প্রচ্ছদ সারাদেশ ঢাকা বিভাগ মাদারীপুরের কালকিনিতে শুরু হয়েছে সপ্তাহ ব্যাপী কুন্ডু বাড়ী মেলা

মাদারীপুরের কালকিনিতে শুরু হয়েছে সপ্তাহ ব্যাপী কুন্ডু বাড়ী মেলা

মাদারীপুর প্রতিনিধি॥ মাদারীপুরের কালকিনি পৌর এলাকার দক্ষিণ গোপালপুর গ্রামের কুন্ডু বাড়িতে প্রতি বছর শ্রীশ্রী কালিপূজা ও দিপাবলী উৎসব উপলক্ষ্যে আয়োজন করা হয় মেলার। প্রায় আড়াইশ’ বছর ধরে দক্ষিণবঙ্গের ঐতিহ্যবাহি এই মেলাটি ‘কুন্ডু বাড়ির মেলা’ নামে পরিচিত।প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কাঠের আসবাবপত্রের সমারোহ ঘটে এই মেলায়।এতে মাদারীপুরসহ বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার লোকের ঢল নামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কালকিনি উপজেলার গোপালপুরের কুন্ডু বাড়িতে ১৭৮৩ সালের নভেম্বরে দিপাবলী ও শ্রীশ্রী কালিপূজা উপলক্ষ্যে দীননাথ কুন্ডু ও মহেশ কুন্ডু এই মেলার প্রবর্তন করেন।তাই কুন্ডুদের বংশের নামানুসারে মেলা নাম হয় কুন্ডবাড়ির মেলা।এই সময় দিপাবলীর পরের দিন এই অঞ্চলের বিভিন্ন কালি প্রতিমা জড়ো করা হত।এর মধ্যে যাদের প্রতিমা সর্বদিক থেকে সেরা হতো তাদের পুরস্কার প্রদান করা হত।সেই সময় চিত্তবিনোদনের জন্য পুতুল নাচ,কবিগান, জারি গান,পালাগান,নৌকাবাইচের আয়োজন করা হত। কালের বিবর্তনে পালাগান জারি গান,নৌকা বাইচ বন্ধ থাকলেও পুতুলনাচ ও নাগর দোলার আয়োজন এখনো আছে।বংশপরম্পরায় প্রতি বছর এই মেলা আয়োজন করা হয়ে থাকে।বর্তমানে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মেলা বসে।দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দোকানিরা বিভিন্ন পণ্যের পশরা সাজিয়ে বসে।কাঠের বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্রের জন্য এই মেলা বিখ্যাত।মেলায় মাদারীপুর ছাড়াও ফরিদপুর,রাজবাড়ী,গোপালগঞ্জ,শরিয়তপুর, বরিশাল,খুলনা,বাগেরহাট,মাগুরা,যশোর, নড়াইলসহ বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা তাদের মাটির, বাঁশের ও কাঠের তৈরি বিভিন্ন মালামাল ট্রাকযোগে বিক্রির জন্য নিয়ে আসে।
প্রতি বছরের তুলনায় এবার কাঠের ফার্নিচারের চাহিদা বেশি রয়েছে বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা।তবে দু’ একদিন পরে মেলা জমে উঠলে বিক্রি বাড়বে। মেলার এক দোকানী সাধন মন্ডল জানান, আমরা গত ১০ বছর ধরে এই মেলায় আসবাবপত্র বিক্রি করছি।
মেলা কমিটির সভাপতি ভজন কুন্ড জানান,আমাদের পূর্ব পুরুষ মাত্র ৪ একর জমির উপর এই মেলার আয়োজন করেন।পরে ধীরে ধীরে এই মেলা বিস্তৃতি হয়ে আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পরে। প্রতি বছর এই মোলায় কমপক্ষে ৭-৮ কোটি টাকার বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী বিক্রি হয়।মেলার শুরুতে দর্শনার্থী বেশি দেখা গেলেও বেচাকেনা কম হচ্ছে।তবে তা সামনে আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন ব্যবসায়ীরা।

কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মোফাজ্জেল হোসেন জানান,মেলা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার জন্য সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।