প্রচ্ছদ খেলাধুলা মিথুন পারলে অন্যরা কেন ব্যর্থ?

মিথুন পারলে অন্যরা কেন ব্যর্থ?

সদ্য সমাপ্ত বিপিএলে শীর্ষ রান সংগ্রাহকের তালিকায় শীর্ষ দুই ও তিন নম্বরে ছিলেন যথাক্রমে তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচেই ব্যর্থ এই দুই তারকা। এই দুই ম্যাচে সর্বসাকূল্যে ১০ রান দেশসেরা ওপেনার তামিমের নামের পেছনে। অন্যদিকে, প্রথম ম্যাচে ৫ রানে আটক হওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে মুশফিক করতে পেরেছেন মাত্র ২৪ রান। আবার ব্যাট হাতে বিপিএলে দুই/তিনটা ম্যাচে ঝড় তোলা লিটন কুমার দাসকে খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না। দুই ম্যাচে সর্বসাকূল্যে তার রান ২। বিপিএল থেকে ফর্মে নেই মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচেও রান নেই তার ব্যাটে।

তবে বিপিএলে মুশফিকুর রহিম ও তামিম ইকবালের মতো বড় ইনিংস না খেলতে পারলেও ফর্মটা ধরে রেখেছেন মোহাম্মদ মিথুন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচেই যে বাংলাদেশ স্কোর ২০০ পেরিয়েছে, তা এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানের কল্যাণে। প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয় ম্যাচে তুলে নিয়েছেন অর্ধশতক। প্রথম ম্যাচে তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছিলেন বোলিং অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন। আর দ্বিতীয় ম্যাচে মিথুনকে সঙ্গ দিয়েছেন সাব্বির রহমান। প্রথম ম্যাচে দুর্ভাগ্যজনক আউটের শিকার সাব্বির এই ম্যাচে দলের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন। অথচ বিপিএলে খুব একটা হাসেনি তার ব্যাট। কিন্তু দীর্ঘদিন পর জাতীয় দলে ফিরে নিজের জায়গা ধরে রাখতে যেন বদ্ধপরিকর এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। বিপিএলে অফ ফর্মের কারণে একাদশে জায়গা হারানো সৌম্য সরকার নিউজিল্যান্ড সিরিজে বড় ইনিংস খেলতে না পারলেও দুই ম্যাচেই ইতোমধ্যে ৫২ রান সংগ্রহ করেছেন।

ফলে সৌম্য, সাব্বির, মিথুন ও সাইফুদ্দিনের ব্যাটে রান প্রমাণ করে নিউজিল্যান্ডের পিচে আহামরি তেমন কিছু নেই। কিন্তু বাংলাদেশি তারকা ব্যাটসম্যান যেন সেখানে গিয়ে নিজেদের হারিয়ে খুঁজছেন। ব্যাটে রান নেই প্রথম সারির কোনো ব্যাটসম্যানের। যা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া নানা কথা শোনা যাচ্ছে।

কেউ কেউ বলছেন, নিউজিল্যান্ডের পিচে সফরকারী যে কোনো দলের পক্ষে জয় পাওয়া কষ্টকর। কিন্তু তাদের দাবি, তার মানে এই নয় যে, আড়াইশ’ রানও করতে পারবে না বাংলাদেশ। তাদের দাবি, ঘরের মাঠে যে কোনো দলই শক্তিশালী। দল হারতেই পারে, কিন্তু তাই বলে কি নিউজিল্যান্ড শিবিরে কাঁপন ধরাতে পারবে না বাংলাদেশ-এটা তো মেনে নেওয়া যায় না। দুটি ম্যাচই কিউইরা অনায়াসে জিতে নিয়েছে। এবং দুটি ম্যাচেই সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন কিউই ওপেনার মার্টিন গাপটিল। তাহলে পিচ কেমন সেটা তো অনুমান করাই যাচ্ছে।

কেউ কেউ তারকা ক্রিকেটারদের অফ ফর্মের জন্য বিপিএলের দীর্ঘ সূচিকেও দায়ী করছেন। তাদের মধ্যে ম্যাসব্যাপী বিপিএল শেষ হতে না হতেই এমন একটা সিরিজের আয়োজন করা ঠিক হয়নি। তবে অন্যপক্ষটির প্রশ্ন, তাহলে সৌম্য, সাব্বির, মিথুন ও সাইফুদ্দিনরা কীভাবে রান পাচ্ছেন? তারাও বিপিএলে ঠাসা ব্যস্তসূচির মধ্যে ছিলেন। যদিও তাদের কারোই তামিম, মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহর প্রতিভা নিয়ে সংশয়।

তবে, সমালোচকদের একটি অংশ বলছে, একাদশে লিটন ও সৌম্যের সঙ্গে ইমরুল কায়েস থাকলে ওপেনিং জুটিতে আশাব্যঞ্জন কিছু একটা হতো পারতো। জিম্বাবুয়ের সিরিজে ব্যাক-টু ব্যাক-টু সেঞ্চুরির কথা তুলে ধরে তারা বলছে, ইমরুলের সঙ্গে অবিচার করা হয়েছে। আর বিপিএলে দু’তিনটি ম্যাচে জ্বলে উঠা লিটন কিংবা অনুজ্জ্বল সৌম্য সরকারের ওপর এতটা ভরসা রাখা ঠিক হয়নি।

কেউ কেউ আবারও নিউজিল্যান্ডের আবহাওয়াকে দায়ী করছেন। এর কারণ আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পারায় এমন হচ্ছে। এজন্য আরও আগে সেখানে যাওয়া উচিত ছিল বলে মনে করছেন তারা।