প্রচ্ছদ অর্থনীতি কোভিড ১৯ আতঙ্ক :  সংকটে রিয়েল এস্টেটের ভবিষ্যৎ

কোভিড ১৯ আতঙ্ক :  সংকটে রিয়েল এস্টেটের ভবিষ্যৎ

এস কে নাসির হোসেন : 

চীনের উহান প্রদেশে সূত্রপাত হওয়া করোনাভাইরাস এখন শুধুমাত্র চীনের মাথাব্যাথা নয় বরং তা মহামারীতে রূপ নিয়ে থমকে দিয়েছে পুরো বিশ্বকে।

ইতালি বা চীনের মতো মারাত্মক না হলেও বাংলাদেশের পরিস্থিতিও কম জটিল নয়। এই সঙ্কটময় সময়ে দেশবাসীকে এই রোগের বিস্তার রোধে কিছু নিয়ম কঠোরভাবে পালন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেমন- জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে না যাওয়া, সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা, অধিকাংশ রেস্টুরেন্ট ও সকল মুভি থিয়েটার বন্ধ রাখা এবং অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ ইত্যাদি।

এই পদক্ষেপগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে। প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম হ্রাস পেয়েছে। ভবিষ্যৎ দূর্যোগের কথা ভেবে অতিরিক্ত ব্যয় হ্রাসের আশায় লোকজন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে মজুদ করে রাখছে।

এরকম পরিস্থিতি কতদিন চলবে তা কেউ জানে না। বিশেষজ্ঞদের মতে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক মন্দার সম্মুখীন হতে পারে। বাস্তবতা যতই কঠিন হোক না কেন, আশা করা যায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হইয়ে উঠবে এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলতে থাকলে এই মন্দা দ্রুত কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।

করোনাভাইরাস পরবর্তী সময়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে সময় নিবে এমন খাতগুলোর একটি হলো রিয়েল এস্টেট। সঙ্কটের এই সময়ে ধারনা করা হচ্ছে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার সাথে সাথে মানুষ স্বাভাবিক যে ক্রেতারা আপাতত বড় ধরণের বিনিয়োগ যেমন- প্লট বা অ্যাপার্টমেন্ট ক্রয়ে আগ্রহী হবেন না। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে যতদিন পর্যন্ত এই মহামারীর প্রকোপ পুরোপুরি না থামছে ততদিন পর্যন্ত রিয়েল এস্টেট খাত হয়ত স্থবিরই হয়ে থাকবে।

অন্যদিকে যদি পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় তবে ভাড়াটিয়াদের বাসা বদলানোর হার বেড়ে যাবে। কারণ ব্যবসায়িক পরিস্থিতি কখন স্বাভাবিক হবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। সুতরাং অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের ব্যয় কমাতে কর্মী ছাটাই করবে। পরিস্থিতি যদি এতটাই খারাপ হয় তবে প্রচুর লোক তাদের ব্যয় কমাতে অপেক্ষাকৃত কম ভাড়ার বাসা খুঁজে নিবে।

প্রপার্টি সল্যুশন প্রভাইডার বিপ্রপার্টির ডাটাবেস অনুযায়ী বাড়ি ভাড়া নেয়ার ক্ষেত্রে ঢাকাবাসী ১০০০-১২০০ বর্গফুটের অ্যাপার্টমেন্ট বেশি পছন্দ করে। মিরপুর, বনশ্রী, বাড্ডা, খিলগাঁও এবং রামপুরায় এ ধরণের অ্যাপার্টমেন্টের সংখ্যাই বেশি। এসব এলাকায় বাড়ি ভাড়াও ঢাকার অন্যান্য এলাকার তুলনায় বেশ কম। সুতরাং মোটামুটি নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে উক্ত এলাকাগুলোতে বাড়ি ভাড়া নেয়ার পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।

আমরা বর্তমানে চরম আতঙ্কের মাঝে অনিশ্চিত জীবনযাপন করছি। এ পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে যাবে এটাই কাম্য। নইলে শুধুমাত্র রিয়েল এস্টেটই না বরং অন্যান্য খাতগুলোও ক্ষতিগ্রস্থ হবে চরমভাবে।