প্রচ্ছদ আজকের সেরা সংবাদ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে শতাধিক গ্রামে আজ ঈদ

মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে শতাধিক গ্রামে আজ ঈদ

সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে আজ শুক্রবার বাংলাদেশের শতাধিক গ্রামে উদযাপন করা হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর।

আজ শুক্রবার চাঁদ দেখা গেলে কাল ঈদ উদযাপন করবে দেশের বেশির ভাগ মানুষ। কিন্তু সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে এক দিন আগে চাঁদ দেখা যাওয়ায় শুক্রবার ঈদ উদযাপিত হচ্ছে। আর তাদের সঙ্গে মিল রেখে দেশের কয়েকটি জেলার শতাধিক গ্রামে আজ ঈদ উদযাপন করা হচ্ছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামের আনোয়ারাসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৪০ গ্রামে ঈদ উদযাপন করা হচ্ছে। এ ছাড়াও চাঁদপুরের ৪০, পটুয়াখালীর ২২, জামালপুরের ১০, পিরোজপুরের ৮ ও শরীয়তপুরের ৫ গ্রামে আজ ঈদ উদযাপন করা হচ্ছে।

প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

চাঁদপুর: চাঁদপুরের ৪০টি গ্রামে আজ শুক্রবার উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর। এসব গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মুসল্লি সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে ঈদ জামাতে নামাজ পড়েন। চাঁদপুরের যেসব গ্রামে ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা, সমেশপুর, অলিপুর, বলাখাল, মনিহার, জাকনী, প্রতাবপুর, বাসারা; ফরিদগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপুর, কামতা, গল্লাক, ভুলাচোঁ, সোনাচোঁ, উভারামপুর, উটতলি, মুন্সিরহাট, কাইতাড়া, মূলপাড়া, বদরপুর, আইটপাড়া, সুরঙ্গচাইল, বালিথুবা, পাইকপাড়া, নূরপুর, সাচনমেঘ, শোল্লা, হাঁসা, গোবিন্দপুর; মতলব উপজেলার দশানী, মোহনপুর, পাঁচানী, কচুয়াসহ শাহরাস্তি উপজেলার কয়েকটি গ্রাম।

সকাল ১০টায় চাঁদপুরের বদরপুর এলাকায় ঈদ জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা মোহাম্মদ আবু হানিফ। ঈদকে ঘিরে এসব গ্রামে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।

চট্টগ্রাম: দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারা, সাতকানিয়া, চন্দনাইশ, পটিয়া, লোহাগাড়া ও বাঁশখালী উপজেলার প্রায় ৪০ গ্রামের অনেকেই আজ শুক্রবার ঈদ উদযাপন করছেন। সাতকানিয়া উপজেলার মির্জাখীল দরবার শরিফের অনুসারীরা ২০০ বছর আগে থেকেই সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করছেন।

মির্জাখীল দরবার শরিফের অনুসারী সাতকানিয়া উপজেলার মির্জাখীল, সোনাকানিয়া, গারাঙ্গিয়া ও গাটিয়াডাঙ্গা; লোহাগাড়া উপজেলার কলাউজান, বড়হাতিয়া, পুটিবিলা চরম্বা ও চুনতি; বাঁশখালী উপজেলার জালিয়াপাড়া, ছনুয়া, মক্ষিরচর, চাম্বল, শেখেরখীল, ডোংরা; আনোয়ারা উপজেলার তৈলারদ্বীপ, বরুমচড়া; বাঁশখালীর কালিপুর; পটিয়া উপজেলার হাইদগাঁও, বাহুলী, ভেল্লাপাড়াসহ ৪০ গ্রামের দুই লাখের বেশি মানুষ ঈদ উদযাপন করেছেন। সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরিফে ঈদের নামাজের ইমামতি করেছেন মোহাম্মদ মকছুদুর রহমান।

সকাল সাড়ে আটটায় তৈলারদ্বীপ মাজার শরিফ মাঠে আনোয়ারার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়া বরুমচড়ায় আরও দুটি ঈদ জামাত হয়েছে।

বরুমচড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবু জাফর চৌধুরী বলেন, সৌদি আরবের দিনক্ষণ অনুসারে শুক্রবার ঈদ পালন করা হয়। বোলায়খালী, হাটহাজারী, সন্দ্বীপ, ফটিকছড়ি, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি, কক্সবাজার, টেকনাফ, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, চন্দনাইশের বেশ কয়েকটি গ্রামে মির্জাখীল দরবার শরিফের অনুসারীরা একই নিয়মে ঈদ উদযাপন করেছেন।

পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর ২২টি গ্রামের পাঁচ সহস্রাধিক পরিবার আজ শুক্রবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে। সকাল ৯টায় পটুয়াখালীর সদর উপজেলার বদরপুর গ্রামের বদরপুর দরবার শরিফ প্রাঙ্গণের বদরপুর দরবার শরিফ জামে মসজিদে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ঈদের জামাতের ইমামতি করেন দরবার শরিফের ইমাম শফিকুল ইসলাম গনি।

পটুয়াখালীর সদর উপজেলার বদরপুর গ্রামের বদরপুর দরবার শরিফের পরিচালক মোহাম্মদ নাজমুস সায়াদাত আখন্দ বলেন, এ বছর জেলার সদর উপজেলার বদরপুর ও ছোট বিঘাই; গলাচিপা উপজেলার সেনের হাওলা, পশুরিবুনিয়া, নিজ হাওলা ও কানকুনিপাড়া; বাউফল উপজেলার মদনপুরা, শাপলাখালী, বগা, ধাউরাভাঙ্গা, সুরদী, সাবুপুরা, ও আমিরাবাদ এবং কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া, নিশানবাড়িয়া, মরিচবুনিয়া, উত্তর লালুয়া, মাঝিবাড়ি, টিয়াখালীর ইটবাড়িয়া, পৌরশহরের নাইয়াপট্টি, বাদুড়তলী, মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের সাফাখালী এই ২২ গ্রামের পাঁচ হাজারোর বেশি পরিবার আগাম ঈদ উদযাপন করছে।

জামালপুর: জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে আজ শুক্রবার সকাল ৯টায় পৌর শহরের উত্তর বলারদিয়ার গ্রামের আজিম উদ্দিন মাস্টারের বাড়ির ঈদগা মাঠে ১০টি গ্রামের চার শতাধিক মুসল্লি ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন।

উত্তর বলারদিয়ার জামে মসজিদ মাঠের ইমাম আজিম উদ্দিন বলেন, ১০ গ্রামের ৪ শতাধিক মুসল্লি ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন। মুলবাড়ি, বলারদিয়ার. সাতপোয়া, সাঞ্চারপাড়, পঞ্চপীর, পাখাডুবি, বালিয়া, বনগ্রাম, হোসনাবাদ ও বাউসী গ্রামে আগাম ঈদ হচ্ছে।

বলারদিয়ার গ্রামের শাহা আলী (৬২) বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে আমরা এক যুগ ধরে ঈদুল ফিতরের নামাজ পড়ে আসছি।

পিরোজপুর: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া ও নাজিরপুর উপজেলার আটটি গ্রামের ৬০০ পরিবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে। মঠবাড়িয়ার সাপলেজা ইউনিয়নের ছয় গ্রামের পাঁচ শতাধিক পরিবার ঈদ পালন করছে। সকাল সাড়ে নয়টায় সাপলেজা ইউনিয়নের কচুবাড়িয়া গ্রামের হাজি ওয়াহেদ আলী হাওলাদার বাড়ি ও সকাল সাড়ে ১০টায় সাপলেজা ইউনিয়নের ভাইজোড়া গ্রামের খোন্দকার বাড়িতে ঈদের দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন যথাক্রমে মুন্সী শাহ আলম ও মৌলভি হায়দার আলী।

জেলার নাজিরপুর উপজেলার শেখ মাটিয়া ইউনিয়নের লঘুনাথপুর ও খেজুরতলা গ্রামের ৭০ পরিবার আজ ঈদ উদযাপন করছে। স্থানীয় খেজুরতলা বাজারের একটি মসজিদে সকাল নয়টায় তারা ঈদের নামাজ আদায় করে।

সুরেশ্বর পীরের অনুসারী মঠবাড়িয়া উপজেলার কচুবাড়িয়া গ্রামের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ফরহাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে রোজা রেখেছি এবং আজ সৌদি আরবের সাথেই ঈদ উদযাপন করছি।’

শরীয়তপুর: শরীয়পুরের নড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বরসহ গ্রামের মানুষ আজ ঈদ উদযাপন করছেন। এর মধ্যে সুরেশ্বর দরবারে দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়।