প্রচ্ছদ জাতীয় ‘পাঁচ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির চেয়ে স্কুলের দুর্নীতিই বেশি গুরুত্বপূর্ণ’

‘পাঁচ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির চেয়ে স্কুলের দুর্নীতিই বেশি গুরুত্বপূর্ণ’

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, ‘দর্নীতি করে কারও পার পেয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। আমরা চাই একটি দুর্নীতিমুক্ত সমাজ উপহার দিতে। একইসঙ্গে তিনি বলেন, পাঁচ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির চেয়ে স্কুলের দুর্নীতিই দুদকের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

রবিবার দুপুরে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের ‘কৌশলপত্র-২০১৯’ নিয়ে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, অনেকে প্রশ্ন তোলেন, দুদক পাঁচ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি দেখবে না, স্কুলের দুর্নীতি দেখবে? আমার কাছে মনে হয়, স্কুলটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটা জাতির ভবিষ্যত ধ্বংস করে। এটা সবটাই যার যার দর্শনের ব্যাপার।

সব দুর্নীতি আমাদের ম্যান্ডেট না উল্লেখ করে কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘সরকারের অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। দুদকের মূলত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি দেখার কথা। তবে আমরা সরকারকে সময়ে সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশ দিতে পারি। আমরা একটি ইথিক্যাল কোড অব কন্ট্রাক্ট তৈরি করার চেষ্টা করছি। যেটা সরকারের হাতে তুলে দেব। কান্ট্রিওয়াইড বাস্তবায়ন হবে।’

দুর্নীতিবাজদের সতর্ক করে ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘দুর্নীতি করে কারও পার পেয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। আমরা চাই একটি দুর্নীতিমুক্ত সমাজ উপহার দিতে। দুদককে ভয় পায় না সমাজে এমন লোক নেই। এটা আমরা করতে পেরেছি। ২০১৮ সালে ৬৩ শতাংশ মামলায় সাজা হয়েছে, যা আগের বছরে ছিল ৬৮ শতাংশ। এটাকে আমরা পজিটিভ হিসেবে দেখছি। দুর্নীতি কমে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। একটা সচেতনতা বৃদ্ধি হচ্ছে। তবে এটা এমন নয় যে একটা কল বসালাম সঙ্গে সঙ্গে পানি পাবো। আমেরিকান স্টাইলে জাম্প করে পরিবর্তন আসবে, এমনটা আশা করা ঠিক হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘ধরুন আমরা একটি মামলা দিলাম, দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হলে স্পেশাল কোর্ট প্রয়োজন। তবে সবকিছুর ঊর্ধ্বে হচ্ছে রাজনীতি, রাজনৈতিক অঙ্গীকার ছাড়া সম্ভব না। আশার কথা হচ্ছে, এবার নির্বাচনের আগে সব রাজনৈতিক দল দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেছে। মানুষ দুদকের উপর আস্থা রাখছে, এটা পজিটিভ। তবে কিছু ব্যর্থতাও রয়েছে। যে মাত্রায় দুর্নীতি কমার কথা, সে মাত্রায় দুর্নীতি কমেনি।’

আলোচনা সভায় সারাদেশ থেকে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। তারা দুদকের কৌশলপত্র নিয়ে আলোচনা করেন। তারা জনসচেতনতা বৃদ্ধি, দুর্নীতি বিরোধী ক্লাব গঠনের সুপারিশ তুলে ধরেন। এসময় দুদকের সচিবসহ ঊর্দ্ধতন সবাই উপস্থিত ছিলেন।