প্রচ্ছদ রাজনীতি জাতিসংঘ মহাসচিব বিএনপির মহাসচিবকে আমন্ত্রণ জানায়নি- প্রধানমন্ত্রী

জাতিসংঘ মহাসচিব বিএনপির মহাসচিবকে আমন্ত্রণ জানায়নি- প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি মিথ্যাচারে চ্যাম্পিয়ন। জাতিসংঘের মহাসচিব বিএনপির মহাসচিবকে আমন্ত্রণ জানাননি, বিএনপিই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছে। এমন নাটক করার দরকার কী? মিথ্যাচার করার দরকার কী? এতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়। এমন মিথ্যাচার, ধোঁকাবাজি, ভাঁওতাবাজিতে বিএনপি চ্যাম্পিয়ন।

শনিবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রথম সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এর আগেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যখন সরকার গঠন করেন, তখন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহর টেলিফোন আলাপ নিয়ে বিএনপি এমন মিথ্যাচার করেছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগ করেছে। এত টাকা তারা পেল কোথায়? এর আগে বিএনপি জয়কেও হত্যাচেষ্টা করেছিল। যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআই কর্মকর্তাকে কিনেছিল। এ সময় ষড়যন্ত্রে কারা লিপ্ত ছিল, তা সবাই জানে। সাংবাদিক শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমানের নাম এ প্রসঙ্গে এসেছে।’ তিনি বলেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংক থেকে এমডি পদ চলে যাওয়ায় হিলারি ক্লিনটনকে দিয়ে ড. ইউনূস পদ্মা সেতুর কাজ বন্ধ করল। আমাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনল। আমরা চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম। এক ফোঁটা দুর্নীতিও পায়নি। তারেক রহমান এত টাকা পায় কোথায়? বিলাসী জীবন যাপন করে, তিনটা গাড়ি রয়েছে তাঁর। অথচ আমার বোন লোকাল গাড়িতে চড়ে। যারা অর্থ লুট করে, এতিমের টাকা মেরে খায়, দেশবাসীকে বলব, তাদের পরিহার করুন।’

অন্য কিছু ভাবলে আশা পূরণ হবে না, যুক্তফ্রন্টকে শেখ হাসিনা
যুক্তফ্রন্টকে স্বাগত জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাদের স্বাগত জানাই। তারা রাজনীতি করুক। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একটা প্ল্যাটফর্ম তো থাকা দরকার। কিন্তু অন্য কিছু ভাবলে তাদের আশা পূরণ হবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘তারা অভিযোগ করেছে, তাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যান দেওয়া হয়নি। আসলে সেখানে আরও কেউ জনসভা করতে চেয়েছিল। তাই হয়তো যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে তাদের বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। ডিএমপিকে বলব, তাদের যেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান দেওয়া হয়। প্রয়োজনে স্থায়ী একটি মঞ্চ করে দেওয়া হবে, যেন তারা ৬০-৭০ জন মিলে গলা ফাটিয়ে বক্তৃতা করতে পারে। প্রয়োজনে লোকও দেব।’

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যারা গুজব রটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের গ্রেপ্তার সম্পর্কে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রথম দুদিন খুবই ভালো ছিল। পুলিশ, আমার দলের নেতা-কর্মী, এমপি-মন্ত্রীদের বলেছিলাম, ধৈর্য ধরুন। শিক্ষার্থীরা যা বলে, তা শুনুন। কিন্তু এর মাঝে তৃতীয় পক্ষ নেমে গেল রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য। একজন তো আল-জাজিরা টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দিলেন, এখানে নাকি গণহত্যা চলছে। আল-জাজিরা ক্ষমা চাইল তাদের ভুল সংবাদ পরিবেশনের জন্য। আবার কেউ ফেসবুকে বললেন, নারীদের ধর্ষণ করা হচ্ছে। তিনি যেখান থেকে বললেন, পেছনে তো অন্য সাইনবোর্ড ছিল। দরজিপাড়ায় স্কুলড্রেস বানানোর ধুম পড়ে গিয়েছিল, পলাশীতে ভিড় আইডি কার্ড বানানোর। এদের অপপ্রচারের কারণে আমার পার্টি অফিসে হামলা হলো। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা হলো। যারা গুজব রটিয়েছে, মিথ্যাচার করেছে, তাদের বিরুদ্ধে তো ব্যবস্থা নেবই।’

উত্তরপাড়ার দিকে তাকিয়ে থেকে লাভ নেই
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা সরকারের কোনো উন্নয়ন দেখে না, তারা চোখ থাকতে অন্ধ। তাদের মনের দরজা বন্ধ। এ সরকারের ভালো কাজ তাদের চোখে পড়ে না। যারা মানুষ হত্যা করে, গ্রেনেড হামলা করে, অর্থ লুটপাট করে, তাদেরই তারা পছন্দ করে। তারা থাকে কিছু একটার আশায়। যদি কিছু একটা হয়। কিন্তু উত্তরপাড়ার দিকে তাকিয়ে থেকে লাভ নেই। উত্তরপাড়া থেকে কেউ সাড়া দেবে না। তাদের কেউ ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে না। এমন মানসিকতা কারোর নেই।’

দু-একজন বাদে অধিকাংশ এমপির অবস্থা ভালো
শেখ হাসিনা বলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনে দেশের জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করবে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার জন্যই মানুষ আবার নৌকায় ভোট দেবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমি ছয় মাস পরপর সার্ভে রিপোর্ট করছি। আমাদের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। প্রার্থীদের ব্যাপারে খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। দু-একজন বাদে অধিকাংশ এমপির অবস্থা ভালো। টানা দুবার ক্ষমতায় থাকা এবং জনপ্রিয়তা ধরে রাখা সচরাচর হয় না। কিন্তু আমরা পেরেছি। কারণ, জাতির জনক আমাদের সেই আদর্শ শিখিয়েছেন। দিনরাত আমি মানুষের জন্যই কাজ করছি।’

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য, সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর সূচনা বক্তব্যের পর রুদ্ধদ্বার বৈঠক শুরু হয়।