প্রচ্ছদ খেলাধুলা কাঠমান্ডুতে এসএ গেমসের উদ্বোধন আজ

কাঠমান্ডুতে এসএ গেমসের উদ্বোধন আজ

সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসের পর্দা ওঠছে আজ কাঠমান্ডুতে। নেপালে অনুষ্ঠেয় এশিয়ার অলিম্পিক খ্যাত এসএ গেমসের ১৩তম আসরের ২৭টি ডিসিপ্লিনের মধ্যে ২৫টিতে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ। বিকেল সোয়া পাঁচটায় (বাংলাদেশ সময়) কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে শুরু হবে গেমসের উদ্বোধন। ১৯৮৪ সালে দক্ষিণ এশিয়ান গেমসের যাত্রা শুরু হয়েছিল এই কাঠমান্ডু থেকেই। ২০ বছর পর আবার তৃতীয় বারের মতো স্বাগতিক হচ্ছে নেপাল। এবার রাজধানী কাঠমান্ডুর সঙ্গে রয়েছে পোখরা শহরও। ১৯৮৪ ও ’৯৯ গেমসের চেয়ে এবারের আসরটা একটু ভিন্ন। ২০১৫ সালে প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্পে ব্যাকপ ক্ষয়ক্ষতি হয় নেপালে। সেই ধাক্কা কাটিয়ে গেমস আয়োজন বেশ কষ্টসাধ্যই ছিল। অনেক ক্রীড়া স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সেই ভূমিকম্পে।

গেমসের জন্য অনেক ক্রীড়া স্থাপনায় সংস্কার করতে হয়েছে। এখনো খানিকটা অগোছালো, সমন্বয়হীনতা রয়েছে। এরপরও ২০১৫ সালের ভূমিকম্প ভুলে দশরথে উৎসবে মাতয়ে চায় নেপালীরা। নেপাল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জীবন শ্রেষ্ঠার মন্তব্য,’১০ ডিসেম্বরের পর সবাই যেন বলে ভালো গেমস উপহার দিয়েছে নেপাল সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।’ এবারের আয়োজনে আগের দুই আসরকেও ছাপিয়ে যেতে চায় কাঠমান্ডু। তাইতো তিনবার উদ্বোধনের সময় বদলেছে তারা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগের দিনও কাজ হয়েছে দশরথ স্টেডিয়ামে বাইরের অংশে। কিন্তু এতেও বাধা পড়েনি রঙিন উদ্বোধনে। স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে শুরু হবে গেমসের উদ্বোধন। নেপালে ঘড়ির কাঁটা যখন পাঁচটা ছুঁই ছুঁই, ঠিক তখনি দশরথ রঙ্গশালায় প্রবেশ করবেন নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী বান্দারি।

এরপরই আসবেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। এরপরেই হবে তিন মিনিটের লেজার শো। সাত দেশের ক্রীড়াবিদদের অংশগ্রহণে মার্চপাস্ট পর্যবেক্ষণ করবেন নেপালের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী। নেপাল অলিম্পিক কমিটির প্রেসিডেন্ট জীবন রাম শ্রেষ্ঠা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরুর ঘোষণা দেবেন। উদ্বোধনী ভাষণ দেবেন ন্যাশনাল স্পোর্টস কাউন্সিলের সদস্য সচিব রমেশ কুমার সিলওয়াল। উপস্থিত থাকবেন ক্রীড়া মন্ত্রী জগত বাহাদুর বিশ্বকর্তা সুনার। নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী বান্দারীর উদ্বোধনী ভাষণের পরেই সাবেক চার তারকা অ্যাথলেট মশাল ব্যাটন নিয়ে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করবেন। শেষে মশাল প্রজ্বলন করে এসএ গেমসে আলো জ্বালাবেন চারবারের সোনাজয়ী সাবেক তায়কোয়ান্ডোকা দীপক বিষ্ঠা। ক্রীড়াবিদদের পক্ষ থেকে শপথ বাক্য পাঠ করবেন তারকা ক্রিকেটার পরেশ খড়কা এবং কোচদের পক্ষ থেকে রেফারি দীপক থাপা। এরপরেই শুরু হবে মিউজিক্যাল পারফরম্যান্স। রঙিন আয়োজনে থাকবে ওয়েলকাম নৃত্য। ১২ মিনিট ধরে নেপালের সেনাবাহিনী, আর্মড পুলিশ ফোর্সেস ও নেপাল পুলিশের এক হাজার চৌকস সেনারা সাত দেশের নামের সঙ্গে মাঠেই সংশ্লিষ্ট দেশের মানচিত্র ফুটিয়ে তুলবেন নিজেরা। নেপালের ঐতিহ্যগত নৃত্যও থাকবে।

যাকে বলা হবে মাসকেলেস থিনিক। এই পর্বে নেপালে ঐতিহ্যগত নৃত্য থারু ডান্স, লামা ডান্স, নাগার ডান্স ও লাখে ডান্স পরিবেশন করবেন আদিবাসীরা। হিমালয় দুহিতার সেরা গায়ক দীপক বাজরাচারিয়া একক সঙ্গীত পরিবেশন করবেন। সবশেষে থাকবে আতশবাজি। নেপালের ক্রীড়াঙ্গনের প্রায় সব অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করে থাকেন সঞ্জীব শিল্পকার। এবারও আয়োজনের উপস্থাপনায় বড় অংশে থাকবেন তিনি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা এসএ গেমসের রঙিন উদ্বোধনের চেষ্টা করছি। তিন বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে দিনের পর দিন আয়োজন সাজাতে হয়েছে। গত কয়েকদিনে শত শত ছাত্র ছাত্রীদের পারফরম্যান্সের ওপর নজর রাখতে হয়েছে। নেপালের সংস্কৃতি ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরা হবে।’ এবারের গেমসে ২৬টি ডিসিপ্লিনে ১১৩৫টি পদকের জন্য লড়বেন সাত দেশের দশ হাজারের বেশি ক্রীড়াবিদ। যার মধ্যে ২৫টি ডিসিপ্লিনে বাংলাদেশের ৪৬২ জন ক্রীড়াবিদ। গেমসে স্বর্ণ পদকের সংখ্যা ছিল ৩২৪টি।

তবে প্যারাগ্লাইডিং বাদ পড়ায় এখন দাঁড়িয়েছে ৩১৭ তে। অংশগ্রহণকারী দল না পাওয়ায় গেমস থেকে বাদ দেয়া হয়েছে প্যারাগ্লাইডিং। এবারই প্রথমবারের মতো অন্তর্ভূক্ত হয়েছে মেয়েদের ক্রিকেট। প্রথম অংশ নিয়েছে বাংলাদেশের নারী ভলিবল দলও। ইতিমধ্যে টানা দুই হাওে তারা বিদায় নিয়েছে। নেপালে ১১টি ডিসিপ্লিনে অংশ নিচ্ছে না ভারত। ক্রিকেট, ফুটবল, আরচারিতে ভারত না থাকায় বাংলাদেশের স্বর্ণ বেশি জয়ের সম্ভাবনা বাড়বে।

এক নজরে এবারের গেমস
সময়সূচি ১-১০ ডিসেম্বর
ডিসিপ্লিন ২৬টি
বাংলাদেশ অংশগ্রহণ ২৫টি (ট্রায়াথলন বাদে)
মোট পদক ১১৩৫
স্বর্ণ পদক ৩১৭
মোট অ্যাথলেট ১০ হাজার+