প্রচ্ছদ সারাদেশ খুলনা বিভাগ পা হারানো সেই নিপা ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেলো

পা হারানো সেই নিপা ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেলো

মো:মনোয়ার হোসেন, জেলা প্রতিনিধি, যশোর : হাসপাতালের বিছানায় বাবা-মায়ের সঙ্গে কাঁদছে গাড়িচাপায় পা হারানো নিপা। যে সংবাদে আনন্দে আত্মহারা হওয়ার কথা ছিল গোটা পারিবারের; সেই সংবাদেই শুরু হয়েছে আহাজারি! নিপা ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে! এই সংবাদ পেয়ে কাঁদতে শুরু করলেন নিপার বাবা রফিকুল ইসলাম। খবর শুনে তার সঙ্গেই কাঁদতে শুরু করলেন নিপার মা মুসলিমা বেগমও। কারণ পাঁচদিন আগে পল্লী বিদ্যুতের পিকআপ চাপায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে নিপার একটি পা।রোববার বিকেলে প্রকাশিত প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায় নিপা ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে। শার্শা বুরুজবাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলাম ওই সুসংবাদটিই মোবাইল ফোনে জানান নিপার বাবাকে। কিন্তু এ খুশির খবরটি যেন তাদের পরিবারের বিষাদকে আরও উস্কে দেয়। হতাশার মাঝে খুশির খবরে আটকে রাখতে পারেননি চোখের পানি।যশোরের শার্শা উপজেলার বুরুজবাগান পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির মেধাবি শিক্ষার্থী মেফতাহুল জান্নাত নিপা (১১)। গত বুধবার সকালে স্কুলে যাবার পথে পল্লী বিদ্যুতের একটি পিকআপ ভ্যান তাদের বহনকারী স্কুলভ্যানকে চাপা দেয়। এতে গুরুতর আহত হয় নিপাসহ আরও তিন শিক্ষার্থী। এরমধ্যে নিপাকে হাসপাতালে ভর্তির পর তার ডান পা কেটে ফেলতে হয়। জ্ঞান ফেরার পর থেকে গত পাঁচদিন যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বেডে শুয়ে নিপা নিজের কেটে ফেলা পায়ের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকছে আর দু’চোথে অঝরে ঝরছে অশ্রু। মাঝেমাঝেই বাবা-মায়ের কাছে একের পর এক প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছিল। বাকরূদ্ধ বাবা-মা নীরবে চোখের পানি ফেলা ছাড়া প্রশ্নের কোনো জবাব দিতে পারছিলেন না।নিপা গতবছর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার পর বুরুজবাগান পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। ৬ষ্ঠ শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষায়ও প্রথম হয়েছিল সে। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল শার্শা বুরুজবাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে।এদিকে বুধবারের দুর্ঘটনার পর পাঁচদিন পার হলেও ধরা পড়েনি পল্লী বিদ্যুতের গাড়িচালক। পুলিশ অবিলম্বে অভিযুক্ত পিকআপ চালককে আটকের আশ্বাস দিলেও বাস্তবায়ন হয়নি এ আশ্বাসের।