প্রচ্ছদ জাতীয় চীনা নাগরিক হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন, প্রধান ২ আসামি গ্রেফতার

চীনা নাগরিক হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন, প্রধান ২ আসামি গ্রেফতার

বিডি রিপোর্ট টোয়েন্টিফোর ডটকম :

পিরোজপুরে কচা নদীর ওপর নির্মিতব্য ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুতে নিয়োজিত চীনা নাগরিক (শার্টারম্যান) প্যান ইউয়ানজুন (৫৮) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন এবং প্রধান দুই আসামি গ্রেফতার হবার পরে মঙ্গলবার পিরোজপুর পুলিশ সুপারের হল রুমে এক প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ব্রিফিংয়ে বরিশাল রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) শফিকুল ইসলাম (বিপিএম-পিপিএম) উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় উপ-মহাপরিদর্শক সাংবাদিকদের উদ্দেশে প্রকৃত হত্যা রহস্যের ঘটনা উন্মোচন করেন। হত্যাকাণ্ডের ১৩ দিন পর ডিআইজি এদিন প্রথম সাংবাদিকদের সামনে এ বিষয় বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে এ সময় পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা আজাদ হোসেন (প্রশাসন ও তদন্ত), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী শাহনেওয়াজ ও সদর সার্কেল খায়রুল হাসানসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

গ্রেফতারকৃত প্রধান দুই আসামি হল- যথাক্রমে পিরোজপুর পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সাব্বির আহমেদ সেখ (২০) স্থানীয় কুমিরমারা এলাকা থেকে এবং অপর স্থানীয় বাসিন্দা হোসেন সেখকে (১৯) একই ওয়ার্ডের মরিচাল এলাকা থেকে ৮ অক্টোবর গভীর রাতে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর আগে সন্দিগ্ধ আরও দুই আসামি যথাক্রমে সিরাজ সেখ (৩০) ও মাসুদ রানাকে (২৮) পৌরসভার কুমারখালী এলাকা থেকে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

মহাপুলিশ পরিদর্শক আরও জানান, নিয়োজিত শ্রমিক ও প্রধান আসামি হোসেন সেখকে হত্যাকাণ্ডের কিছুদিন আগে তাকে চাকরিচ্যুত ও তার বেতন বন্ধ করে দেয়া হয়। এ ঘটনায় সে ক্রুদ্ধ হয় এবং প্রতিসিংহার বাসনা জাগে। এ থেকেও হোসেন সেখ প্রতিশোধ ও ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা নিতে পারে বলে মনে করছেন পুলিশ। পরে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর মামলার প্রধান দুই আসামির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী এ সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ের ১ লাখ, ৮৯ হাজার টাকা বিছানার খাটের নিচে তক্তায় লুকানো ও মুরগির খাঁচার ভেতর পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় একটি এনড্রয়েড মোবাইল ফোন সেট জব্দ করে পুলিশ।

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দেশীয় ছুরির ভাঙ্গা অংশ এবং বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা টাকার নোট জব্দ করে।

পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খান জানান, আসামিদের গ্রেফতারের পর আদালতের মাধ্যমে ৭ দিনের রিমান্ড শেষে (জিজ্ঞাসাবাদ) তাদেরকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর চীনা নাগরিক ‘প্যান ইউয়ানজুন’ সন্ধ্যায় প্রকল্প এলাকা থেকে শ্রমিকদের বেতন নিয়ে যাবার পথে ওই দুই শ্রমিকের ছুরিকাঘাতে জখম হবার হন ওই নাগরিক। পরে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আনা হলে একই দিন রাতে রক্তক্ষরণে তিনি নিহত হন বলে জানায় চিকিৎসকরা। তবে প্রকল্প এলাকায় পূর্ব থেকেই পুলিশের নিরাপত্তামূলক কোন ব্যবস্থা প্রকল্পটিতে (পিপি) না থাকায় এটিও একটি দুর্ঘটনার কারণ বলে মনে করছেন অনেকেই।