প্রচ্ছদ আজকের সেরা সংবাদ ময়নাতদন্তে ধর্ষণের আলামত, পাঁচ আসামি রিমান্ডে

ময়নাতদন্তে ধর্ষণের আলামত, পাঁচ আসামি রিমান্ডে

স্বর্ণলতা পরিবহনের চলন্ত বাসে নার্স শাহিনুর আক্তার তানিয়া (২৪) কে গণধর্ষণ শেষে হত্যাকা-ের ঘটনায় গ্রেপ্তার বাসচালক মো. নূরুজ্জামান নূরু (৩৯), হেলপার মো. লালন মিয়া (৩২) সহ পাঁচ আসামির প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৮দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আল মামুন রিমান্ড আবেদনের উপর শুনানি শেষে এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচ আসামিকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাজিতপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সারোয়ার জাহান জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রত্যেকের ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত থেকে রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর হওয়ার পর ওইদিন তাদের পুলিশ রিমান্ডে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাজিতপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সারোয়ার জাহান। সোমবার দিবাগতরাতে ঘটনার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরই পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে বাসের চালক মো. নূরুজ্জামান নূরু, হেলপার মো. লালন মিয়া, মো. রফিকুল ইসলাম রফিক (৩০), মো. খোকন মিয়া (৩৮) এবং মো. বকুল মিয়া ওরফে ল্যাংড়া বকুল (৫০) এই পাঁচজনকে আটক করে। তাদের মধ্যে বাসের চালক মো. নূরুজ্জামান নূরু গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার টোক নয়নবাজার ইউনিয়নের সালুয়াটেকি গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে, হেলপার মো. লালন মিয়া একই ইউনিয়নের বীর উজুলি গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে, মো. রফিকুল ইসলাম রফিক একই উপজেলার বাড়িসাবর ইউনিয়নের লোহাদি গ্রামের নজর আলীর ছেলে, মো. খোকন মিয়া কটিয়াদী উপজেলার ভোগপাড়া এলাকার দুলাল মিয়ার ছেলে এবং মো. বকুল মিয়া ওরফে ল্যাংড়া বকুল বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুর ইউনিয়নের নিলখী মৃত আব্দুস শাহিদ ভূইয়া। অন্যদিকে নিহত শাহিনুর আক্তার তানিয়া কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে। তিনি ঢাকার ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন ডিপ্লোমা নার্স ছিলেন।

তিনি অবিবাহিত ছিলেন।
এদিকে মঙ্গলবার রাতে নিহত শাহিনুর আক্তার তানিয়ার পিতা মো. গিয়াস উদ্দিন বাদী হয়ে বাসের চালক নূরুজ্জামান নূরু, হেলপার লালন মিয়া, হাসপাতালে তানিয়ার মরদেহ আনয়নকারী আল আমিন এবং পিরিজপুর বাসস্ট্যান্ড পরিচালনাকারী আব্দুল্লাহ আল মামুন এই চারজনের নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা বেশ কয়েকজনকে আসামি করে বাজিতপুর থানায় ধর্ষণ ও হত্যা মামলা দায়ের করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দায়ের করা এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয় বাজিতপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সারোয়ার জাহানকে। গ্রেপ্তার পাঁচ আসামির মধ্যে বাসের চালক মো. নূরুজ্জামান নূরু ও হেলপার মো. লালন মিয়া মামলার এজাহারভূক্ত আসামি হলেও মো. রফিকুল ইসলাম রফিক, মো. খোকন মিয়া ও মো. বকুল মিয়া ওরফে ল্যাংড়া বকুল এই তিনজনকে পুলিশ সন্দিগ্ধ আসামি।
অন্যদিকে মঙ্গলবার দুপুরের পর কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে নিহত তানিয়ার মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ময়নাতদন্তে ধর্ষণ ও আঘাতজনিত কারণে তানিয়ার মৃত্যুর আলামত মিলেছে বলে জানিয়েছেন ময়নাতদন্তকারী দলের চিকিৎসকেরা। এছাড়া ডিএনএ ও প্যাথলজিক্যাল টেস্টের জন্য আলামত সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ডা. রমজান মাহমুদ জানান, তিন সদস্য বিশিষ্ট মেডিকেল বোর্ড তানিয়ার মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন। ময়নাতদন্তে ধর্ষণের সুস্পষ্ট আলামত পাওয়া গেছে। ধর্ষণের পর মেয়েটিকে হত্যা করা হয়েছে।