প্রচ্ছদ রাজনীতি আলামত ভালো মনে হচ্ছে না : মওদুদ

আলামত ভালো মনে হচ্ছে না : মওদুদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিটার মওদুদ আহমদ বলেছেন, ‘আমাদের দলের নেতাকর্মীদের শারীরিক ও মানসিকভাবে আন্দালনের প্রস্তুতি নিতে হবে।’

এ সময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সাবেক এই আইনমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু স্লোগান দিলেই কি আমাদের নেত্রীর মুক্তি হবে? (এ সময় নেতাকর্মীরা ‘না’ সূচক উত্তর দেন, নেতাকর্মীরা ‘আন্দোলন আন্দোলন’ বলে স্লোগান দেন)। তাহলে আন্দোলনের জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে আন্দালনের প্রস্তুতি নিন। সেটি করলেই নেত্রী মুক্তি পাবেন।’

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজা বাড়ানো ও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে গণঅনশন কর্মসূচিতে মওদুদ আহমদ এসব কথা বলেন।

আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে মওদুদ আহমদ বলেন, ‘যত দিন পর্যন্ত আমাদের নেত্রীর মুক্তি এবং নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায় না হবে, তত দিন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’

বিএনপির এই নীতিনির্ধারক আরো বলেন, ‘সারা জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। এটিকে আরো জোরদার করতে হবে। সরকার একদিকে সংলাপের কথা বলে ব্যাপকভাবে আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে, অন্যদিকে আমাদের নেত্রীর সাজা পাঁচ বছর থেকে ১০ বছর করেছে। এগুলো আমাদের কাছে ভালো আলামত বলে মনে হচ্ছে না।’

‘আমরা ভেবেছিলাম, আমাদের নেত্রী খালাস পাবেন। কিন্তু যা হয়েছে, সেটি নজিরবিহীন। আমরা এটা গ্রহণ করি না,’ যোগ করেন মওদুদ আহমদ।

গণঅনশনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমান বলেন, ‘একবার ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসেছেন, এবার ক্ষমতা হারালে ৪২ বছর পরেও ক্ষমতায় আসতে পারবেন না।’

ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, ‘জয়কালে ক্ষয় নাই, মরণকালে ওষুধ নাই। আপনাদের শেষ সময় চলে এসেছে। পুলিশ ছাড়া একদিন মাঠে নেমে দেখুন, আপনার দলের নেতাকর্মীদের চিহ্ন থাকবে না।’

‘২১ আগস্ট মামলায় তারেক রহমানের কোনো নাম ছিল না। এই সরকার ক্ষমতায় এসে মিথ্যা ও সাজানো মামলায় তাঁকে জড়িয়ে সাজা দিয়েছে। আমরা এই সাজা মানি না,’ যোগ করেন আমান।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরীর এ্যানীর সঞ্চালনায় গণঅনশনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান, ডা. জেড এম জাহিদ হোসেন, অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক, আবদুস সালাম, আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, এমরান সালেহ প্রিন্স, শ্যামা ওবায়েদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামিমুর রহমান, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দীন আলম, তকদির হোসেন মো. জসিম, আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমাতুল্লাহ, স্বেচ্ছাসেবক দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসান, সহসভাপতি আলমগীর হাসান সোহান, নাজমুল হাসান, জহুরুল ইসলাম বিপ্লব, সহসাধারণ সম্পাদক আরিফা সুলতানা রুমা প্রমুখ।

গত মঙ্গলবার হাইকোর্ট বিভাগ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিচারিক আদালতের দেওয়া পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বাড়িয়ে ১০ বছর করে।

এর আগের দিন সোমবার জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ চারজনকে সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।

এসবের মধ্যেই গতকাল বুধবার আবার বিএনপির সংশোধিত গঠনতন্ত্র গ্রহণ না করতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একটি রিটের শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে বিএনপির গঠনতন্ত্র সংশোধন করা কেন অবৈধ হবে না, সে বিষয়ে রুল জারি করা হয়েছে।