প্রচ্ছদ সারাদেশ চট্টগ্রাম বিভাগ ভারি বর্ষণ ও পাহাড় ধসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অচলাবস্থা

ভারি বর্ষণ ও পাহাড় ধসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অচলাবস্থা

ভারি বর্ষণের কারণে গত তিন দিন ধরে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায়। পনির নিচে তলিয়ে গেছে বালুখালী ক্যাম্প এলাকার সমতলের রোহিঙ্গা ঝুপড়িসহ চার শতাধিক পরিবার। পাহাড় ধসে বিধ্বস্ত হয়েছে ৪ শতাধিক ঝুপড়ি ঘর। সোমবার পাহাড় ধসে এক শিশুর মৃত্যুও হয়েছে, আহত হয়েছে তিন শতাধিক। ক্যাম্প এলাকার আভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় ৪৮ ঘণ্টা যোগাযোগ বন্ধ ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, অনিয়ন্ত্রিত পাহাড় কাটার কারণে পরিস্থিতি বিরূপ আকার ধারণ করেছে। টেকনাফের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জি ব্লক, জি-সেভেন ব্লক, বালুখালী ক্যাম্প, থাইংখালির ১৩ নং ব্লকসহ বিস্তির্ণ এলাকায় ভূমিধস হয়েছে।

বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের কারণে গত কয়েকদিন ধরে ঝোড়ো হাওয়া আর টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে কক্সবাজারে। ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গারা জানান, যারা পাহাড়ের উপরে ঘর বেঁধেছিলেন তারা জখম হয়েছেন, যারা পাহাড়ের নিচে ঘর বানিয়েছেন তারা এখন বন্যার কবলে পড়েছেন। ৭০ কিলোমিটার গতির বাতাসের সঙ্গে ভারী বর্ষণের কারণে পাহাড় ধসের কবলে পড়েছেন তিন সহস্রাধিক মানুষ। গত শনিবার থেকে কক্সবাজার অঞ্চলে ৪শ’ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। টানা এ বর্ষণের কবলেই দিনযাপন করছেন রোহিঙ্গা শিবিরগুলোর ১০ লক্ষাধিক আশ্রিত রোহিঙ্গা।

এদিকে কুতুপালং ক্যাম্পে পাহাড় ধসের ঘটনায় নিহত আড়াই বছরের শিশু ফারুকের পিতা কুতুপালং ক্যাম্পে বসবাসকারী মো. শুক্কুর জানান, ভোর রাতে হঠাৎ করে তার বাড়িটি ধসে পড়লে স্ত্রীকে নিয়ে কোনো রকম একটি গাছের খুঁটি ধরে রক্ষা পেলেও ফারুককে রক্ষা করা যায়নি।

বালুখালী ২নং ক্যাম্পের আবু তাহের মাঝি জানান, এই ক্যাম্পের অধিকাংশ ঘর পাহাড় কেটে তৈরি করা হয়েছে। যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। প্রশাসন ক্যাম্পের ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার কথা বললেও তা হয়নি। পাহাড়ের খাদে ও উপরে বসবাসরত বালুখালী-২নং ক্যাম্পের প্রায় ২৩০টি ঘর, তাজনিমার খোলা ক্যাম্পে ৪০টি, বালুখালী-১নং            ক্যাম্পে ৬০, কুতুপালং ক্যাম্পে ৭০টি ঘরসহ মোট চার শতাধিক ঘর ধসে পড়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, তিনি ক্যাম্প পরিদর্শনকালে বেশ কিছু ধসে পড়া ঘর দেখেছেন। স্থানীয় যোগাযোগের রাস্তাগুলো ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাই জরুরি যোগাযোগ ছাড়া কোন মানুষ বা যান চলাচল যেন না হয় সেজন্য সোমবার সকাল থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্যাম্প এলাকা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।