দুর্ঘটনা এড়াতে পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক পদার্থের কারখানা, গুদাম ও দোকান সরানোর দাবি জানিয়েছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনসহ (পবা) ১৬টি সংগঠন।
রোববার পুরান ঢাকার নিমতলীতে ‘পুরান ঢাকার আবাসিক এলাকা থেকে রাসায়নিক পদার্থের দোকান ও কারখানা সরিয়ে নেওয়া হোক’ শীর্ষক এক মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে বলা হয়, নিমতলী ট্র্যাজেডির ৮ বছর পার হলেও পুরান ঢাকার আবাসিক এলাকা থেকে কারখানা, গুদাম ও দোকান এখনো সরেনি। বরং অলিগলিতে গড়ে উঠছে রাসায়নিক পদার্থের কারখানা, গুদাম ও দোকানসহ প্লাস্টিক, পলিথিন ও জুতার কারখানা। নিমতলীসহ পুরান ঢাকার আবাসিক এলাকায় জনসাধারণ অত্যন্ত বিপজ্জনক ও ঝুঁকিপূর্ণ রাসায়নিক দাহ্য পদার্থের সাথে আতঙ্কে বসবাস করছে। এসব কারখানা, গুদাম ও দোকানে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা যেখানে রাসায়নিক পদার্থের অব্যবস্থাপনায় বা সামান্য ত্রুটিতে ঘটে যেতে পারে নিমতলী ট্র্যাজেডির মতো ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ। তাই অবিলম্বে এসকল জায়গা থেকে অন্যত্র রাসায়নিক পদার্থের কারখানা, গুদাম ও দোকান সরিয়ে নিতে হবে।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন পবার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান, নাসফের সাধারণ সম্পাদক মো. তৈয়ব আলী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাজী আবদুল আউয়াল, পুরান ঢাকা নাগরিক উদ্যোগের সভাপতি নাজিম উদ্দিন, নাসফের সহ-সম্পাদক মো. সেলিম, ক্যামেলিয়া চৌধুরী, ওহিদুর রহমান, সুবন্ধন সমাজ কল্যাণ সংগঠনের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব, বানিপার সভাপতি প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ যুব সমিতির মো. আকতার হোসেন, নবাব কাটারা সমাজ কল্যাণ সংগঠনের সভাপতি হাজী মো. শহীদ মিয়া, মার্শাল আর্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আতিক মোর্শেদ, বাংলাদেশ সাইক্লিং ও হাঁটা জোটের সদস্য মো. নিশু সাদেক প্রমুখ।
মানববন্ধনে ঘনবসতিপূর্ণ পুরান ঢাকা থেকে বিপজ্জনক রাসায়নিক পদার্থের গুদাম, কারখানা ও দোকান সরিয়ে নেওয়া; বিপজ্জনক রাসায়নিক পদার্থের গুদাম, কারখানা ও দোকানের জন্য সরকার কর্তৃক অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ও তাৎক্ষণিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের ব্যবস্থাসহ একটি পরিকল্পিত এলাকা গড়ে তোলা; পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক আবাসিক এলাকায় পরিচালিত কেমিক্যাল কারখানা, গুদামের বিরুদ্ধে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা; কেমিক্যাল কারখানা, গুদাম পরিচালনার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন, বিস্ফোরক অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস, সিটি করপোরেশন কর্তৃক সংশ্লিষ্ট আইন মোতাবেক কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা; পুরান ঢাকাসহ রাজধানীর সব এলাকা থেকে রাসায়নিক কারখানা, গুদাম সরাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ বাস্তবায়ন করা; নিমতলী অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের পরিবারকে পুনর্বাসন করা এবং প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে সংগৃহীত অর্থ ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে সুষ্ঠু বণ্টনের ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়।
এর আগে মানববন্ধনের শুরুতে নিমতলী ট্র্যাজেডির স্মরণে গড়ে তোলা স্মৃতিস্থম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয় এবং নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।