প্রচ্ছদ জাতীয় সেনাপ্রধান সম্পর্কে ভুল তথ্য উপস্থাপনের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চাইলেন ড....

সেনাপ্রধান সম্পর্কে ভুল তথ্য উপস্থাপনের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চাইলেন ড. জাফরুল্লাহ

সময় টেলিভিশনের এক টক শোতে সেনাপ্রধানকে নিয়ে ভুল তথ্য উপস্থাপন এবং শব্দ বিভ্রাটের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

শনিবার (১৩ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর ধানমণ্ডিতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ষষ্ঠ তলায় সংবাদ সম্মেলনে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।

গত মঙ্গলবার (০৯ অক্টোবর) সময় টেলিভিশনে রাত ১০টায় প্রচারিত টকশো ‘সম্পাদকীয়’তে আলোচক হিসেবে উপস্থিত গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী দাবি করেন, সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ যখন চট্টগ্রামের জিওসি ছিলেন, সেখান থেকে সমরাস্ত্র ও গোলাবারুদ চুরি যাওয়ার ঘটনায় তার কোর্ট মার্শাল হয়েছিল।

তবে ওই বক্তব্যে ভুল তথ্য উপস্থাপন করেছেন উল্লেখ করে জাফরুল্লাহ বলেন, জেনারেল আজিজ একজন দক্ষ আর্টিলারি সেনা কর্মকর্তা। তিনি চট্টগ্রামের সেনানিবাসের জিওসি ছিলেন না, কমান্ডডেন্টও ছিলেন না। তিনি তার কর্মজীবনের এক সময় চট্টগ্রামের সেনাছাউনিতে আর্টিলারি প্রশিক্ষক ছিলেন।

তিনি বলেন, ‘শারীরিক দুর্বলতা নিয়েই আমি গত ৯ অক্টোবর রাত ১০টায় টকশোতে অংশ নেই। সেখানে অতিথি হিসেবে ছিলেন, নাঈমুল ইসলাম খান ও আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য নূহ-আলম-লেনিন। এ সময় সেনাপ্রধান জেনারেল এম এ আজিজ সম্পর্কে অসাবধানতাবশত একটি ভুল তথ্য উল্লেখ করেছিলাম।’

গত মঙ্গলবার (৯ অক্টোবর) সময় টেলিভিশনে রাত ১০টায় প্রচারিত টকশো ‘সম্পাদকীয়’ চলাকালীন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘…দেখেন, আর্জেস গ্রেনেড… আমি জানি না সময়টি মিলে কিনা, আমাদের বর্তমান চিফ অব আর্মি আজিজ সাহেব চট্টগ্রামের কমান্ডার ছিলেন, জিওসি ছিলেন, কমান্ড্যান্ট ছিলেন। তার ওখান থেকে একটা ব্যাপক সংখ্যক সমরাস্ত্র, গোলাগুলি চুরি হয়েছিল, হারিয়ে গেছিল, বিক্রি হয়ে গেছিল এবং এ জন্য একটা কোর্ট মার্শালও হয়েছিল, আজিজের নামে, জেনারেল আজিজের নামে কোর্ট মার্শালও হয়েছিল। আজকে উনি…, কিন্তু উনার কেন এসেছে, উনি হলেন ওভার অল, উনি নিশ্চয়ই এখন তো ওখান থেকে এবং আমরা আরও দেখছি মিরপুরে সম্প্রতি কয়েক বাক্স পুকুরের মধ্যে পাওয়া গেছে, এ সবগুলি আমাদের ব্যর্থতা…।’

জাফরুল্লাহর এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সেনা সদরের প্রতিবাদপত্রে বলা হয়, ‘বর্তমান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ সম্পর্কে জনাব ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বক্তব্য ছিল একটি দায়িত্বজ্ঞানহীন অসত্য বক্তব্য। কারণ, বর্তমান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ চাকরি জীবনে কখনোই চট্টগ্রামের জিওসি বা কমান্ড্যান্ট হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন না। তিনি সেপ্টেম্বর ২০১০ হতে জুন ২০১১ পর্যন্ত কুমিল্লায় ৩৩ আর্টিলারি ব্রিগেডের ব্রিগেড কমান্ডার, জুন ২০১১ হতে মে ২০১২ পর্যন্ত ঢাকায় মিরপুরে ৬ স্বতন্ত্র এডিএ ব্রিগেডের ব্রিগেড কমান্ডার এবং মে ২০১২ হতে ডিসেম্বর ২০১২ পর্যন্ত কুমিল্লায় ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্ণিত সময়ে চট্টগ্রাম বা কুমিল্লা সেনানিবাসে কোনও সমরাস্ত্র বা গোলাবারুদ চুরি বা হারানোর কোনও ঘটনা ঘটেনি। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে বর্তমান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ তার দীর্ঘ বর্ণাঢ্য সামরিক চাকরি জীবনে কখনোই কোর্ট মার্শালের সম্মুখীন হননি।’

প্রতিবাদে আরও বলা হয়েছে, ‘চাকরিরত একজন সেনাবাহিনী প্রধান সম্পর্কে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মতো একজন বিশিষ্ট ব্যক্তির এরূপ দায়িত্বজ্ঞানহীন অসত্য বক্তব্য সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, যা সেনাবাহিনী প্রধানসহ সেনাবাহিনীর মতো রাষ্ট্রীয় একটি প্রতিষ্ঠানকে জনসম্মুখে হেয় করার হীন অপচেষ্টা মর্মে স্পষ্টত প্রতীয়মান। ডা. জাফরুল্লাহর উপরোক্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন অসত্য বক্তব্য কেবল সেনাবাহিনী প্রধান হিসেবে জেনারেল আজিজ আহমেদের সুনাম ও সামাজিক অবস্থানকে ক্ষুণ্ন করেনি বরং তা সেনাবাহিনী প্রধানের পদকে চরমভাবে হেয় প্রতিপন্ন করেছে, যা প্রকারান্তরে চাকরিরত সেনাবাহিনীর সব সদস্যকে বিভ্রান্ত করছে এবং তাদের মনোবলের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এছাড়া, এরূপ অপপ্রচার সেনাবাহিনীর মতো সুশৃঙ্খল বাহিনীর সংহতি ও একতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, যা অনাকাঙ্ক্ষিত।’