প্রচ্ছদ আজকের সেরা সংবাদ করোনাভাইরাস: টিভি দেখেই ঘরে পড়া যাবে তারাবির নামাজ !

করোনাভাইরাস: টিভি দেখেই ঘরে পড়া যাবে তারাবির নামাজ !

বিডি রিপোর্ট টোয়েন্টিফোর ডটকম :

মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে পবিত্র রমজান মাসে দেশের মানুষ মসজিদে জমায়েত করে তারাবির নামাজের বিকল্প হিসেবে টেলিভিশনে তারাবির নামাজ সরাসরি সম্প্রচারের প্রস্তাব করেছেন সাংসদ সাবের হোসেন চৌধুরী।

নিজের নির্বাচনী এলাকায় রমজান মাসে টেলিভিশনে তারাবির নামাজ সরাসরি সম্প্রচারের উদ্যোগ নিয়েছেন আওয়ামী লীগের এই নেতা, তার উদ্যোগের সমালোচনা করছেন অনেকে।সাংসদ সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, যেকোনও এক জায়গার নামাজ সম্প্রচার করা হলে, তার অডিওটি অনুসরণ করে খতম তারাবি পড়া যাবে।

যেমন বিশ্ব ইজতেমায় যখন আখেরি মোনাজাত হয় তখন টেলিভিশনে তা সরাসরি দেখে অনেকে সেই মোনাজাতে অংশ নেন। আবার আমরা যখন নামাজ পড়ি, বেশিরভাগই লোকই কিন্তু ইমামকে দেখতে পান না। তখন আমরা মাইকের শব্দ অনুসরণ করে নামাজ শেষ করি।

যেভাবে টেলিভিশনের মাধ্যমে পড়া যেতে পারে নামাজ
সাবের হোসেন চৌধুরী মনে করছেন, এটি একটি ধারণা এবং বিষয়টা নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিৎ।তিনি আরও বলেন, অনেকেই অন্তত রমজান মাসে তারাবির নামাজ পড়েন। তারাবি নামাজের পদ্ধতি অনুযায়ী – সুরার মাধ্যমে এবং খতম তারাবি – যাদের বাড়িতে কোনও হাফেজ নেই তাদের জন্য এটি খতম তারাবির বিকল্প হতে পারে। টেলিভিশনে সম্প্রচার হলে কারো টিভির স্ক্রিনে তাকানোর প্রয়োজন নেই। শুধু অডিও শুনলেই হবে।

তিনি উদাহরণ দিয়ে বলছিলেন, মক্কায় তারাবির নামাজের সময় অডিও সরাসরি সম্প্রচার হয়। অনেকেই সেটি অনুসরণ করে নামাজ পড়েন। দেশে প্রযুক্তির দিক দিয়ে এটি অসম্ভব কিছু নয়।তবে তিনি বলছেন, বিষয়টি ইসলামি শরীয়ত অনুযায়ী এবং ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী কতটুকু সঠিক, সেটা জানতে হবে। সেটা নিয়ে আরও চিন্তা হতে পারে, কথা হতে পারে।এছাড়া কিছু সমস্যা নিয়েও বলেছেন তিনি। যেমন হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেলে কি হবে। সে সম্পর্কে তিনি বলেন, যদি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয় তাহলে অডিও বিদ্যুতের উপর নির্ভরশীল থাকছে না। বরং ইন্টারনেট সংযোগের উপর নির্ভর করছে। 

ধর্মীয় রীতি কী বলে?
ধারণাটি নিয়ে ধর্মীয় মত কী, সে নিয়ে বায়তুল মোকাররম মসজিদের একজন খতিব মিজানুর রহমান অবশ্য টেলিভিশনে নামাজ পড়ার বিষয়টি কতটা ইসলামী বিধিসম্মত, তা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেছেন।তিনি বলেন, বিশ্ব ইজতেমার সাথে এর পার্থক্যটা হল, মোনাজাত আর সালাত। টেলিভিশনে দেখে মোনাজাতে শরিক হওয়া নিয়ে কোনও বিতর্ক নেই। কিন্তু নামাজের বিষয়টি হল ইমামকে এক্তেদা ও অনুসরণ করতে হয়।

এ ব্যাপারে এখনো পর্যন্ত পৃথিবীর অধিকাংশ মুফতি মনে করেন টিভিতে দেখে নামাজের এক্তেদা করা ঠিক না।তবে তিনি বলেন, এটা ঠিক যে ইমামকে দেখতে পাওয়ার বিষয়টা জরুরি না। মসজিদে প্রথম কাতারে যারা থাকেন তারা ছাড়া আর তো কেউ দেখতে পান না। পিছনের কাতার থেকে ইমামকে দেখে না কিন্তু শোনে। তবে তারা একই মসজিদের জামাতে থাকেন। এতটুকু পর্যন্ত ঠিক আছে।”মুফতিগণ মনে করেন শুধু যন্ত্রের উপর নির্ভর করে নামাজ পড়লে সেটা সঠিক হব না।

“খতিব মিজানুর রহমান বলেন, তারাবির নামাজ মসজিদে পড়া ইসলামে বাধ্যতামূলক নয়। রমজান মাসে কোরআন শরীফ শোনার একটা সুযোগ হয়। মানুষের মধ্যে এই আগ্রহটা তৈরি হয়। এটা সুন্নত কিন্তু বাধ্যতামূলক নয়।তিনি আরও মনে করেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের এই পরিস্থিতিতে আমরাও বলছি নামাজ যার যার ঘরে পড়েন। বাড়িতে তারাবির নামাজ পড়লে বিষয়টা শরিয়া বিরোধী হবে না। তবে তার জন্য কোনও যন্ত্রের মাধ্যমে সম্প্রচারের প্রয়োজন নেই। বাড়ির পুরুষদের কেউ ইমামতি করলেই হবে।

কোভিড-19 সংক্রমণ রোধে, হাঁচি কাশি এড়াতে, লোক সমাগম থেকে দুরে থাকতে বলা হয়। বাংলাদেশে এখন পাঁচজনের বেশি একসাথে মসজিদে নামাজ না পড়ার ব্যাপারে সরকারের নির্দেশনা রয়েছে। সূত্র: বিবিসি বাংলা