প্রচ্ছদ লাইফস্টাইল করোনা কোয়ারেন্টিন : কলকাতার হোটেলে বড়লোকদের বড়লোকি !

করোনা কোয়ারেন্টিন : কলকাতার হোটেলে বড়লোকদের বড়লোকি !

করোনা ভাইরাস খুবই গণতান্ত্রিক। এভাবেই এর সংক্রমণকে ব্যাখ্যা করেছেন এক সমাজবিজ্ঞানী। তার মতে, এই ভাইরাসের সংক্রমণ বড় লোক বা গরীব কাউকেই রেহাই দিচ্ছে না। কিন্তু এরই মধ্যে বড়লোকরা তাদের অর্থের কৌলিন্যে সুখ ত্যাগ করতে রাজি নন। তাই কলকাতায় এখন খুব চালু হয়েছে একটি নতুন শব্দ-বন্ধ। বড়লোকদের বড় প্রিয় এই শব্দ-বন্ধটি। সেটা হলো পেইড কোয়োরেন্টিন। এতদিন আমরা শুনে এসেছিলাম, করোনা নিয়ে সন্দেহ হলেই কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।

সেজন্য দুটি ব্যবস্থার কথা চালু। সেটি হলো সরকারি ব্যবস্থাপনায় কোয়ারেন্টিন সেন্টারে বা হাসপাতালে কোয়ারেন্টিনে থাকা। অন্যটি হল হোম কোয়ারেন্টিন। অর্থাৎ বাড়িতে পর্যবেক্ষণে নিজেকে আটকে রাখা। দুটিই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। কিন্তু দক্ষিণ কলকাতার বনেদি এলাকা ভবানীপুরের মুকুল মজুমদার বা সল্টলেকের অভিময় বিশ্বাস কিম্বা লেকটাউনের হরিশ আগরওয়ালরা (সব ক্ষেত্রে নাম পরিবর্তিত) সন্দেহভাজনের তালিকায় থাকলেও সরকারি ব্যবস্থাপনায় কোয়ারেন্টিন সেন্টারে তারা থাকতে রাজি নন। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে সরকারি কোয়ারেন্টিন সেন্টারে কয়েকদিন থাকার পরই হাঁফিয়ে উঠেছেন। ফলে জোর করে উঠেছেন পাঁচতারা একটি হোটেলে। কলকাতার পাঁচ থেকে তিন তারা হোটেলগুলি বেশ কিছু ঘর কোয়ারেন্টিনের জন্য বরাদ্দ করেছে। এই সব ঘরে অবশ্য বিনামূল্যে থাকার কোনও ব্যবস্থা নেই। বরং হোটেলের এই সব কোয়ারেন্টিন রুমে থাকতে হলে বেশ বড় অঙ্ক গুনতে হচ্ছে। তিন তারকা থেকে ৫ তারকা পর্যন্ত পেইড কোয়ারেন্টিনে থাকার জন্য দৈনিক দিতে হচ্ছে ২২০০ থেকে ৭০০০ রুপি পর্যন্ত। অবশ্য যারা এসব হোটেলের অলিন্দে নিয়মিত যাতায়াত করেন তাদের কাছে খরচের অঙ্কটা আদৌ ধর্তব্যের মধ্যে নয়। তাছাড়া সুবিধা হিসেবে ঘরের মধ্যে সব ধরণের বিনোদনের ব্যবস্থা পাওয়া যাচ্ছে। পাওয়া যাচ্ছে ভাল খাবারও। একটাই শর্ত হোটেলের রুম থেকে বেরোতে দেয়া হচ্ছে না। বাইপাসের ধারের একটি পাঁচতারা হোটেলে এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আমরা কোয়ারেন্টিন প্যাকেজে ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ ও ডিনারের ব্যবস্থা রেখেছি। আর টিভিতে হট স্টার বা ইউটিউবের সুবিধা দেয়া হচ্ছে। হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব ইস্টার্ণ ইন্ডিয়া সূত্রে জানা গেছে, কলকাতার ৩২টি হোটেল ও গেস্ট হাউসের ৬৪৫টি রুম কোয়ারেন্টিনের জন্য রাখা হয়েছে। গত ২২ মার্চ পশ্চিমবঙ্গ সরকারই হোটেলগুলিকে পেইড কোয়ারেন্টিনের প্রস্তাবটা দিয়েছিল। আর এই মন্দার বাজারে হোটেল মালিকরা সেই প্রস্তাব লুফে নিয়েছেন। বর্তমানে অবশ্য ২০-২৫ জন পেইড কোয়ারেন্টিনের সুযোগ নিয়েছেন। কয়েকজন ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন পিরিয়ড শেষ করে চলেও গিয়েছেন। তবে সূত্রের খবর, যত সংক্রমণের সংখ্যা বাড়বে ততই এই ব্যবস্থার সুযোগ নেবেন বড়লোকদের বড় অংশ।