প্রচ্ছদ সারাদেশ রংপুর বিভাগ রাজারহাটে তিস্তা বুকে সোনা ফলাচ্ছে কৃষক

রাজারহাটে তিস্তা বুকে সোনা ফলাচ্ছে কৃষক

এ.এস.লিমন রাজারহাট (কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধিঃ- কুড়িগ্রামের রাজারহাটের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা নদীর পানি নেমে যাওয়ার পর বালির আস্তরণ পড়ে জমি নিষ্ফলা হবে এমন আশঙ্কায় এক সময় তিস্তার চরাঞ্চলের কৃষকদের ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছিল। ধু ধু বালুচরের পতিত জমি নিয়ে যে এলাকার মানুষ ছিল দিশেহারা, সে জমিতে এখন সোনা ফলাচ্ছে ৩টি ইউনিয়নের কয়েক হাজার কৃষক।
সরেজমিনে দেখা গেছে,উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউপির রামহরিরচর, ডাংরাহাটচর, বিদ্যানন্দচর ও ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের চর খিতাঁবখা, চর গতিয়াশাম,শিয়াঁল খাওয়ার চর এবং নাজিমখান ইউপির গাবুরহেলান চরে বাদাম, ডাল, মরিচ, বেগুন, শিম, কপি, পেঁয়াজ, রসুন ছাড়াও শত শত হেক্টর জমিতে বোনা হচ্ছে আলু আর ভুট্টা। বন্যার পর প্রকৃতি যেন তার সব ভালোবাসা উজাড় করে দিয়েছে এখানে। আর তা বেড়ে উঠছে ডগমগে হয়ে। এখন বাইরে থেকে ব্যবসায়ীরা এসে চরাঞ্চলে চাষে বিনিয়োগ করছেন। একরের পর একর জমি লিজ নিয়ে আলু চাষাবাদ করছেন। রবি শস্যের পাশাপাশি পুরোদমে ভুট্টা চাষ হচ্ছে। গোটা চরাঞ্চলের মানুষ আলু চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছে। অনেক ভূমিহীন কৃষক হয়েছেন জমির মালিক। অভাবকে দূরে ঠেলে চরাঞ্চলের মানুষ এগিয়ে চলছে সামনের দিকে। এ চিত্র রাজারহাট উপজেলার ৩টি ইউপির তিস্তা নদীর ৯টি চরাঞ্চলের।
শিয়াঁল খাওয়া চরগ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম দুই একর জমিতে এবার দেশী কুপরি জাতের আলুর আবাদ করেছেন। তিনি বলেন, গতবছর ৫০ শতক জমিতে আলুর আবাদ করেছিলাম। এতে বেশ ভালো আয় হয়েছিল। তাই এবার আরো বেশি জমিতে আলু রোপণ করছি।
চর গতিয়াশামের কৃষক আকবর হোসেন বলেন, আমি এবার চরাঞ্চলের আড়াই একর জমিতে আলু রোপণ করেছি। চরাঞ্চলের মাটি বালিমিশ্রিত। এ কারণে বৃষ্টি হলেও আলুর ক্ষতি হয় না। তাই আলু চাষে কোনো ভয় থাকে না।
কৃষকরা জানান, উৎপাদন খরচ, পরিবহন ব্যয় ও হিমাগার ভাড়া মিলে প্রতি বস্তা আলুতে ৯৫০ টাকা খরচ হয় আর বাজারে প্রতি বস্তা আলু ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি হয়।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃকামরুজ্জামান বলেন, মৌসুমের শুরুতে নতুন আলুর চাহিদা থাকায় বাজারে দাম চড়া থাকে। চরাঞ্চলে বালিমিশ্রিত মাটিতে আলুর ফলন ভালো হয়। তাই কৃষকরা আলু চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। উপজেলায় ৭হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আশা করি, চলতি মৌসুমে যে জমিতে কৃষকরা আলু লাগাচ্ছেন, তা ৭০-৭৫ দিনের মধ্যে তুলে বাজারে বিক্রি করতে পারবেন।