প্রচ্ছদ অর্থনীতি করোনায় পর্যটন শিল্পে ধস

করোনায় পর্যটন শিল্পে ধস

করোনায় পর্যটন শিল্পে ধস

বান্দরবান প্রতিনিধি:

 করোনাভাইরাসের কারণে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে বান্দরবানের

পর্যটন শিল্পসহ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়।

বলতে গেলে হাহাকার পরিস্থিতি বিরাজ করছে পর্যটন শহরে। এই পরিস্থিতিতে একদিকে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। অন্যদিনকে প্রতিদিন কোটি টাকা ওপর গুণতে হচ্ছে লোকসান। বিশাল অংকের রাজস্ব হারাচ্ছেন সরকার। সেইসঙ্গে হাজার হাজার শ্রমিক ও কর্মচারী এবং রকমারি বস্ত্র বিক্রেতারা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। ব্যবসায়ীরা মনে করেন করোনার কারণে বান্দরবানে সকল ব্যবসা-বাণিজ্য থমকে গেছে।

প্রশাসনের অঘোষিত লকডাউনে স্থানীয়রা ঘরবন্দি। গেল ১৯ মার্চ থেকে হোটেল-মোটেল, রেস্তোরাঁ এবং পরিবহন সেক্টরসহ সবই বন্ধ হয়ে গেছে। পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা পড়েছে করোনার কবলে। এতে করে বড় ধরনের প্রভাবে পড়ছে এই শিল্পে।  এই পরিস্থিতিতে অর্থনীতির ক্ষেত্রে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।

 এদিকে হলিডে ইন রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকির হোসেন আরটিভি অনলাইনকে বলেন, মৌসুমে ব্যবসায়ীরা ব্যাংক থেকে লাখ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে হোটেল-মোটেল ও গেস্টহাউজ নির্মাণ কাজ করে থাকেন এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন সাজে সাজিয়েছেন।

 হঠাৎ করোনায় এই ব্যবসাকে অর্থনৈতিকভাবে একটা বিপর্যয়ের মুখে ফেল দিয়েছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও দেশের অর্থনীতি বিবেচনায় তেমন একটা পর্যটকের দেখে মিলবে না বান্দরবানে। এতে ঋণের বোঝা নিয়ে থাকতে হবে ব্যবসায়ীদেরকে। তবে সরকার পার্বত্য জেলা বান্দরবানকে বিশেষ বিবেচেনায় ব্যবসায়ীদের ব্যাংকের ঋণের টাকা সুদ মওকুপ এবং সরকার প্রণোদনা প্যাকেজের একটি অংশ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের জন্য বিবেচনায় জরুরি মনে করেন।

বান্দরবান গার্ডেন সিটি হোটেল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.জাফর মনে করেন ব্যাংক ও গ্রাহকের সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে সুবিধাভোগকারী সংস্থাগুলো নিজ নিজ ব্যাংক থেকে  ঋণের ব্যবস্থা করলে পর্যটনশিল্প আবারও মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে।

টুরিস্ট পরিবহন শ্রমিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ কামাল বলেন, পর্যটক মৌসুমে প্রায় ছয়শত শ্রমিকের গাড়ির চাকা একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। টুরিস্ট গাড়িগুলো মালিক-শ্রমিকরা কষ্টে আছে। সাময়িকভাবে শ্রমিকেরা সরকারি ত্রাণসামগ্রী দিয়ে জীবন-যাপন করলেও ভবিষ্যতে শ্রমিকদের ভাগ্যে কি রয়েছে বলা যাচ্ছে না। তবে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও আশানুরূপ পর্যটক না আসার সম্ভব না বেশি। কারণ মানুষের মনে আতঙ্ক থেকেই যাবে।

 বান্দরবান হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি অমল কান্তি দাশ আরটিভি অনলাইনকে বলেন, করোনা প্রতিরোধের একমাত্র উপায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। আবশ্যক প্রয়োজনে কেউ ঘরের বাইরে এলে যাতে জনসাধারণ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল করে সেজন্য আমরা জনগণকে সচেতন করছি।

তিনি বলেন, বান্দরানে পর্যটনসহ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায় বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে।  করোনাভাইরাস বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ায় নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যার কারণে সকল ব্যবসায়ীরা আর্থিভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এটি স্বাভাবিক হলে সংকট কেটে উঠতে পারবে। তার আগে আমাদের জীবন বাঁচাতে হবে। তারপর ব্যবসা। সবাইকে সরকারি নির্দেশনা যথাযথ পালন করতে হবে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দাউদুল ইসলাম আরটিভি অনলাইনকে বলেন, করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে এবং বিভিন্ন দেশে অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। আমাদের দেশেও ইতোমধ্যে এই ভাইরাসটিতে অনেকেই আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। তবে মরণঘাতী এই ভাইরাস প্রতিরোধের একমাত্র উপায় হচ্ছে সচেতনতা।তাই দেশ ও জনগণের স্বার্থে সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হবে।