প্রচ্ছদ সারাদেশ রংপুর বিভাগ পীরগঞ্জে ইট ভাটায় কৃষি জমির টপ সয়েল ও কাঠখড়ির ব্যবহার চলছেই

পীরগঞ্জে ইট ভাটায় কৃষি জমির টপ সয়েল ও কাঠখড়ির ব্যবহার চলছেই

বখতিয়ার রহমান, পীরগঞ্জ( রংপুর) ঃ রংপুরের পীরগঞ্জে সরকারী নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই ইট ভাটা গুলিতে জ¦ালানী হিসেবে কাঠ খড়ি ও কৃষি জমির টপ সোয়েল ব্যবহার চলছেই । প্রশাসনের উদাশীনতায় এ কাঠ খড়ির ব্যবহারে এক দিকে যেমন উপজেলার সর্বত্রই তীব্র জ¦লানী সংকটের সৃষ্টি হয়েছে অন্য দিকে জমির উর্বরা শক্তিও হ্রাস পাচ্ছে ।
বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, পীরগঞ্জে বরÍমানে ৩৫ টির মত ইট ভাটা রয়েছে । আর যে ভাটা গুলির বেশীর মাইলকই ইট ভাটা স্থাপনের যথায়থ প্রক্রিয়া অনুসরন করেননি । ফলে ইট ভাটা গুলিতে ইট পোড়ানোর ক্ষেত্রে সকল বিধি বিধান উপেক্ষিত হয়ে পড়েছে । ১৯৮৯ সালের ইট পোড়ানো অধ্যাদেশ আইনানুযায়ী ইট ভাটার লাইসেন্স প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ইট ভাটার জন্য নির্ধারিত ফরমে ফিস প্রদান করিয়া জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন পেশ করিতে হইবে । আবেদন প্রাপ্তির পর জেলা প্রশাসক কর্তৃক মনোনীত একজন প্রতিনিধি, যিনি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নি¤েœ হইবেন না, সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসক, সংশ্লিষ্ট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বা তৎকর্তৃক মনোনীত কোন বন কর্মকর্তা পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয় বা জেলা কার্যালয় কর্তৃক মনোনীত কোনকর্মকর্তা, যিনি উহার সদস্য-সচিব হইবেন। তাদেও সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি আবেদনে উল্লেখিত বিষয় গুলির সত্যতা স¤পর্কে সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক জেলা প্রশাসকের নিকট প্রতিবেদন দাখিল করিবেন । প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর জেলা প্রশাসক ক্ষেত্র মতে আবেদনকারীকে বিধিতে নির্ধারিত পদ্ধতিতে লাইসেন্স প্রদান করিবেন ।
আর ইট পোড়ানোর জন্য প্রদত্ত লাইসেন্স, উহা প্রদানের তারিখ হইতে, তিন বছরের জন্য বৈধ থাকিবে। তবে উক্ত মেয়াদের মধ্যে লাইসেন্স প্রাপ্ত ব্যক্তি যদি এই আইনের কোন বিধান বা তদন্তাধিন প্রণীত কোন বিধি বা লাইসেন্সে উল্লেখিত কোন শর্ত লংঘন করেন, তাহা হইলে জেলা প্রশাসক উক্ত লাইসেন্স প্রাপ্ত ব্যক্তিকে প্রস্তাবিত লাইসেন্স বাতিলের বিরুদ্ধে কারণ দর্শাইবার পর লাইসেন্স বাতিল করিতে পারিবেন ।
কিন্তু পীরগঞ্জে যত্রছত্র ই্ট ভাটা নির্মান ও যে ভাবে ইট পোড়ানো হচ্ছে তাতে আইনের সকল বিধিই উপেক্ষিত হয়ে পড়েছে । আবাসিক এলাকা ও ফলের বাগান হইতে তিন কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে কোন ইটের ভাঁটা স্থাপন করার লাইসেন্স প্রদান করা যাইবে না মর্মে আইনে উল্লেখ থাকলেও পীরগঞ্জের কোন ভাটার ক্ষেত্রেই এ আইন প্রযোজ্য হচ্ছে না ।
ভুমি মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত ১৯৯২ সালের প্রজ্ঞাপনে “কৃষিজমিতে ইট ভাটা নির্মাণ দন্ডনীয় অপরাধ ” উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও পীরগঞ্জের কোন ইটভাটায় এ নিয়ম-নীতি মানা হচ্ছে না। উল্টো কৃষি জমি নষ্ট করে যত্রতত্র প্রতিযোগীতা মুলক ভাবে ইটভাটা গড়ে উঠছে। এ সব ইটভাটায় আবাদী জমির উপরি অংশের উর্বর মাটি (টপ সয়েল) ব্যবহারের কারণে কৃষি প্রধান এ এলাকার জমির মাটি উৎপাদন শক্তি হারিয়ে ফেলছে।
এ ছাড়া আইনে বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি ইটভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে কোন জ্বালানি কাঠ ব্যবহার করিতে পারিবেন না। অথচ প্রতি দিনেই ভাটা গুলিতে হাজার হাজার টন কাঠ খড়ি উজার হচ্ছে জ¦ালানী হিসেবে । আইনে আরও বলা হয়েছে, বিশেষ কোন স্থাপনা, রেলপথ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও ক্লিনিক, গবেষণা প্রতিষ্ঠান বা অনুরূপ কোন স্থান বা প্রতিষ্ঠান হইতে কমপক্ষে ১ কিলো মিটারদূরত্বের মধ্যে ভাটা স্থাপন করা যাবে না ।
অথচ পীরগঞ্জে সকল নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে নুতন ভাটা স্থাপন ও ইট পোড়ানো চলছেই । ভাটা গুলির সাবিক এ অবস্থার পরিপেক্ষিতে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছে , সরকারী কর্মকর্তারা কেন এ ব্যাপারে নীরব । রহস্যটা কি ?