প্রচ্ছদ আইন আদালত কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় সেই ডাক্তারের বিরুদ্ধে চার্জশিট

কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় সেই ডাক্তারের বিরুদ্ধে চার্জশিট

রাজধানীতে কলেজছাত্রীকে চিকিৎসার নামে ধর্ষণের মামলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন ও চর্ম বিভাগের সেই ডাক্তার মো. রিয়াদ সিদ্দিকী বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। তিনি বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত থাকায় একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানের বরাবর প্রতিবেদনও পাঠিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

মঙ্গলবার ঢাকার ৫নং নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বেগম সামছুন্নাহার চার্জশিট গ্রহণের জন্য আগামী ১৩ জুন দিন ধার্য করেছেন।

এর আগে, গত ২৩ মে ঢাকা মহানগর হাকিম ফাহাদ বিন আমিন চৌধুরীর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের নারী সহায়তা ও তদন্ত বিভাগের পরিদর্শক রোজিনা বেগম। পলাতক থাকায় একই সঙ্গে ডা. রিয়াদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদন করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।

চার্জশিটে তিনি বলেছেন, সার্বিক তদন্তে, সাক্ষ্য প্রমাণে, এমসি পর্যালোচনায়, ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় এবং পরিবেশ বিবেচনায় আসামি ডা. রিয়াদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া মেডিকেল রিপোর্টে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে জোরপূর্বক ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।

মামলার এজহার থেকে জানা যায়, ঘটনার শিকার তরুণীর বাড়ি ভোলায়। গত বছরের ৬ অক্টোবর দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী মো. রিয়াদ সিদ্দিকীর কাছে চিকিৎসা নিতে গেলে ওই ডাক্তার তাকে বিবস্ত্র করে স্পর্শকাতর জায়গাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মলম লাগায়। এ সময় ছাত্রী বাধা দিলে ডাক্তার তাকে বাধা দেওয়ার জন্য তাকে শাসায় এবং কাউকে না জানানোর কথা। মেয়েটি লোকলজ্জার ভয়ে বিষয়টা কাউকে জানায়নি। পরবর্তী তারিখে চিকিৎসা নিতে গেলে ওই ডাক্তার প্রথমে তাকে বিবস্ত্র করে মলম লাগায়। এরপর ধর্ষণ করে। সেই দৃশ্য ভিডিও করে রাখা হয়েছে জানিয়ে ওই চিকিৎসক তখন মেয়েটিকে হুমকি দেয়, ঘটনা কাউকে বললে ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়া হবে। ফলে ভয়ে মেয়েটি কাউকেই বিষয়টি জানায়নি।

পরবর্তী মেয়ের মরণব্যাধী রোগ হয়েছে জানিয়ে চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড বসানো হবে বলে পরিবারকে জানান ডা. রিয়াদ সিদ্দিকী। সেই কথা মতো মেয়েকে নিয়ে গত ৩১ ডিসেম্বর কামাল হোসেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজির হন। তখন পরিবারের লোকজনদের অপেক্ষা করতে বলে ওই ডাক্তার মেয়েটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বি-ব্লকের চতুর্থ তলার একটি নির্জন রুমে নিয়ে ধর্ষণ করতে গেলে ওই ছাত্রী কান্নাকাটি ও চিৎকার করে। এ সময় ওই ডাক্তার তাকে ওপর থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেয় এবং জোরপূর্বক আবারও ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।

এ ঘটনা নির্যাতিতার বাবা কামাল হোসেন বাদী হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ (সংশোধনী-২০০৩) এর ৯ (১) ধারায় মামলা করেন।