প্রচ্ছদ শিক্ষাঙ্গন শিক্ষা খাতে বরাদ্দ ৫৩ হাজার ৬২ কোটি টাকা

শিক্ষা খাতে বরাদ্দ ৫৩ হাজার ৬২ কোটি টাকা

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা খাতের জন্য ৫৩ হাজার ৬২ কোটি টাকা বরাদ্দের সুপারিশ করেছেন। এই বরাদ্দ বিদায়ী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের তুলনায় ৬ হাজার ৩০২ কোটি টাকা বেশি।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপনকালে তিনি এ সুপারিশ করেন।

২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য ২২ হাজার ৪৬৫ কোটি টাকা, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জন্য ২৪ হাজার ৮৯৫ কোটি টাকা এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের জন্য ৫ হাজার ৭০২ কোটি টাকা বরাদ্দের সুপারিশ করা হয়েছে।

অন্যদিকে, বিদায়ী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য ২০ হাজার ৯৫ কোটি টাকা, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জন্য ২১ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের জন্য ৫ হাজার ১৪১ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল।

আজ জাতীয় সংসদে বাজেট বক্তৃতাকালে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘আমাদের প্রচেষ্টায় ২০১০ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে প্রাথমিক পর্যায়ে নিট ভর্তির হার ৯৪ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে প্রায় ৯৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ঝরে-পড়ার হার ৩৯ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ১৮.৮ শতাংশে নেমে এসেছে। এছাড়া, ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত ৪৬ : ১ থেকে ৩৯ : ১ এ নামিয়ে আনা এবং উপবৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৭৯ লাখ থেকে ১ কোটি ৩০ লাখে উন্নীত করা সম্ভব হয়েছে।’

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বিদ্যালয়বিহীন গ্রামে ১ হাজার ৪৯৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা হয়েছে এবং ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়েছে। পিটিআইবিহীন ১১টি জেলা সদরে পিটিআই নির্মাণ করা হয়েছে।

একই সময়ে প্রাথমিক ও প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ে ১ লাখ ৮ হাজার ২০০ শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং ১ লাখ ৩ হাজার শিক্ষকের চাকরি জাতীয়করণ করা হয়েছে। মূলধারার বাইরে ১১ হাজার ১৬২টি আনন্দ স্কুলে ৩ লাখ ১০ হাজার ৯৮৭ জন বিদ্যালয়বহির্ভূত ও ঝরে পড়া শিশু শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, সার্বজনীন ও মানসম্মত শিক্ষা প্রসারের উদ্দেশ্যে আমরা শুরুতেই ‘জাতীয় শিক্ষা নীতি-২০১০’ প্রণয়ন করি এবং তা বাস্তবায়নে সচেষ্ট হই।

শিক্ষার উন্নয়ন ও প্রসারে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, সৃজনশীল কর্মমুখী বিজ্ঞানভিত্তিক উৎপাদনসহায়ক শিক্ষার প্রসারের ওপর সরকার গূরুত্ব দিয়েছে।

তিনি বলেন, ই-বুক প্রচলন করা হয়েছে। ১২৫টি উপজেলায় উপজেলা আইসিটি ট্রেনিং অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ১৬০টি উপজেলায় প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলমান আছে। ৩১৫টি উপজেলায় একটি করে বেসরকারি বিদ্যালয়কে মডেল বিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হয়েছে। ২৬ হাজার ৬৫৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন করা হয়েছে।

তিনি জানান, তথ্যপ্রযুক্তি ও ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ৯০ হাজার শিক্ষক এবং ১ হাজার ৫০০ মাস্টার ট্রেইনারকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। টিচার্স পোর্টালে ৬২ হাজার কনটেন্ট তৈরি করা হয়েছে, যা ব্যবহার করে শিক্ষকরা নিজেরাই কনটেন্টের মানোন্নয়ন করতে পারছেন। মোট ৮ লাখ শিক্ষককে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি, শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ‘জাতীয় শিক্ষক শিক্ষা কাউন্সিল’ গঠন করা হয়েছে।