প্রচ্ছদ আজকের সেরা সংবাদ বাস নেই রাস্তায়, হেঁটেই গন্তব্যে রাজধানীবাসী

বাস নেই রাস্তায়, হেঁটেই গন্তব্যে রাজধানীবাসী

রাস্তায় গণপরিবহন নেই বললেই চলে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও মিলছে না বাস ও সিএনজি অটোরিকশা। যা দুই একটা রিকশা দেখা মিলছে তাতেও ভাড়া খুব বেশি। অনেকে বাধ্য হয়ে রিকশায় উঠছেন। কেউ আবার ভ্যানে চড়ছে। কিন্তু বেশির ভাগ মানুষকে হেঁটেই নিজ গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর মতিঝিল, মৌচাক, মালিবাগ, মগবাজার, বাংলামটর, ফার্মগেট, মিরপুর এলাকায় ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। গেলো রোববার রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের দুই বাসের রেষারেষিতে মৃত্যু হয় শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া আক্তার মীম ও আব্দুল করিমের। এর পর তার সহপাঠীরা আন্দোলনে নামে। ধীরে ধীরে এ আন্দোলন পুরো রাজধানীতে ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনে প্রায় কয়েক শতাধিক গাড়ি ভাংচুর হয়। পাশাপাশি কয়েকটি গাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

বাস মালিকরা বলছেন, ঢাকার বেশিরভাগ গণপরিবহন যেহেতু ব্যক্তি মালিকানাধীন, তাই মালিকরা লোকসানের আশঙ্কায় এসব পরিবহন বের করেননি পথে। এবিষয়ে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ আরটিভি অনলাইনকে বলেন, ভাংচুর ও অগ্নিকাণ্ডের কারণে রাস্তায় যানবাহন নামাচ্ছেন না পরিবহন মালিকরা। রাজধানীতে প্রতিদিন ৫ হাজার বাস চলে।  কিন্তু ভাংচুর ও অগ্নিকাণ্ডের কারণে লোকসানের আশঙ্কায় বাস নামাচ্ছেন না মালিকরা। ফলে রাস্তায় পরিবহন সংকট দেখা দিয়েছে।

তিনি বলেন, গেল কয়েক দিনে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে কয়েক শতাধিক বাস ভাংচুর করা হয়। আগুন দেয়া হয় বেশ কয়েকটি বাসে। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো যৌক্তিক। কিন্তু শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কাজে লাগিয়ে একটি মহল গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটাচ্ছে। যা মোটেই কাম্য নয়। ভাংচুর ও জ্বালাও পোড়ায় বন্ধ হলে ফের পরিবহন চলাচল স্বাভাবিক হবে বলেও জানান সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব।

এদিকে মতিঝিলে ঘণ্টাব্যাপী দাঁড়িয়ে বাস না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সুজিত রায়। তিন বলেন, বাস নেই। থাকলেও ওঠার উপায় নাই। আন্দোলনে সব বাস হাওয়া হয়ে গেছে। মগবাজারে সুমন নামে এক বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা আরটিভি অনলাইনকে বলেন, গত চার দিন ধরেই কষ্ট হচ্ছে। তবু শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে। রাস্তায় যান চলাচল করছে না। কিন্তু এতে আক্ষেপ নাই। বাচ্চারা যৌক্তিক আন্দোলন করছে। দু:খ এটাই, আমরা প্রতিমাসে নিজের ঘামের টাকা থেকে দেশে ট্যাক্স দিয়ে থাকি। আর ট্যাক্সের কেনায় টাকা সরকারি গাড়িগুলো ভাড়া দেয়া হয়েছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে। বাস মালিকদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করলে তারা অঘোষিত ধর্মঘট দেয়।

মৌচাক এলাকায় যানজটে আটকে থাকা শিবলু আহমেদ নামে  এক বাসযাত্রী বলেন, এমন কাণ্ড কোথাও দেখা যায় না। পরিবহন খাত নিয়ে কোনও কথা বললেই বা অভিযান দিলেই রাস্তায় গাড়ি থাকে না। তাতো একদিন নয় নিত্যদিন। আব্দুর রহিম নামে আরও এক বাসযাত্রী আরটিভি অনলাইনকে জানান, সরকারি পরিবহন সংখ্যা নাই বললেই চলে। আর যা আছে তা খুবই কম। যদি সরকারি গাড়ি বেশি থাকতো তাহলে এমন হতো না।