প্রচ্ছদ শিক্ষাঙ্গন প্রশাসনের ভুল: মেধা তালিকায় দ্বিতীয় হয়েও ফল জানলো না ভর্তিচ্ছু

প্রশাসনের ভুল: মেধা তালিকায় দ্বিতীয় হয়েও ফল জানলো না ভর্তিচ্ছু

রোস্তম আলী রাজু জাবি প্রতিনিধি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয় হয়েও ফলাফল জানতেন না ফারহান মাসুদ নামের এক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী। আক্টোবর মাসের প্রথম দিকে ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট ঘোষণা করা হলেও ফারহান তার রেজাল্ট পেয়েছেন নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে।
ফলাফল প্রকাশে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভুলের কারণে এই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন ফারহানসহ ২৫ শিক্ষার্থী।২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তির জন্য মৌখিক পরীক্ষায় নির্বাচিত হয়েও ফলাফল জানতে পারেননি তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিকী অনুষদের ব্যবসায় শিক্ষা শাখার ফলাফলে এ অসংগতি ধরা পরেছে। এ ঘটনায় প্রশাসনের উদাসীনতাকে দায়ী করছে সংশ্লিষ্টরা।
রেজিস্ট্রার কার্যালয় সূত্র জানায়, গত ৯ অক্টোবর জাবির ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের কলা ও মানবিকী অনুষদের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে প্রশাসন। এই অনুষদে প্রত্যেকটি শাখার শিক্ষার্থীদের আলাদাভাবে ফল প্রকাশ করা হলেও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার পূর্ণাঙ্গ ফলাফল প্রকাশিত হয়নি। এ বিভাগের ২১টি আসনের বিপরীতে ২০৯ জন শিক্ষার্থীর ফল প্রকাশ করার কথা থাকলেও ১৮৪ জনের ফল প্রকাশ করা হয়।বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকদের নজরে আসে।
পরে সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে জানা যায়, ব্যবসায় শিক্ষা শাখার ফলাফল দুই পাতায় প্রকাশিত হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে শুধু প্রথম পাতা আপলোড করা হয়। ফলে দ্বিতীয় পাতায় থাকা ২৫ জন ভর্তিচ্ছুর ফলাফল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়নি।এজন্য তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হতে পারেন নি।এই ২৫ জনের মধ্যে মেধাতালিকায় দ্বিতীয়, ১৩তম, ১৫তম, ২৬তম, ৪০তম, ৪৭তম, ৪৯তম স্থান অধিকারী শিক্ষার্থীরা রয়েছেন। তবে কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন অফিসের নোটিশ বোর্ডে পূর্ণাঙ্গ ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন অনুষদটির ডিন।
এ বিষয়ে কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোজাম্মেল হক বলেন আমার কাছে ফলাফলের যে কপিটি এসেছিলো তাতে কোন অপূর্ণতা ছিলো না। তবে ওয়েবসাইটে অপূর্ণাঙ্গ ফলাফল প্রকাশের ঘটনা জানার পরই আমি পূর্ণাঙ্গ ফলাফল প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি ।
মেধা তালিকায় দ্বিতীয় হওয়া ফারহান মাসুদ বলেন গতকাল মঙ্গলবার একটি এসএমএম আসে। তখন আমি জানতে পারি সি ইউনিটে দ্বিতীয় হয়েছি। এর আগে ফল প্রকাশের পর ওয়েবসাইটে আমার রোল খুজে পাইনি। তবে গতকালের এসএমএসের পর ওয়েবসাইটে গিয়ে আমি আমার রেজাল্ট পেয়েছি।
মো. জুলকারনাইন বলেন অনেক ভালো পরীক্ষা দিয়েছিলাম। কিন্তু ওয়েবসাইটের ফলাফলে নিজের নাম না আসায় হতাশ হয়েছিলাম।এরপরও অনেক ভালো গতকাল এসএমএসএর মাধ্যমে আমি ফলাফল জানতে পারি।
ভর্তি পরীক্ষার প্রযুক্তি বিভাগের দায়িত্বে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইটি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এম শামীম কায়সার সি ইউনিটের ব্যবসায় শিক্ষা শাখার ফলাফল দুই পাতায় প্রকাশিত হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু ভুলবশত একটি পাতা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। ফলে ২০৯ জন শিক্ষার্থী মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হলেও ওয়েবসাইটে ১৮৪জন শিক্ষার্থীর তালিকা প্রকাশিত হয়েছিলো।
ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল তৈরির দায়িত্বে থাকা সফটওয়্যার কোম্পানী অন্যরকম সফটওয়্যার লিমিটেডের সিনেট কর্মকর্তা মো. সবুজ পারভেজ বলেন আমরা ফলাফলের একাধিক কপি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শাখায় পাঠিয়েছি। আইটি শাখায় যে কপিটি দেওয়া হয়েছে সেখানে হয়তো ভুলবশত একটি পাতা কমে গেছে। এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করা হয়নি। এর জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, ‘বিষয়টি জানতাম না। বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে