প্রচ্ছদ অর্থনীতি ৫ দিনে কর আদায় ১৫৮০ কোটি টাকা

৫ দিনে কর আদায় ১৫৮০ কোটি টাকা

সপ্তাহব্যাপী আয়কর মেলার পঞ্চম দিন (শনিবার) পর্যন্ত কর আদায় হয়েছে ১ হাজার ৫৮০ কোটি ৯ লাখ ৪২ হাজার ৫২৭ টাকা।

যেখানে প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ। ২০১৭ সালের একই সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ১ হাজার ৪৭৩ কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার ৩২ টাকা।

এ সময়ে মেলায় সেবা নিয়েছেন ১১ লাখ ৪৮ হাজার ৫৭২ জন, রিটার্ন দাখিল করেছেন ৩ লাখ ৪২ হাজার ৮৩৩ জন এবং নতুন ইটিআইএন নিয়েছেন ২৪ হাজার ৯০৩ জন করদাতা।

পঞ্চম দিন মেলায় কর আদায় হয়েছে ২৯০ কোটি ৫২ লাখ ৯৩ হাজার ৭০৮ টাকা। যা ২০১৭ সালের ওই সময়ে আয়কর মেলার চেয়ে ১৮ কোটি ৬৫ লাখ ৮১ হাজার ১৬ টাকা বেশি। প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এ সময়ে সেবা গ্রহণ করেন ২ লাখ ৪৮ হাজার ৯১৭ জন।

করদাতাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও ব্যাপক সাড়ার মধ্য দিয়ে আজ দেশের ৮টি বিভাগ, ৫২টি জেলা এবং ১৩টি উপজেলাসহ মোট ৭৩টি স্পটে আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হয়।

আজ ছুটির দিনে সকাল থেকেই আয়কর মেলায় নেমেছিল উৎসবের আমেজ। মেলা প্রাঙ্গণ করদাতাদের মিলন মেলায় জনসমুদ্রে পরিণত হয়। সারা দেশে করদাতারা ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে কর প্রদান ও সেবা গ্রহণ করেছেন। বিশেষ করে পেশাজীবী, চাকরিজীবী, তরুণ করদাতা, নারী করদাতা, অনলাইন রিটার্ন দাখিল বুথে সম্মানিত করদাতাদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।

প্রতিদিন মেলা সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে। মেলায় আয়কর রিটার্ন দাখিল, ই-টিআইন গ্রহণ (নতুন ও পুরাতন), ই-পেমেন্ট, ই-ফাইলিং, ই-পেমেন্টের ব্যবস্থা রয়েছে। মেলায় আসা মুক্তিযোদ্ধা, নারী, প্রতিবন্ধী ও প্রবীণ করদাতাদের জন্য রয়েছে আলাদা বুথ।

মেলায় করদাতাদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য রাজধানীর টিএসসি, রামপুরা, বেইলি রোড, মতিঝিল, মিরপুর ও উত্তরা থেকে ১৫টি শাটল বাস নিয়োজিত রয়েছে।

এর আগে গতকাল চতুর্থ দিনে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ২৫৩ কোটি ১৫ লাখ ৮১ হাজার ৫৪০ টাকা। তৃতীয় দিনে ২৪৪ কোটি ৮২ লাখ ২৬৯ হাজার ৮৩৩ টাকা, দ্বিতীয় দিনে ৫৫১ কোটি ১৫ লাখ ২০ হাজার ৩৯৮ টাকা এবং প্রথম দিনে মোট আয়কর আদায় হয় ২১৮ কোটি ৪২ লাখ ৭৭ হাজার ৪৮ টাকা।

শনিবার অডিও ভিজ্যুয়াল পদ্ধতিতে কর শিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করে এনবিআর। এর ফলে এখন থেকে করদাতারা আধুনিক পদ্ধতিতে কর শিক্ষণে অংশ নিতে পারবেন। চারটি ডকু ড্রামায় রিটার্ন দাখিলের তথ্য সংযোজন করা হয়। নাটিকার মতো এ ভিডিওগুলো দেখলে করদাতারা নিজেই তার রিটার্ন তৈরি করতে পারবেন। ভবিষ্যতে এসব ভিডিও এনবিআরের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলেও আপলোড করা হবে বলেও জানায় এনবিআর।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মেলার সমন্বয়ক ও এনবিআর (আয়কর) সদস্য জিয়া উদ্দিন মাহমুদ, কর একাডেমির মহাপরিচালক মো. বজলুর কবির ভূঁইয়া ও কর অঞ্চল-১৩’র অতিরিক্ত কর কমিশনার সুবর্ণা চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

সপ্তাহব্যাপী মেলায় ছুটির দিনে ছিল উৎসবের আমেজ। আয়কর মেলার পঞ্চম দিনে সকাল থেকেই করদাতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। অফিসার্স  ক্লাবকে ঘিরে সারাদিন বেইলি রোডের আশেপাশের রাস্তাগুলোতেও যানজট সৃষ্টি হয়। দুপুরের পর ভিড় বাড়তে দেখা গেছে। অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে অনেককে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন জমা না দিয়ে ফিরে যেতেও দেখা গেছে। মেলায় সব শ্রেণি-পেশার করদাতাদের মতোই মেলায় লক্ষ্য করা যাচ্ছে তরুণ করদাতাদেরও সরব উপস্থিতি।

ভবিষ্যতে ই-টিআইএন নিবন্ধন, অনলাইনে কর দেওয়া (ই-পেমেন্ট) ও অনলাইনে রিটার্ন ফরম পূরণ (ই-ফাইলিং) অডিও ভিজ্যুয়াল পদ্ধতিতে কর সংক্রান্ত সব ধরনের সেবা দেওয়া হবে। প্রতিদিনের মতো আজও অনুষ্ঠিত হয়েছে কর শিক্ষণ ফোরাম। এতে নটরডেম কলেজের ৪০ শিক্ষার্থী অংশ নেন। পরে প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ১০ জনের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

২০১০ সাল থেকে শুরু হওয়া আয়কর মেলার পরিধি এবং মেলার মাধ্যমে আয়কর বিভাগের সেবার পরিসর উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। এবারে ঢাকাসহ সকল বিভাগীয় শহরে সাত দিন, ৫৬টি জেলা শহরে চার দিন, ৩২টি উপজেলায় দু’দিন এবং ৭০টি উপজেলায় এক দিনের আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।