প্রচ্ছদ খেলাধুলা দুর্দান্ত জয়ে ফাইনালে টাইগাররা

দুর্দান্ত জয়ে ফাইনালে টাইগাররা

ত্রিদেশীয় সিরিজের পঞ্চম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দেয়া ২৪৮ রানের টার্গেট নিয়ে মাঠে নেমে পাঁচটি উইকেট ও ১৬ বল হাতে রেখেই সর্বোচ্চ ১০ পয়েন্ট নিয়ে দুর্দান্ত জয় দিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ। কাজটা দারুণভাবে সম্পন্ন করলেন মুশফিক-মিঠুন-মাহমুদউল্লাহরা।

অন্যদিকে কোনো ম্যাচ না জেতা আয়ারল্যান্ডের পয়েন্ট কেবল ২। শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে যদি তারা হারিয়েও দেয়, তবুও বাংলাদেশ এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপরে ওঠা সম্ভব নয়। যার ফলে ১৫ তারিখ বাংলাদেশ আর আয়ারল্যান্ড ম্যাচটি পরিণত হলো কেবল আনুষ্ঠানিকতায়।

সোমবার শুরুতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ম্যাচের মতই দেখে-শুনে খেলে যাচ্ছিলেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। কিন্তু প্রথম ম্যাচের মত এত বড় জুটি গড়তে ব্যর্থ হয় তারা। দলীয় ৫৪ রানের মাথায় অ্যাসলে নার্সের একটি ঘূর্ণি বলে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে এসে মিস করে ফেলেন তামিম। বোল্ড হয়ে ২৩ বলে ২১ রান করেই ফিরে যেতে হয় গ্যালারিতে।

পরে দলীয় ১০৬ রানের মাথায় বিদায় নেন সাকিব। তিনি ৩৫ বলে তিনটি বাউন্ডারিসহ করেন ২৯ রান। সাকিবের পরেই স্কোরবোর্ডে মাত্র ১ রান যোগ হতেই বিদায় নেন ওপেনার সৌম্য সরকার। নার্শের বল খেলতে গিয়ে লেগসাইডে ক্যাচ তুলে দেন সৌম্য। বিদায়ের আগে এই বাঁহাতি ওপেনার ৬৭ বলে চারটি চার আর দুটি ছক্কায় করেন ৫৪ রান।

টাইগারদের দলীয় ১০৭ রানের মাথায় পিরে যেতে হয় তৃতীয় উইকেটকে। টপঅর্ডারের তিনটি উইকেটই নেন ১০ ওভারে ৫৩ রান খরচ করা অ্যাশলে নার্শ। দলের ১৯০ রানের মাথায় বিদায় নেন দারুণ ব্যাট করা মোহাম্মদ মিঠুন। জেসন হোল্ডারের বলে বোল্ড হওয়ার আগে তিনি করেন ৪৩ রান। পরে জয় যখন খুব কাছে, তখন জিততে মাত্র ৮ রান থাকতেই আউট হন মুশফিকুর রহিম।

গ্যালারিতে ফেরার আগে এই রান মেশিন ৭৩ বলে ৫টি চার আর একটি ছক্কায় করেন ৬৩ রান। শেষে জয়ের কাজটি অনায়াসে সেরে আসেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর সাব্বির রহমান। ৩৪ বলে ৩০ রানে অপরাজিত ছিলেন রিয়াদ। তবে সাব্বির রহমান রানের খাতা খেলার কোনো সুযোগই পাননি।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে বিপদে পড়ে ক্যারিবীয়রা। তারা ভেবেছিল, একটা বড়সড় স্কোর গড়ে ফেলবে। কিন্তু সেটা আর হলো কই? অধিনায়ক মাশরাফি প্রথম আঘাত হানলেন। দলীয় ৩৬ রানে তার বলে সুনিল অ্যামব্রিস (২৩) সৌম্য সরকারের দর্শনীয় এক ক্যাচে পরিণত হন। ১৯ রানের ব্যবধানে তিন নম্বরে নামা ডোয়াইন ব্র্যাভোকে (৬) লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। আরেক ওপেনার শাই হোপকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন রোস্টন চেইজ।

কিন্তু কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমানের বলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে ধরা পড়ে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয়েছে এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানকে (১৯)। এরপর আবারও মুস্তাফিজের ম্যাজিক। তার কাটারে কাটা পড়েন জনাথন কার্টার (৩)। এর মাঝেই হাফ সেঞ্চুরি করেন শাই হোপ। তাকে সঙ্গী করে ইনিংস গড়ায় মনযোগ দেন অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। এই দুজনের জুটি ১০০ স্পর্শ করতেই আঘাত হানেন মাশরাফি। টাইগার ক্যাপ্টেনের বলে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হন ১০৮ বলে ৮৭ রান করা শাই হোপ।

ফিরতি ওভারে এসে জেসন হোল্ডারকেও (৬২) প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান ম্যাশ। অ্যালানকে (৭) এলবিডাব্লিউ করে নিজের প্রথম শিকার ধরেন সাকিব। এরপর জোড়া আঘাতে অ্যাশলে নার্স (১৪) এবং রেমন রেইফারকে (৭) ফেরত পাঠান মুস্তাফিজ। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৪৭ রান তুলতে সক্ষম হয় উইন্ডিজ। ১০ ওভার বল করে ৬০ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন ম্যাশ। আর মুস্তাফিজের বোলিং ফিগার ৯-১-৪৩-৪! ‘হাড়কিপ্টে’ সাকিব ১০ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ২৭ রান! ১ মেডেনসহ তার শিকার ১ উইকেট।

উইন্ডিজ একাদশ: শাই হোপ, সুনীল অ্যামব্রিস, ড্যারেন ব্রাভো, রোস্টন চেজ, জোনাথন কার্টার, জেসন হোল্ডার, ফ্যাবিয়ান অ্যালেন, অ্যাশলে নার্শ, শেলডন কটরেল, কেমার রোচ, রেইমন রেইফার।

বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান, মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা, মেহেদি হাসান মিরাজ, আবু জায়েদ রাহি এবং মোস্তাফিজুর রহমান।