প্রচ্ছদ সারাদেশ খুলনা বিভাগ মণিরামপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর ভেঙ্গে সিঁড়ি বানাতে মরিয়া সেলিম সরদার

মণিরামপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর ভেঙ্গে সিঁড়ি বানাতে মরিয়া সেলিম সরদার

মো:মনোয়ার হোসেন, যশোর জেলা প্রতিনিধি : ‘আমাগের ঘর ভাঙ্গে উপরে (ভবনে) উঠার সিঁড়ি বানাতি মরিয়া হয়ে উঠেছে সেলিম সরদার। এজন্যি আমাগের ঘর ঘিরে রাখেছে। আশ্রয়ন প্রকল্প বানানোর সময় সেনাবাহিনীর সদস্যগের সারি করে লাগানো ফল ধরা নারকেল গাছ কাটে দেছে। এহেনে (এখানে) কোন রহম মাথা গুজার ঠাঁই হয়েছে। তাই যদি দখল করতি চাই তালি (তাহলে) আমরা যাবো কনে’। এভাবে আকুতি করে কথাগুলো বলছিলেন যশোরের মণিরামপুরের প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা মঞ্জুরি বিশ্বাস।
শুধু মঞ্জুরি বিশ্বাস না, শিখা বসু, দিপ্ত বিশ্বাস, মিলন রায়, আবুল বাশার দফাদারসহ সেখানে বসবাসকারি ৪০ ঘরের বাসিন্দাদের মনে এখন অজানা শংকা। বিচারের আশায় স্থানীয় প্রভাবশালীদের কাছে ধর্ণা দিয়েও কোন সাড়া মেলেনি। উল্টো তাদের মারধরের হুমকি দিচ্ছে সেলিম ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। প্রতিকারে মণিরামপুরের ইউএনও’র দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন আশ্রয়ণের বাসিন্দারা।
সরেজমিন সেখানে গেলে দেখা যায়, দুই উপজেলার (মণিরামপুর ও ডুমুরিয়া) সীমানা ঘেষা আশ্রয়ণ প্রকল্প তৈরির সময় সেনাবাহিনীর লাগানো সারিবদ্ধ নারিকেল গাছের কয়েকটি ঘিরে রেখেছে সেলিম।
এ সময় উপস্থিত বাসিন্দরা জানান, নারিকেল গাছ লাগানো পর্যন্ত সীমানা নির্ধারণ করে দিয়ে গেছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। প্রায় ৫৫ শতক ১ এর খাস খতিয়ান জমি পরে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের অন্তর্ভুক্তি হয়। যা ২০০৭ সালে আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রতি পরিবারের নামে বন্দোবস্ত দেয়া হয়।
খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার চেঁচুড়িয়া গ্রামের মৃত জোনাব আলীর সরদারের ছেলে সেলিম সরদার স্থানীয় একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি পৈত্রিক জমিতে (ডুমুরিয়া অংশে) ভবন তৈরি করছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তখন সেনাবাহিনী কিভাবে গাছ লাগিয়েছিলো আমিও বুঝি, আপনারাও বোঝেন। স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু জানান, তার সময়ই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রকল্পটি পাশ করিয়ে জায়গাটি মাটি ভরাট করা হয়েছিলো। ওই সময় জমি নিজেদের দাবি করে সেলিম গং প্রচন্ড বাঁধা দিলেও স্বপক্ষে কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হয়।
ডুমুরিয়া উপজেলার এসিল্যান্ড নাজমুল ইসলাম জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পের বিষয়টি ইউএনও স্যার দেখভাল করেন।
ইউএনও (ডুমুরিয়া) শাহনাজ বেগম জানান, এ ব্যাপারে তার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। করলে খতিয়ে দেখা হবে।
স্থানীয় তহসীলদার (মণিরামপুর) আমিনুর রহমান জানান, এ ব্যাপারে সীমানা নির্ধারণে এসিল্যান্ডে স্যারের কাছে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মশিয়ূর রহমান জানান, সীমানা নির্ধারণে দুই উপজেলার (মণিরামপুর ও ডুমুরিয়া) এসিল্যান্ডের মাধ্যমে সার্ভেয়ার দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
মণিরামপুরের ইউএনও আহসান উল্লাহ শরিফী অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান , অচিরেই সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইয়েমা হাসানের মাধ্যমে নিরসনের উদ্যোগ নেয়া হবে।