প্রচ্ছদ অর্থনীতি ধুঁকছে ব্যাংক, পড়ছে শেয়ারবাজার

ধুঁকছে ব্যাংক, পড়ছে শেয়ারবাজার

আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় সোমবার দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া সিংহভাগ ব্যাংক খাতের প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমেছে। ফলে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো দরপতন হয়েছে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)।

এদিন দুই বাজারেই সবকটি মূল্যসূচকের পতন হলেও ডিএসইতে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। এর মাধ্যমে বাজারটিতে টানা দুই কার্যদিবস ৯শ’ কোটি টাকার উপরে লেনদেন হয়েছে। তবে এদিন লেনদেন বাড়লেও বাজারটিতে দরপতনের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান।

ডিএসইতে আজ লেনদেনে অংশ নেয়া ১০৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ১৭৭টি প্রতিষ্ঠান, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৬টির দাম।

সোমবার বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দরপতনের তালিকায় স্থান করে নেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংক খাত মূখ্য ভূমিকা পালন করেছে। এদিন লেনদেনের শুরু থেকেই একের পর এক ব্যাংকের শেয়ারের দাম কমতে থাকে। যার প্রভাব গিয়ে পড়ে অন্য খাতের প্রতিষ্ঠানেও। ফলে দিন শেষে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান পতনের খাতায় নাম লেখায়।

অবশ্য আজ মূল্যসূচকের বড় উত্থানেই লেনদেন শুরু হয় ডিএসইতে। প্রথম আধঘণ্টার লেনদেনে ডিএসইএক্স ২৪ পয়েন্ট বেড়ে যায়। এরপর সূচকের ঊর্ধ্বমুখীতা কিছুটা কমলেও দুপুর ১ টাকা ৪০ মিনিট পর্যন্ত সূচক ধনাত্মক থাকে। কিন্তু শেষ ঘণ্টায় সূচকটি টানা নিচের দিকে নামতে থাকায় পতনের মাধ্যমে দিনের লেনদেন শেষ হয়।

ডিএসইতে এদিন ব্যাংক খাতের ৩০টি কোম্পানির মধ্যে মাত্র ৫টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ২২টির। আর বাকি ৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

ব্যাংকসহ অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমায় দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৫৪০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

অপর দুটি মূল্যসূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯৪১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক ৩ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৭২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

সোমবার মূল্যসূচকের পাশাপাশি কমেছে ডিএসইর বাজার মূলধনের পরিমাণ। দিনের লেনদেন শেষ ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৯৫ হাজার ১৫৯ কোটি টাকা। যা আগের কার্যদিবস শেষে ছিল ৩ লাখ ৯৫ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ বাজারটির বাজার মূলধন কমেছে ৪৬৭ কোটি টাকা।

এদিকে সোমবার বাজার মূলধন ও মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৯৬৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকার শেয়ার। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৯০০ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৬৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা।

টাকার অংকে ডিএসইতে আজ সর্বাধিক লেনদেন হয়েছে অ্যাকটিভ ফাইনের শেয়ার। কোম্পানিটির ৭৮ কোটি ১২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা কেপিসিএলের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকার। ৫০ কোটি ৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বিবিএস কেবলস।

লেনদেনে এরপর রয়েছে- শাশা ডেনিম, সামিট পাওয়ার, ইফাদ অটোস, সাইফ পাওয়ার, নাহি অ্যালুমেনিয়াম, কনফিডেন্স সিমেন্ট এবং ফরচুন সুজ।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএসসিএক্স ১০ পয়েন্ট কমে ১০ হাজার ৩৬২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। বাজারটিতে আজ মোট ২৩৭টি প্রতিষ্ঠানের ৪২ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৭৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ১৩৪টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিটের দাম।