প্রচ্ছদ শিক্ষাঙ্গন করোনা ভাইরাসের কারণে ভালো নেই শিক্ষার্থীরা, উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা

করোনা ভাইরাসের কারণে ভালো নেই শিক্ষার্থীরা, উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা

রেজওয়ানা জেসমিন রিনি ও রুবাইয়াৎ জেসমিন রোদেলা দুই জনেই শিক্ষার্থী। একজন এস.এস.সি ও আরেকজন এইচ.এস.সি পরীক্ষার্থী ২০২১ সালের। দুই জনেই স্কুল-কলেজ আর কোচিংয়ে পড়াশুনার কারণে প্রায় সারাটা দিন ঘরের বাইরে থাকেন। সাধারন ছুটির কবলে পড়ে অনান্যদের মতো তাঁরা দুজনেই ঘরে থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে উঠেছে। তারাজানান, স্কুল বন্ধ থাকায় কারো সাথে দেখা বা কথা বলা যাচ্ছে। পড়াশুনার বিষয়েও কারো সাথে মত বিনিময় করতে পারছি না। সেই কারনে আমাদের পড়াশুনা ভাল হচ্ছে না। সারাক্ষণ ভয় কাজ করছে।

আদমদীঘি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে স্কুল, কোচিং ও প্রাইভেট সেন্টারগুলি তালাবদ্ধ। ফলে ঐ এলাকাগুলি এখন সুনসান নিরবতা। নয়ন হোসেন, বাচ্চুমিয়া, আনোয়ার হোসেনসহ কয়েকজন অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে,বাসায় তাঁদের সন্তানরা হাঁফিয়ে উঠেছে। কেউ কেউ বাইরে আসতে চাচ্ছে, কেউ কেউ কান্নাকাটি করছে। বাসা-বাড়িতে ছোট্র পরিসরে অনেক শিক্ষার্থীরা অস্থির হয়ে
পড়েছে। অভিভাবকরা আরোও জানান, স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় টিভিতে করোনা বিষয়ে নানা খবর শিশু শিক্ষার্থীদের মনে নানা প্রভাব সৃষ্টি হচ্ছে। কেউ কেউ ভয় করছে। কেউ কেউঅসুস্থ হয়ে পড়ছে। অনেক শিক্ষার্থীরা বাইরে আসতে চাইছে। স্কুল-কলেজ বন্ধ হয়েযাওয়ায় তারা নিদিষ্ট সময়ে সিলেবাস শেষ করা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে। কোন কোনশিক্ষার্থী পড়াশুনার পাশাপাশি বাসায় ক্যারাম, লুডু খেলে অবসর সময় কাটাচ্ছে। কে কেউ অনান্য বিষয় পড়াশুনা করে সময় কাটাচ্ছে। নাসরিন সুলতানা মিতু নামে একজন অভিভাবক জানান, স্কুলে আজকাল ভাল পড়াশুনা হয় না, ফলে অনেকটা বাধ্য হয়ে আমাদের সন্তানদের প্রাইভেট, কোচিংয়ের উপর নির্ভর করতে হয়। কিন্তু এখন তো করোনা ভাইরাসের
কারনে স্কুল-কলেজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওদের নিদিষ্ট সময়ে সিলেবাস শেষ হওয়া নিয়ে আমরা
চিন্তিত। রোকনুজ্জামান রুকু নামে আরো একজন অভিভাবক জানান, আমাদের দেশ ২৬/২৭টি টিভি চ্যানেল। মাত্র ১টি চ্যানেলে কয়েকদিন আগে থেকে শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান প্রচার করছে।

সবগুলি চ্যানেল যদি শিক্ষা মূলক অনুষ্ঠান প্রচার করতো তাহলে দেশের এই ক্লান্তিলগ্নে আমাদের সন্তানদের উপকার হতো। আমাদের সন্তানদের শিক্ষার ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা খুবই চিন্তিত।এ ব্যাপারে আদমদীঘি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শহিদুল্লাহ দেওয়ান বলেন, এই সংকটকালিন সময়ে সন্তানদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব বেড়ে গেছে। প্রতিদিন বিকেলে বাসায় ছাদে হোক বা কাছে কোন নির্জন স্থানে এক ঘন্টার মতো তাদের মখে মাস্ক পড়ে ঘুরে আনা ভাল। বৃটেন এই নিয়ম চালু করেছে। আর এই সময়ে শিক্ষার্থীদের ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ানো দরকার। আর মানসিক দিক থেকে তারাযেন ভাল থাকে সে জন্য অভিভাবকদের তাদের সাহস যুগিয়ে যেতে হবে। উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাসের কারণে সারাদেশে ২৬ মার্চ থেকে সরকারিভাবে ছুটি ঘোষনা করা হয়েছে। এ ছাড়াও ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি।