প্রচ্ছদ আর্ন্তজাতিক মমতার জনসভায় থাকছেন বিজেপিবিরোধী সব নেতাই, সমর্থন রাহুলের

মমতার জনসভায় থাকছেন বিজেপিবিরোধী সব নেতাই, সমর্থন রাহুলের

আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতের বিজেপি সরকারকে হঠাতে আগামীকাল শনিবার তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জির ডাকা জনসভায় হাজির হতে চলেছে বিজেপি বিরোধী শিবিরের প্রায় সব নেতাই। মমতার সভায় উপস্থিত থাকতে পারেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জনতা দল সেকুলার নেতা এইচ.ডি.দেবগৌড়া, সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব, অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) নেতা চন্দ্রবাবু নাইডু, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টি(আপ) নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল, কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী, সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও মহারাষ্ট্রের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী শরদ পাওয়ার, সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রফুল্ল প্যাটেল ও টি.আর বালু, রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) নেতা তেজস্বী যাদব, দ্রাবিড়া মুনেত্রা কাজাঘাম (ডিএমকে) সভাপতি এম.কে.স্ট্যালিন, জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) নেতা ওমর আবদুল্লা, সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী টি.আর.বালু, বহুজন সমাজবাদী পার্টি (বিএসপি)-র সাধারণ সম্পাদক সতীশ মিশ্র, ঝাড়খন্ডের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন, আরেক সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বাবুলাল মারান্ডি, অরুণাচল প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী গেগং আপাং, অসমের সাংসদ ও এআইডিইউএফ নেতা বদরুদ্দিন আজমল-এর মতো নেতারা।

মঞ্চে দেখা যেতে পারে শত্রুঘ্ন সিনহা, যশবন্ত সিনহা, অরুণ শৌরি-র মতো কয়েকজন বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা-সাবেক মন্ত্রীদেরও। তবে জাতীয় কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী এই সমাবেশে উপস্থিত না থাকলেও দলের পক্ষ থেকে থাকবেন লোকসভায় বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং অভিষেক মনু সিংভি। রাহুল নিজে অবশ্য বিজেপি বিরোধী সমাবেশকে সমর্থন জানিয়ে মমতাকে খোলা চিঠি লিখেছেন। মমতাকে দিদি বলে সম্বোধন করে রাহুল লেখেন ‘মমতা’দির সভার প্রতি সমর্থন জানাচ্ছি। আশা করছি আমরা বিরোধীরা সবাই একত্রিত হয়ে এক শক্তিশালী বার্তা দিতে সক্ষম হবো। জাতীয়তাবাদ এবং উন্নয়নকে রক্ষা করতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াতেই আমাদের আস্থা আছে। বিজেপি এবং পিএম মোদি ধর্মনিরপেক্ষতাকে ধ্বংস করতে চাইছেন। সেটা আমাদের ঠেকাতে হবে।’

কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড ময়দান থেকেই কেন্দ্রে বিজেপি বিদায়ের ঘণ্টা বাজানো হবে বলে ইতিমধ্যেই তৃণমূলের ট্যুইটার পেজে বার্তা দেওয়া হয়েছে। মমতা নিজেও জানান, ‘ইতিমধ্যেই বিজেপির বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। এটা হবে ঐক্যবদ্ধ ভারত সমাবেশ। এই মঞ্চ থেকেই ২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সূচনা হবে।’

আগামী ফেব্রুয়ারী মাসের মাঝামাঝি সময়ে লোকসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে। তার আগে এই সমাবেশ থেকে মোদি বিরোধী জোটের ছবিটা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে সেকথা বলাই যায়। নির্বাচনের আগে সম্ভবত এটিই হবে প্রথম ও শেষ বিরোধী মঞ্চের সমাবেশ।

রাজনৈতিক মহলের ধারণা মমতার এই সমাবেশ থেকে ঘুরিয়ে কংগ্রেসকেও একটা বার্তা দেওয়া যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তা হল বিরোধী দলগুলির এই মহাজোট যদি প্রতিটি রাজ্যে পৃথক লড়াই করে, তবে কংগ্রেসের চেয়েও বেশি আসন পেতে পারে। এর অর্থই হল পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তা ঠিক করার ক্ষমতা থাকবে বিরোধী মহাজোটের হাতে। এ প্রসঙ্গে মমতা জানান, ‘আঞ্চলিক দলগুলিই হবে নির্ণায়ক শক্তি। প্রতিটি রাজনৈতিক দলেই নিজস্ব অভিমত, দর্শন আছে তারা সেটা তুলে ধরবে। আমরা সকলকে সম্মান করি। আমি কারও ওপর আমার মতামত চাপিয়ে দেবো না।’

বর্তমানে দেশে মোদি ঝড়ও অনেকটা উধাও। বিভিন্ন জরিপেও দেখা গেছে ২০১৪ এর মতো বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিজেপির এবার ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা অনেক কম। সেই সম্ভবনা থেকেই মমতা বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে বিজেপি ১২৫-টির বেশি আসন পাবে না। সেটাও যদি তারা পায়, তবে বলব অনেক! তবে কংগ্রেস কত আসন পাবে, তা আমি বলতে পারব না।’ তৃণমূল নেত্রীর অভিমত, ‘সবদিক থেকেই এই জনসভা ঐতিহাসিক হবে।’

শনিবার ব্রিগেড জনসভায় প্রায় পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষের সমাগম হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। সমাবেশে মোট পাঁচটি মঞ্চ করা হচ্ছে। মূল মঞ্চে থাকবেন মমতাসহ জাতীয় নেতারা। বাকী চারটির কোথাও রাজ্যের নেতারা, কোথাও বিনোদন জগতের সেলিব্রিটিরা থাকবেন। দর্শকদের সুবিধার্থে মাঠের বিভিন্ন প্রান্তে বসানো হয়েছে এলইডি স্ক্রিন। আটোসাঁটে করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। নিরাপত্তা বাহিনীর পাশাপাশি ড্রোনের সাহায্যেও নজরদারি চালানো হবে।