প্রচ্ছদ এক্সক্লুসিভ সংবাদ আমার আত্মসম্মানবোধের প্রশ্ন আসছে কেন?

আমার আত্মসম্মানবোধের প্রশ্ন আসছে কেন?

স্পোর্টস ডেস্ক : মাশরাফি তার ক্যারিয়ারে এমন সময় আগে কখনো কি দেখেছেন? শেষ পাঁচ ওয়ানডেতে সাফল্য নেই। এর আগের পাঁচ ম্যাচে সাফল্য একটি। ক্যারিয়ারের সাফল্যর সূর্য যখন মধ্যগগণে থাকার কথা সেখানে মাশরাফির সূচক তলানিতে। তাইতো তাকে নিয়ে হচ্ছে সমালোচনা, হচ্ছে বিতর্কিত অনেক আলাপ-আলোচনা। দলে জায়গা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।

তবে সমালোচনা, বিতর্কিত সকল আলাপ-আলোচনায় গা ভাসাননি জাতীয় দলের নির্বাচকরা। মাশরাফিকে অধিনায়ক করেই সাজানো হয়েছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে দল।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাশরাফির রেকর্ড বেশ ঈর্ষণীয়। ২১৭ ওয়ানডেতে ২৬৬ উইকেট নেওয়া মাশরাফি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৪২ ম্যাচে পেয়েছেন ৬৩ উইকেট। বর্তমান র‌্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকা দলটির বিপক্ষে ২২.৩৩ গড়ে সাফল্য পেয়েছেন নড়াইল এক্সপ্রেস।

তবে দীর্ঘ বিরতিতে উইকেট সাফল্যে মাশরাফি ছাড়িয়ে গেছেন অতীতের সকল রেকর্ড। ২০০৫ সালে মাশরাফি তিন ম্যাচে কোনো উইকেট পাননি। পরের বছর দুবার দুই ম্যাচে কোনো সাফল্য ছিল না। ২০০৭ ও ২০০৮ সালে চার ম্যাচে ছিল না উইকেট। ২০১০ সালে একবার তিন ম্যাচে এবং একবার চার ম্যাচে কোনো সাফল্য ছিল না ডানহাতি পেসারের। ২০১৪ ও ২০১৭ সালে রয়েছে তিন ম্যাচে সাফল্য না পাওয়ার রেকর্ড।

দলের পারফরম্যান্স, ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স, মাঠের বাইরের সমালোচনা ও আনুষাঙ্গিক সকল কিছু মিলিয়ে কি আত্মসম্মানবোধ ক্ষুন্ন হচ্ছে মাশরাফির? ঠিক এমন সময়ে তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলায় কি বাড়তি অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন বাংলাদেশের সফলতম অধিনায়ক।

আত্মসম্মানবোধের প্রশ্ন উঠায় মেজাজ হারালেন মাশরাফি। উইকেট না পাওয়ায় কেন লজ্জা হবে সেটাও তার জানতে চাওয়া। দেশের হয়ে খেলতে লজ্জা কিসের তাও জানতে চাওয়া অধিনায়কের। মাশরাফির মেজাজ হারানোয় কিছুটা থমথমে হয়ে আসে সিলেটের সংবাদ সম্মেলন কক্ষ।

‘আত্মসম্মান বা লজ্জা, আমি কী চুরি করি মাঠে? আমি কী চোর? খেলার সঙ্গে লজ্জা, আত্মসম্মান – আমি মিলাতে পারি না। ’

‘এতো জায়গায় এতো চুরি চামারি হচ্ছে, তাদের কোন লজ্জা নেই। উইকেট আমি নাই পেতে পারি। আমার সমালোচনা আপনারা করবেন, সমর্থকরা করবে। লজ্জা পেতে হবে কেন? আমি কী বাংলাদেশের হয়ে খেলছি নাকি অন্য কোন দেশের হয়ে খেলছি যে আমার লজ্জা পেতে হবে। ’

মাশরাফির সাফ কথা, ‘আমি পারিনি আমাকে বাদ দিয়ে দিবেন। জিনিসটা তো সাধারণ। এখন কথা হচ্ছে, আমার লজ্জা, আত্মসম্মানবোধ আমি কার সঙ্গে দেখাতে যাবো। আমি তো বাংলাদেশের হয়ে খেলতে নামছি। আমি কী বাংলাদেশের মানুষের বিপক্ষের কেউ? যেই কেউই পারফর্ম নাই করতে পারে। তাঁর কোন জায়গায় কমতি থাকলে সেগুলো নিয়ে প্রশ্ন থাকতেই পারে। খারাপ করলে সমালোচনা হবে, এটা সারা বিশ্বেই হচ্ছে। কিন্ত কথাটা যখন আসে লজ্জা আত্মসম্মানে, তখন আমার প্রশ্ন থাকে। আমার সমালোচনা করুক, কিন্তু আমার আত্মসম্মানবোধের প্রশ্ন আসছে কেন?

আমি কী অন্য দেশের হয়ে খেলছি? তা তো না। সুতরাং এই জিনিসটার সঙ্গে আমি মোটেও এক মত না। ’

সংবাদ সম্মেলনের শেষ প্রান্তে আত্মসম্মানবোধের প্রশ্নে মাশরাফি মেজাজ হারালেও বাকি সময়টায় ছিলেন প্রাণবন্ত। স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, দেশের হয়ে খেলতে চান আরও কিছুটা সময়। চান দলকে ভালোভাবে নেতৃত্ব দিয়ে রঙিণ পোশাকে সাফল্য এনে দিতে। ধারাবাহিকভাবে যে কাজটা দীর্ঘদিন করেছেন সেটাই আবার নতুন করে শুরুর প্রত্যয় মাশারফির কন্ঠে।