করা হয়।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব আবু হাসান বলেন, ‘আমরা এ বিষয়টি জানি না। এ ব্যাপারে আমরা বিভাগের সভাপতির সাথে কথা বলবো। প্রয়োজনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
চারুকলাবিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক এম এম ময়েজ উদ্দিন বিভাগের সাথে সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমরা কোন কমিটি গঠন করে দেইনি। তবে বিভাগের শৃংখলার স্বার্থে তাদেরকে কমিটি গঠন করতে বলেছি।’