প্রচ্ছদ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি করোনা রোগীদের সুস্থ করতে বাংলাদেশেও চালু হলো প্লাজমা থেরাপি

করোনা রোগীদের সুস্থ করতে বাংলাদেশেও চালু হলো প্লাজমা থেরাপি

বিডি রিপোর্ট টোয়েন্টিফোর ডটকম :

কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের সুস্থ করতে বাংলাদেশেও শুরু হয়েছে প্লাজমা থেরাপি চিকিৎসা। এর আগে চীনের উহানে এ ধরনের চিকিৎসা দিয়ে সফলতা এসেছিল। চীনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতে প্লাজমা থেরাপির অনুমোদন দেয়া হয়েছে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের সুস্থ করার জন্য। বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করেছে এভার কেয়ার হাসপাতাল (সাবেক এপোলো হাসপাতাল)।

বুধবার এভার কেয়ার হাসপাতাল থেকে জানানো হয়েছে যে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করোনা আক্রান্ত একজন রোগীর দেহে প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করেছে মঙ্গলবার (৫ মে)। আক্রান্ত ব্যক্তিকে এ থেরাপি দেয়ার পর তিনি অনেকটাই সুস্থ আছেন। এই চিকিৎসাটিকে প্লাজমা কনভালট্যান্ট থেরাপিও বলা হয়ে থাকে।

এর আগে ২০১৪ সাল থেকে ইবোলা আক্রান্তদের এভাবে সুস্থ করে তোলা হয়। সেই একই পদ্ধতি কোভিড-১৯ আক্রান্তদের জন্য প্রথম প্রয়োগ করা হয় চীনের হোবেই প্রদেশের উহানে। ওই উহান থেকেই প্রথম করোনা ভাইরাস প্রথম ছড়িয়ে পড়ে।

প্লাজমা থেরাপি হলো : কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীরা সুস্থ হয়ে গেলে তার শরীর ভাইরাস মুক্ত হয়ে যায়। ফলে সুস্থ হওয়া ওই ব্যক্তির দেহে যথেষ্ট পরিমাণে অ্যান্টিবডি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। এ ধরনের রোগীর শরীর থেকে পরিমাণ মতো প্লাজমা (রক্তের জলীয় সাদা অংশ) নিয়ে তা গুরুতর আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে প্রবেশ করিয়ে দেয়া হয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন প্লাজমা কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তে প্রবাহিত হতে থাকে এবং ধীরে ধীরে এই অ্যান্টিবডি করোনা ভাইরাসকে ধ্বংস করতে থাকে।

প্লাজমা সংগ্রহের আগে ওই ব্যক্তির দেহে এইচআইভি, হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসের উপস্থিতি আছে কি না তা পরীক্ষা করে নেয়া হয়। এসব ভাইরাস মুক্ত হলে আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে মেশিনের মাধ্যমে অ্যান্টিবডিযুক্ত প্লাজমা দেয়া হয়। ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালই বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করলো।

এভারকেয়ার হাসপাতালের হেমাটোলজি অ্যান্ড স্টেম সেল ট্রান্সপ্লান্ট বিভাগের কো-অর্ডিনেটর ও সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা: আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ এ বিষয়ে বলেন, ‘কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত সিরিয়াস রোগীদের জন্য এখন অন্যতম কার্যকরী একটি চিকিৎসা হচ্ছে প্লাজমা কনভালসেন্ট থেরাপি।’

তিনি বলেন, ‘কোভিড আক্রান্ত রোগীদের ৯৭ থেকে ৯৮ শতাংশ সুস্থ হয়ে যায় তাদের শরীরে ভাইরাস প্রতিরোধক অ্যান্টিবডি তৈরি হয় বলে। এ ধরনের সুস্থ রোগীর দেহ থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করে গুরুতর আক্রান্ত অন্য রোগীর দেহে সঞ্চালনের মাধ্যমে তাদের কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীকে সারিয়ে তোলা সম্ভব হচ্ছে। আমরা বাংলাদেশে এটা প্রথমবারের মতো চালু করেছি। আশা করছি বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও এ চিকিৎসাটা কাজ করবে।