প্রচ্ছদ জাতীয় স্বর্ণ নিয়ে জটিলতা, দেশে ফিরে ব্যবস্থা : মুহিত

স্বর্ণ নিয়ে জটিলতা, দেশে ফিরে ব্যবস্থা : মুহিত

বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে সংরক্ষিত স্বর্ণ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিয়ে দেশে ফেরার পর খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

বুধবার নিউ ইয়র্কে একটি হোটেল লবিতে এক বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে তিনি এ কথা বলেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

এ সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, স্বর্ণ নিয়ে যে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে তা কোনোভাবেই ছোট করে দেখার বিষয় নয়। যাদের কাছে স্বর্ণ রাখা হলো তাদেরই বেশি দায়িত্ব। ভল্টে স্বর্ণ ঢোকানোর আগে তা প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া উচিত ছিল। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের দায়িত্ব এড়াতে পারে না।

মুহিত বলে, আমি দেশে ফিরে বিষয়টি পর্যালোচনা করবো এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো। সত্যি যদি কোনো অনিয়ম হয়ে থাকে, আর তার সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের কেউ যদি জড়িত থেকে থাকেন, তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যবস্থা নেবে বলে আমি মনে করি।

উল্লেখ্য, অর্থমন্ত্রী ১৬ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত ‘গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফর এফেক্টিভ ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন’ শীর্ষক একটি আন্তির্জাতিক ওয়ার্কশপে যোগ দিতে ঢাকা ত্যাগ করেন। আগামী ২২ জুলাই তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

এদিকে ঘটনার পর অর্থমন্ত্রীর অবর্তমানে গত বুধবার এ বিষয়ে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআর এর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে শেষে তিনি বাংলাদশে ব্যাংকরে ভল্টে রাখা সোনা নিয়ে অনিয়মের খবর যেভাবে প্রকাশিত হয়েছে, তা পুরোপুরি সত্য নয় বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, বাংলাদশে ব্যাংক ও এনবিআরের মধ্যে যোগাযোগের ঘাটতিতেই এই সংকট। তবে আমরা বিষয়টিকে ছোট করে দেখছি না। পর্যালোচনা করে কারো বিরুদ্ধে গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত ১৭ জুলাই দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে ভুতুড়ে কাণ্ড’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর দিনভর আলোচনা চলে। বিশেষ করে সোস্যাল মিডিয়াতে এই নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তির সৃষ্টি হয়।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অধীন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের এক অনুসন্ধানের তথ্যের ভিত্তিতে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের ৯৬৩ কেজি স্বর্ণ পরীক্ষা করে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অনিয়ম ধরা পড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখা ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণের চাকতি ও আংটির জায়গায় এখন আছে মিশ্র বা সংকর ধাতু। আর ২২ ক্যারেটের স্বর্ণ হয়ে গেছে ১৮ ক্যারেট।

এ ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক রবিউল হোসেন এবং ভল্টের দায়িত্বে থাকা কারেন্সি অফিসার আওলাদ হোসেন চৌধুরী মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ভল্টে রক্ষিত স্বর্ণে কোনো ধরনের হেরফের হয়নি, স্বর্ণকারের ভুলে, ভাষার গন্ডগোলে এটা হয়েছে।

আওলাদ বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রুটি বলতে যা আছে, নথিভুক্ত করার সময় ইংরেজি-বাংলার ভুল। এর বাইরে অন্য ত্রুটি বাংলাদেশ ব্যাংকের নেই।’

দুই মাস ধরে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পত্রিকায় সংবাদ ছাপা হওয়ার পর জানতে পারেন। এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। একই অবস্থা হয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ হ্যাক হওয়ার দীর্ঘদিন পর অর্থমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছিল।