রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে সেবায়েত নিয়োগ প্রশ্নে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
সোমবার বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপিতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আবেদনকারী পল্টন কুমার দাসকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেবায়েত হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব, জেলা প্রশাসক ও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
পরে খুরশিদ আলম খান বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশে ১৯৯৯ সালে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী প্রধান সেবায়েতর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। পরে সর্বোচ্চ আদালতের রায়েও সে নির্দেশনা বহাল ছিল।
এ আইনজীবী বলেন, ‘ভারতে সেবায়েত নিয়োগ সংক্রান্ত ১৯৬৭ সালের একটি মামলার রায়ের আলোকে আমাদের সর্বোচ্চ আদালত ১৯৯৯ সালের ৯ মে প্রদীপ কুমার চক্রবর্তীকে সেবায়েত হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন।
ওই রায়ে বলা আছে, মন্দিরে জামিদানকারী অথবা জমিদানকারীর বংশধরেরা সেবায়েত নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। রিটকারি পল্টন কুমার দাসের ঠাকুর দা সুধীর কুমার দাস ঢাকেশ্বরী মন্দিরে জমি দান করেছিলেন। সিএস রেকর্ড অনুযায়ী মন্দিরের ৫ শতাংশ জমি সুধীর দাসের নামে। সে হিসেবে সেবায়েত হিসেবে রিটকারি পল্টন কুমার দাস অগ্রাধিকার পাওয়ার কথা।’
পল্টন কুমার দাস বলেন, গত বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি ভারতে প্রধান সেবায়েত প্রদীপ কুমার চক্রবর্তীর মৃত্যুর পর থেকে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে কোনো সেবায়েত নেই। বলা যায় মন্দিরটি অভিভাবক শূন্য। প্রয়াত সেবায়েতের দুই ছেলের দুজনই ভারতের নাগরিক। ফলে তাদের পক্ষে এ মন্দিরের সেবায়েতের দায়িত্ব নেওয়া সম্ভব না।
পল্টন দাস বলেন, গত বছর প্রধান সেবায়েতের মৃত্যুর পর মন্দির রক্ষণাবেক্ষণ, ব্যবস্থাপনার জন্য প্রধান সেবায়েতের স্ত্রীসহ ৯ সদস্যের একটি কমিটি ঢাকার যুগ্ম জেলা জজ আদালত-৪ থেকে অনুমতি নেয়। কিন্তু সংক্ষুব্ধ পক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৩০ জুলাই হাইকোর্ট সে কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করেন।
তাছাড়া গত প্রায় দেড় বছরে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে নানা অনিয়ম, অব্যবস্থাপনার খবর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এসেছে। প্রকাশিত এসব খবর যুক্ত করে সেবায়েত প্রার্থী হিসেবে গত মাসে হাইকোর্টে রিট আবেদন করি। আজ আদালত সে আবেদনে শুনানি নিয়ে রুল জারি করেছেন।
