প্রচ্ছদ আজকের সেরা সংবাদ নিউইয়র্কের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ত্যাগ

নিউইয়র্কের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ত্যাগ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৩তম অধিবেশনে যোগ দিতে ছয়দিনের সরকারি সফরে আজ শুক্রবার নিউইয়র্কের পথে লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন। সকাল ১০টা ২৪ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভিভিআইপি ফ্লাইট বিজি-০০১ যোগে রওনা হন তিনি।

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান মন্ত্রী পরিষদের সদস্য, আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা, বিভিন্ন বাহিনী প্রধানসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা।

প্রধানমন্ত্রী ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন এবং একই দিনে তার জাতিসংঘ মহাসচিব এন্টোনিও গুতেরেজের সঙ্গে বৈঠক করারও কথা রয়েছে।

ব্রিটিশ রাজধানীতে দু’দিনের যাত্রাবিরতির পর প্রধানমন্ত্রী রবিবার সকালে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটযোগে নিউইয়র্কের পথে লন্ডন ত্যাগ করবেন। ফ্লাইটটি ঐদিনই স্থানীয় সময় ১টা ৪০ মিনিটে নিউ জার্সির নিউইয়র্ক লিবার্টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মাদ জিয়াউদ্দিন এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানাবেন। বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা পর্ব শেষে একটি সুশোভিত মোটর শোভাযাত্রা সহযোগে প্রধানমন্ত্রীকে নিউইয়কের্র গ্রান্ড হায়াত হোটেলে নিয়ে যাওয়া হবে। যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে তিনি সেখানেই অবস্থান করবেন।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রীর একাধিক বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সঙ্গেও দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী সেখানে জাতিসংঘ মহাসচিব এন্টোনিও গুতেরেজ এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফটোসেশনেও অংশগ্রহণ করবেন। পরে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের ইকোসক চেম্বার’র (ইসিওএসওসি) ইউএন হাইকমিশনার ফর রিফ্যুজিস আয়োজিত হাইলেভেল ইভেন্টে অংশগ্রহণ করবেন। জাতিসংঘ সদর দপ্তরের দ্বিপাক্ষিক সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী নেদারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হবেন। প্রধানমন্ত্রী হোটেল গ্রান্ড হায়াতে যুক্তরাষ্ট্র চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত গোলটেবিল মধ্যাহ্নভোজ বৈঠকেও অংশ নেবেন। বিকালে প্রধানমন্ত্রীর সাধারণ পরিষদের সম্মেলন কক্ষে নেলসন ম্যান্ডেলা পিস সামিটেও বক্তৃতা প্রদানের কথা রয়েছে।

নিউইয়কের্র কনভেন কনফারেন্স সেন্টারে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম আয়োজিত ‘সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ইমপ্যাক্ট সামিট’-এও তার যোগদানের কথা রয়েছে। শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সদর দপ্তরের কনফারেন্স রুমে একটি গোলটেবিল আলোচনায় অংশ গ্রহণ করবেন। তিনি জাতিসংঘের বৈশ্বিক শিক্ষা বিষয়ক বিশেষ দূতের আয়োজনে হাই লেভেল ইভেন্টে অংশগ্রহণ করবেন। সন্ধ্যায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আয়োজিত স্বাগত সংবর্ধনায় অংশগ্রহণ করবেন। শেখ হাসিনা ২৫ সেপ্টেম্বর সাইবার নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক হাই লেভেল ইভেন্টে অংশ গ্রহণ করবেন। সাধারণ পরিষদ ভবনের নর্থ ডেলিগেট লাউঞ্জে জাতিসংঘের মহাসচিব আয়োজিত মধ্যাহ্ন ভোজে যোগদান করবেন প্রধানমন্ত্রী। বিকালে জাতিসংঘের অছি পরিষদ আয়োজিত জাতিসংঘ মহাসচিবের হাই লেভেল ইভেন্ট ‘অ্যাকশন ফর পিস কিপিং’ (এ ফোর পি) এ অংশগ্রহণ করবেন তিনি।

২৬ সেপ্টেম্বর ইউনিসেফ’র নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর, ইউএন হাই কমিশনার ফর রিফ্যুজিস (ইউএনএইচসিআর) ফিলিপ্পো গ্রান্দি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতি বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি মঘেরনিনি জাতিসংঘ সদর দপ্তরের দ্বিপাক্ষিক সম্মেলন কক্ষে পৃথকভাবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত্ করবেন। একইস্থানে প্রধানমন্ত্রী এস্তোনিয়ার প্রেসিডেন্ট ক্রেস্টি কালিজুলেইদ’র সঙ্গেও বৈঠক করবেন। ২৭ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা সৌদি আরবের স্থায়ী মিশন এবং ওআইসি সচিবালয়ের যৌথ উদ্যোগে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের ১২ নং কক্ষে অনুষ্ঠেয় সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সমপ্রদায়ের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কিত হাইলেভেল সাইড ইভেন্টে অংশগ্রহণ করবেন। প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ মহাসচিব এন্টোনিও গুতেরেজের সঙ্গে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে তার সভাকক্ষে বৈঠক করবেন। আন্তর্জাতিক কমিটি অব রেডক্রস (আইসিআরসি) এর প্রেসিডেন্ট পিটার মওরার-এর জাতিসংঘের দ্বিপাক্ষিক সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে। একইদিনে যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট মাইক পম্পেও’র প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে।

‘নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি’ শীর্ষক এই উচ্চ পর্যায়ের আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন প্রধানমন্ত্রী। এটি লিথুয়ানিয়ার প্রেসিডেন্টের আয়োজনে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের ৩ নং কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রীর জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ইন্টার প্রেস সার্ভিসেস (আইপিএস) আয়োজিত সংবর্ধনাতেও যোগদানের কথা রয়েছে। সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে ভাষণ প্রদান করবেন এবং নিউ ইয়কের্র পার্ক অ্যাভেনিউয়ে গ্লোবাল হোপ কোয়ালিশন আয়োজিত বার্ষিক নৈশভোজে যোগ দেবেন। অন্যান্যবারের মত এবারো সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ প্রদানের পরের দিন ২৮ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের নিউইয়র্কস্থ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে অংশগ্রহণ করবেন প্রধানমন্ত্রী। বিকালে শেখ হাসিনা নিউইয়কের্র জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইত্তেহাদ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ঢাকার উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করবেন। আবুধাবী হয়ে ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।