প্রচ্ছদ হেড লাইন এএসপি হত্যায় গ্রেপ্তার ১০ জন রিমান্ডে

এএসপি হত্যায় গ্রেপ্তার ১০ জন রিমান্ডে

বিডি রিপোর্ট টোয়েন্টিফোর ডটকম :

রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালে পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল করিমকে ‘পিটিয়ে হত্যার’ ঘটনায় গ্রেপ্তার ১০ জনকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক শহিদুল ইসলাম এ আদেশ দেন।

আদালতে আসামিপক্ষে রিমান্ড আবেদন বাতিল চেয়ে শুনানি করেন মিজানুর রহমান মামুন। রাষ্ট্রপক্ষে রিমান্ড আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন মহানগর আদালতের প্রধান পিপি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আবু। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে মহানগর হাকিম শহিদুল ইসলাম সাত দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

এএসপি হত্যা

এর আগে দুপুর দুইটার দিকে গ্রেপ্তার ১০ আসামিকে নিম্ন আদালতে নেয়া হয়। তাদের ১০ দিনের রিমান্ডে চায় পুলিশ।

ওই ১০ জন হলেন হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয়, কো-অর্ডিনেটর রেদোয়ান সাব্বির, কিচেন শেফ মো. মাসুদ, ফার্মাসিস্ট মো. তানভীর হাসান, ওয়ার্ড বয় জুবায়ের হোসেন, তানিফ মোল্লা, সজীব চৌধুরী, অসীম চন্দ্র পাল, লিটন আহাম্মদ ও সাইফুল ইসলাম পলাশ।

সোমবার রাজধানীর আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালে ‘কর্মচারীদের পিটুনিতে’ এএসপি আনিসুল করিমের মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর আদাবর থানায় হত্যা মামলা করে পুলিশ। এতে ১৫ জনকে আসামি করা হয়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র আনিসুল করিম ৩১ বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। এক সন্তানের জনক আনিসুলের বাড়ি গাজীপুরে।

পরিবারের সদস্যরা বলছেন, মানসিক সমস্যার কারণে সোমবার হাসপাতালটিতে ভর্তি করার পরপরই কর্মচারীরা তাকে পিটিয়ে হত্যা করেন।হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করায় কর্মচারীরা তাকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন।

আনিসুলের ভাই রেজাউল করিম বলেন, পারিবারিক ঝামেলার কারণে আনিসুল মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। তিনি বলেন, সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তারা মাইন্ড এইড হাসপাতালে যান। কাউন্টারে ভর্তি ফরম পূরণের সময় কয়েকজন কর্মচারী তার ভাইকে দোতলায় নিয়ে যান।

কিছু সময় পরই জানানো হয়, আনিসুল অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছেন। এরপর তারা তাকে দ্রুত হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক জানান তিনি মৃত।

সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, বেলা ১২টার দিকে হাসপাতালের কয়েকজন কর্মচারী আনিসুলকে জোর করে একটি কক্ষে ঢোকাচ্ছেন। সেখানে ছয় জন তাকে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেছেন। আরও দুই জন তার পা চেপে ধরেছেন এবং মাথার দিকে থাকা দুই জন কনুই দিয়ে তাকে আঘাত করছেন।

হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ তখন তাদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় একটি কাপড় দিয়ে আনিসুলের দুই হাত বাঁধা হয়। চার মিনিট পর আনিসুলকে যখন উপুড় করা হয়, তখন তার কোনো সাড়া-শব্দ ছিল না। একজন কর্মচারী তার মুখে পানি ছিটালেও সাড়া দিচ্ছিলেন না আনিসুল।

রেজাউল করিম বলেন, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগে ভুগছিলেন আনিসুল। কিন্তু সেগুলো গুরুতর নয়। হাসপাতালে পিটুনিতেই তার মৃত্যু হয়েছে।

মাইন্ড এইড হাসপাতালের সমন্বয়ক ইমরান খান বলেন, আনিসুলকে জাতীয় মানসিক ইনস্টিটিউট থেকে তাদের হাসপাতালে নেয়ার পরপরই তিনি উচ্ছৃঙ্খল আচরণ শুরু করেন। তাকে শান্ত করতেই কক্ষটিতে নেয়া হয়।

সিসিটিভি ফুটেজের মারধর করতে দেখা যাওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ইমরান খান বলেন, তখন তিনি হাসপাতালে ছিলেন না।