প্রচ্ছদ রাজনীতি কাদেরের বক্তব্য মানবাধিকারকে ঠাট্টা : বিএনপি

কাদেরের বক্তব্য মানবাধিকারকে ঠাট্টা : বিএনপি

‘এ ধরনের মহৎ অভিযানে দু একটি ভুল হতেই পারে’ বলে মাদকবিরোধী অভিযান সম্পর্কে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যকে মানবাধিকারকে ঠাট্টা করার শামিল বলে মনে করছে বিএনপি।

ওই বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে দলটি বলছে, ‘মানুষের দুঃখ কষ্টকে নিয়ে এমন মন্তব্য তারাই করতে পারে, যারা অবৈধ ক্ষমতায় মশগুল থেকে মানবিক গুনাবলী হারিয়ে ফেলে।’

রোববার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সমেম্মলনে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই প্রসঙ্গে কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘কাউন্সিলর একরাম হত্যার অডিও শুনে, তার স্ত্রী ও মেয়েদের কান্না শুনে শুধু বাংলাদেশের মানুষের বিবেকই নয়, বিশ্ববিবেককেও নাড়িয়ে দিয়েছে। শুধু একরাম হত্যাই নয় এখন পর্যন্ত মাদকবিরোধী অভিযানের নামে প্রায় ১৩০ জনকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তারা কে কতটুকু অপরাধের সাথে জড়িত সে সম্পর্কে জনগণকে অন্ধকারে রেখে বিনা বিচারে হত্যার পেছনে সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে।’

ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘হত্যা অভিযান চালানো হলেও চেইনের শীর্ষে বসে থাকা অমিত ক্ষমতাধর গডফাদার’রা বসে আছে কী করে? প্রশ্ন হচ্ছে সরবরাহের উৎস পথ আঁটকে যাচ্ছে না কেন? তাহলে কারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মাদক ঢুকতে সহায়তা করছে? রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া কী উৎসমুখ খোলা থাকে?’

‘এই উৎসমুখগুলো নিয়ন্ত্রণ করেন বদিদের মতো এমপি’রা-প্রশাসনের সহায়তায়। বদিসহ ক্ষমতাসীনদের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা কীভাবে এতগুলো গোয়েন্দা সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে দেশ ছেড়ে গেল জাতি তা জানতে চায়। সরকারই গডফাদারদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করছে’, বলেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।

সরকার একটি এতিম জেনারেশন তৈরি করতে চায় মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘বেআইনি হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সরকার তাদের টিকে থাকার সমাধান খোঁজে। কিন্তু তারা ভুলে গেছে অন্যায়ের প্রতিশোধ প্রকৃতি নিজেই নেয়। একটি বেআইনি হত্যা আরো অনেক হত্যার বিস্তৃতি ঘটায়।’

দেশে মাদকের বিস্তারের জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘তাদের সহায়তাকারী হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্য। তাদের এ সাড়ে নয় বছরে মাদকে ছেয়ে গেছে দেশ। প্রতিবেশী দেশ যথা ভারত থেকে ফেনসিডিল ও মিয়ানমার থেকে ইয়াবা আমদানিকে মদদ দিয়ে যুবসমাজকে ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে। কথায় আছে কোনো জাতিকে ধ্বংস করতে হলে দুটি জিনিস ধ্বংস করতে হয়-এক হলো শিক্ষা, দুই হলো যুবসমাজ। বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার এ দুটিই কাজই করতে পেরেছে দক্ষতার সাথে।’

বিএনপির ঈদের পর আন্দোলন দমাতে সরকার মাদক নির্মূল অভিযান চালাচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘মাদকবিরোধী অভিযানে ব্যাপক হত্যাকাণ্ড ঈদোত্তর আন্দোলন দমনে একটি টেস্ট কেস। তবে জনগণ এই নিষ্ঠুর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নেতা-কর্মীরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য মাঠে নামবে।’

ঈদের আগে খালেদার মুক্তি চায় বিএনপি
কারান্তরীণ খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে ‘কানামাছি না খেলে’ ঈদের আগে দ্রুত তাকে মুক্তি দেওয়ার দাবি করেন রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, ‘অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন, মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতরের পূর্বে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় বাংলাদেশের জনগণ বেগম খালেদা জিয়ার ওপর যে জুলুম ও নিষ্ঠুর নির্যাতন করা হচ্ছে তার জবাব দিতে প্রস্তুত হয়ে আছে।’

বিএনপি নেত্রীর ‘জামিন আটকে রেখে’ সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে দাবি করে বিষয়টিকে ‘শুধুমাত্র একজনের প্রতিহিংসার প্রতিফলন’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।